নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার দেউলিয়া নামক এলাকায় রাতের বেলায় ছোট যমুনা নদী থেকে অবৈধভাবে মাটি ও বালু তুলে বিক্রি করা হচ্ছে। অবৈধভাবে উত্তোলন করা এসব বালি কোটি টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সওজ) সড়ক প্রশস্তকরণ কাজে।
জেলা প্রশাসক কাযালয় সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ৯ মার্চ নওগাঁয় আটটি বালুমহাল সরকারিভাবে ইজারা দেয়ার জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। যেখানে বদলগাছী উপজেলার ছোট যমুনা নদীর ৭১ দশমিক ৫৭ একর বালু মহালের সরকারি ইজারামূল্য ধরা হয় ৩৯ লাখ ২৫২ টাকা। কার্যাদেশ অনুসারে দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে ৬২ লাখ ৩১ হাজার ৭১১ টাকায় বালুমহালের ইজারা পান বদলগাছী উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক তপন কুমার মন্ডল। বালু উত্তোলনে তাকে ১০টি মৌজা নির্ধারণ করে দেয়া হয়। এর মধ্যে তেজাপাড়া মৌজায় রয়েছে ১ দশমিক ৭৭ একর।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেশ কয়েকজন বালু ব্যবসায়ী বলেন, গত বছর বালু মহাল ইজারা নিয়ে নির্ধারিত মৌজার প্রত্যেকটি এলাকা ছাড়িয়ে অবৈধ পয়েন্ট খুলে বসেন ইজারাদার তপন। বালু উত্তোলনের সময় পেরিয়ে গেলেও দেউলিয়া–তাজপুরে প্রায় ৩০ একর এলাকা থেকে অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকার বালু উত্তোলন করেন তিনি। কয়েক কোটি টাকার বালু অবৈধভাবে বিক্রির পর তাকে মাত্র ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে উপজেলা প্রশাসন।
স্থানীয়রা জানান, হঠাৎ করেই মে মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে দেউলিয়া এলাকায় ছোট যমুনা নদীতে মাটিকাটার খননযন্ত্র আনা হয়। ৩০–৪০টি ট্রাক্টর সারারাত বিরতিহীনভাবে নদীর মাটি ও বালু নিয়ে যাচ্ছে।
বদলগাছীর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আলপনা ইয়াসমিন বলেন, “উপজেলায় ছোট যমুনা নদীর বালু মহাল কাউকে ইজারা দেওয়া হয়নি। আমি ও ডিসি স্যার কাউকে নদী থেকে বালু তোলার অনুমতি দেইনি। রাতের বেলায় দেউলিয়া এলাকায় ছোট যমুনা নদীর বালু কেটে বিক্রি করা হচ্ছে এমন খবর জানার তা বন্ধ করতে বলেছি। এরপর যদি কেউ অবৈধভাবে বালু তুলে বিক্রি করে তার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হবে।“
জেলা প্রশাসক খালিদ মেহেদী হাসান বলেন, “বালু মহাল ইজারার ক্ষেত্রে কোন জায়গা থেকে কীভাবে বালু তুলতে হবে সে বিষয়ে সুষ্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। এটি ভঙ্গ করলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের সুযোগ রয়েছে। বদলগাছীতে বালু মহালে উত্তোলনযোগ্য বালু না থাকায় এ বছর ইজারা দেয়া হয়নি। ইজারা ব্যতীত কেউ অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলনের চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।“
এফএম/দীপ্ত নিউজ