ঝিনাইদহ–৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যার প্রতিবাদে ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। কালীগঞ্জ শহরের মেইনবাসস্ট্যান্ড এলাকায় মানববন্ধনটি শুক্রবার (২৪ মে) বিকেল ৪ টা থেকে শুরু হয়ে শেষ হয় সাড়ে ৫ টার দিকে।
এমপি আনারের নিজ গ্রাম নিশ্চিন্তপুর গ্রামবাসী এ মানববন্ধন আয়োজন করে। প্রায় দেড়ঘন্টা ব্যাপী চলা এ মানববন্ধনে নারী–পুরুষ ও শিশুসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করে। এসময় অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন ভারতে দুর্বৃত্তদের হাতে নিহত এমপি আনোয়ারুল আজীমের ছোট মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন, কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শিবলী নোমানী, পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম, ইউপি চেয়ারম্যান ওহিদুজ্জামান ওদুসহ অন্যান্যরা।
মানবন্ধনে কালীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র বলেন, কালীগঞ্জ থেকে যে ফুল ঝরে গেছে সেই ফুল আর ফুটবে না। যারা এই প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি জানায়। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত আমরা কর্মসূচি পালন করেই যাবো।
এমপি আনারের বাল্য বন্ধু গোলাম রসুল বলেন, এমপি আনার মানুষের দোয়ারে দোয়ারে নিজে গিয়ে সেবা দিয়েছেন। সেই আনারকে এভাবে হত্যা করা হলো। প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ এই পরিবারের মাথার উপর থেকে আপনার হাতটা ফিরিয়ে নিবেন না।
এমপি আনার কন্যা মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন কাঁদতে কাঁদতে বলেন, আজ যে জায়গায় আমি কথা বলছি একই স্থানে আমার বাবা অনেক প্রোগ্রাম করেছে। আজ সবাই আছে শুধু দেখছি আমার বাবা নেই। আপানারা যারা আজ এখানে এসেছেন তারা কেউ ভেঙে পড়বেন না। আমরা এখানে বিচার চাইতে এসেছি। দেহে এক বিন্দু রক্ত থাকা অবস্থায় বাবার হত্যার বিচার চাইবো।
ডরিন বলেন, কি অপরাধ করেছে আমার বাবা। পরিবারের সময়ও ঠিকমতো দেয়নি। আজ তার এই করুন পরিনতি হলো। যে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর মরদেহ টুকরো টুকরো করে মসলাও মাখানো হয়েছে।
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে ডরিন বলেন, আজ অনেক সাংবাদিক ভাইয়েরা নিউজ করছেন। সে (বাবা) এই ব্যবসা করে, ওই ব্যবসা করে। আপনারা কি জানেন একটা সময়ে সে কেন ভারতে থাকতেন? ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল চারদলীয় জোটের সময় এভাবেই তাকে মারার পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু তখন তার হায়াত ছিল বলে আল্লাহ বাছিয়েছে। জীবন বাঁচানোর জন্য তিনি ভারতে ১৪ বছর থেকেছেন। অনেকে আশ্রয় দিয়েছেন। তার নামে যে মামলা গুলোর কথা বলা হচ্ছে সেগুলোতে তিনি নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছে। আপনারা খোঁজ নিয়ে দেখবেন।
প্রধানমন্ত্রীর সাথে হয়েছে সম্পর্কে তিনি বলেন, আপা (প্রধানমন্ত্রী) আমাকে আশস্ত করেছে। আমি তোমার বাবার হত্যাকারীদের বিচার করবো। তুমি কোন চিন্তা করো না। তিনি আমাকে ধৈর্য্য ধরার কথা বলেছেন।
শাহরিয়ার / আল/ দীপ্ত সংবাদ