এডুকো বাংলাদেশ, চাইল্ড ফান্ড কোরিয়া (CFK) এর অর্থায়নে এবং সহযোগী সংস্থা ইএসডিও–র সহযোগিতায় “লিফট” (বাংলাদেশে যুব কর্মসংস্থানের উন্নয়নের মাধ্যমে তাদের কর্মদক্ষতা ও প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বৃদ্ধি করে ২১শ শতকের চাকরির বাজারের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করা) প্রকল্পের উদ্বোধন করেছে।
রবিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) ঢাকার গুলশানে লেকশোর হোটেলে প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।
এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য হলো ঢাকার পার্শ্ববর্তী এলাকায় যুব বেকারত্বের সমস্যা সমাধানে তাদের কর্মদক্ষতা ও জীবন দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি করা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি ঢাকার গুলশানে লেকশোর হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে গণমাধ্যম, সরকারি কর্মকর্তা এবং সংশ্লিষ্ট অংশীজনরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানটির প্রধান অতিথি ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এর মাননীয় সচিব, জনাব এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান ।
“লিফট” প্রকল্পের মাধ্যমে বিভিন্ন খাতে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ যুবদের জন্য কারিগরি প্রশিক্ষণ, দক্ষতা উন্নয়ন এবং ক্যারিয়ার সহায়তা প্রদান করা হবে। এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হলো যুবদের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে তাদের দক্ষতাকে আধুনিক চাকরির বাজারের চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করা। প্রকল্পটি যুবকদের ক্যারিয়ার পরামর্শ প্রদান এবং নিয়োগদাতাদের সাথে সংযোগ স্থাপনের ওপরও গুরুত্ব দেবে। পাশাপাশি, এটি শিল্প খাতের সাথে কাজ করবে যাতে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম তাদের কর্মশক্তির চাহিদার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হয়।
এডুকো বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর, জনাব আবদুল হামিদ, বলেন, ’লিফট প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মকে এমন দক্ষতা ও জ্ঞান প্রদান করতে চাই যা ২১শতকের আধুনিক এবং প্রতিযোগিতামূলক চাকরির বাজারে তাদের স্থায়ীভাবে সফল হতে সাহায্য করবে। আমাদের লক্ষ্য কেবলমাত্র কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা নয়, বরং একটি টেকসই কর্মক্ষেত্র গড়ে তোলা যেখানে তরুণরা নিজেদের ভবিষ্যত গঠন করতে সক্ষম হবে। আমরা বিশ্বাস করি, এই প্রকল্প যুবসমাজের জন্য একটি নতুন সম্ভাবনার দুয়ার উন্মোচন করবে এবং বেকারত্ব হ্রাসে কার্যকর ভূমিকা রাখবে, যা দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।’
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি জনাব এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান, সচিব, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এর মাননীয় সচিব বলেন, ’কারিগরি শিক্ষা তরুণদের হাতে–কলমে দক্ষতা প্রদান করার পাশাপাশি, তাদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলার একটি বড় সুযোগ তৈরি করে। এর ফলে, তরুণরা শুধুমাত্র চাকরির বাজারের ওপর নির্ভরশীল না থেকে নিজেদের জন্য কর্মক্ষেত্র তৈরি করতে পারে। আমরা এমন প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করতে চাই, যাতে তারা বিদেশে গিয়েও মূল্যবান দক্ষ কর্মী হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পারে এবং দেশেও থেকে তারা উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলতে পারে—এই আশা ব্যক্ত করছি।’ এছাড়াও অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, মিনা মাসুদ উজজামান, সদস্য (পরিকল্পনা ও দক্ষতামান ), জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এবং প্রকৌশলী মো. সালাহ উদ্দিন, পরিচালক (প্রশিক্ষণ পরিচালনা), জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ বুর্যো।
অনুষ্ঠানে প্রকল্পের যুব সম্প্রদায়কে প্রতিনিধিত্বকারী অংশীজন, ফয়সাল আহমেদ, বলেন, “করোনা মহামারীর সময় আমার পরিবার আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, যার কারণে আমাকে আমার পড়াশোনা ছেড়ে দিতে হয়। এখন আমি মোবাইল সার্ভিসিংয়ে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ নিতে চাই এবং আমার গ্রামের মধ্যে মোবাইল সার্ভিসিং–এর একটি দোকান চালু করতে চাই।
লিফট প্রকল্পটি বাংলাদেশের টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পথে একটি মাইলফলক হতে চলেছে, যা ক্ষমতায়িত ও দক্ষ যুবশক্তির দ্বারা পরিচালিত হবে।
এডুকো সম্পর্কে
এডুকো‘একটি স্পেনভিত্তিক আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা; যা বাংলাদেশে ১৯৯৯ সাল থেকে শিশুদের শিক্ষা, সুরক্ষা ও সার্বিক উন্নয়নে সরকারের সহযোগী সংস্থা হিসেবে কাজ করছে। এডুকো বাংলাদেশ এর কৌশলগত উদ্দেশ্য হলো পিছিয়ে পড়া ও অবহেলিত জনগোষ্ঠী বিশেষ করে শিশুদের উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনা ও এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়তা প্রদান করা।
এডুকো, ৩০ বছর ধরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিরাজমান আছে, যা বর্তমানে বাংলাদেশসহ ১৮টি দেশে শিশুদের জীবনমান উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে । এডুকো, গ্লোবাল চাইল্ডফান্ড অ্যালায়েন্সের সক্রিয় সদস্য এবং বাংলাদেশে একমাত্র প্রতিনিধি। বর্তমানে এডুকো বাংলাদেশ শিশু, কিশোর ও তরুণদের অধিকার নিশ্চিত করতে ১৬টি জাতীয় এনজিওর সঙ্গে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে ১১টি জেলায় বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।
আল/ দীপ্ত সংবাদ