দেশের পোশাক শিল্পের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ১৩ বছর পূর্ণ হলো আজ, ২৪ নভেম্বর। ২০১২ সালের এই দিনে আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুরে তাজরীন ফ্যাশনস লিমিটেডে অগ্নিকাণ্ডে ১১৪ জন শ্রমিক প্রাণ হারান। আর যারা বেঁচে ফিরতে পেরেছিলেন, তাদের জীবন এখনও স্বাভাবিক ছন্দে ফেরেনি। দীর্ঘ ১৩ বছর পরেও শত শত শ্রমিক উন্নত চিকিৎসা, পুনর্বাসন এবং আইনি সহায়তার অভাবে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
তাজরীনের আগুন শুধু পোশাকই পোড়ায়নি, পুড়িয়ে দিয়েছে বহু মানুষের স্বপ্ন ও স্বাভাবিক জীবন। সেই দুর্ঘটনায় আহত হন এক হাজারেরও বেশি শ্রমিক, যাদের মধ্যে ১৭২ জন (সরকারি হিসাবে) স্থায়ীভাবে পঙ্গুত্ববরণ করেন। মেরুদণ্ড, পাঁজরের হাড় ভেঙে যাওয়া, হাঁটু ও কোমরের গুরুতর জখম নিয়ে এই শ্রমিকরা আজ পরিবার ও সমাজের বোঝা হয়ে পড়েছেন। আগুন থেকে বাঁচতে লাফিয়ে পড়া শ্রমিকদের অনেকেরই মেরুদণ্ডে ফ্র্যাকচার হয়। তারা ভারী কাজ তো দূরের কথা, দৈনন্দিন কাজ করতেও অক্ষম। সামান্য বৃষ্টিতেই পুরোনো ব্যথা বেড়ে যায়, যা তাদের প্রতি মুহূর্তে মনে করিয়ে দেয় সেই রাতের বিভীষিকা।
দুর্ঘটনার পর বিভিন্ন দেশি–বিদেশি সংস্থা থেকে ক্ষতিপূরণ ও সহায়তা এলেও, অধিকাংশ শ্রমিক সেই অর্থ চিকিৎসার পিছনে ব্যয় করেও পূর্ণাঙ্গ সুস্থতা পাননি। দীর্ঘমেয়াদি ফিজিওথেরাপি ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসার প্রয়োজন হলেও, অর্থাভাবে তা বন্ধ হয়ে গেছে অনেকেরই। শারীরিক অক্ষমতার কারণে তারা আর কোনো কারখানায় কাজ পান না। ছোটখাটো অন্য কাজ করার চেষ্টা করলেও শারীরিক দুর্বলতার কারণে তা চালিয়ে যেতে পারেন না। ফলে অনেকে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
শ্রমিক নেতারা বলছেন, তাজরীন ট্র্যাজেডি নিয়ে ভুরি ভুরি প্রতিশ্রুতি মিললেও বেশিরভাগই বাস্তবায়ন হয়নি।