মাল্টি লেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) প্রতিষ্ঠান ডেসটিনির ট্রি প্ল্যান্টেশন লিমিটেডের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ মামলায় ডেসটিনি গ্রুপের প্রেসিডেন্ট ও সাবেক সেনাপ্রধান এম হারুন–অর–রশীদ এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমীনসহ ১৯ জনের ১২ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া তাদেরকে ৪ হাজার ৫১৫ কোটি টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত–৪–এর বিচারক রবিউল আলম এই রায় দেন। আদালতের বেঞ্চ সহকারী বেলাল হোসেন গণমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
কারাদণ্ডপ্রাপ্ত অন্যরা হলেন– ডেসটিনির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেন, মোহাম্মদ গোফরানুল হক, মোহাম্মদ সাঈদ–উর–রহমান, মেজবাহ উদ্দিন, সৈয়দ সাজ্জাদ হোসেন, ইরফান আহমেদ, ফারাহ দিবা, জামসেদ আরা চৌধুরী, শেখ তৈয়েবুর রহমান, নেপাল চন্দ্র বিশ্বাস, জসীম উদ্দিন, জাকির হোসেন, এস এম আহসানুল কবির, জুবায়ের সোহেল, মোসাদ্দেক আলী, আবদুল মান্নান ও আবুল কালাম আজাদ। এদের মধ্যে রফিকুল আমীন, মোহাম্মদ হোসেন এবং এম হারুন–অর–রশীদকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্যরা বর্তমানে পলাতক আছেন, তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
২০১২ সালে ডেসটিনির বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ এবং পাচারের অভিযোগ দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এই মামলায় অভিযোগ করা হয় যে, ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো–অপারেটিভ সোসাইটি ও ডেসটিনি ট্রি প্ল্যান্টেশন লিমিটেডের নামে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ৪ হাজার ১১৯ কোটি ২৪ লাখ টাকা সংগ্রহ করা হয়, যা তারা আত্মসাৎ ও পাচার করেছে।
মামলার তদন্ত শেষ হয় ২০১৪ সালে, এবং ২০১৬ সালে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। অভিযোগের মধ্যে ২০০৮ সাল থেকে ডেসটিনি ট্রি প্ল্যান্টেশনের মাধ্যমে ২ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করা হয়েছিল, এর মধ্যে ২ হাজার ২৫৭ কোটি ৭৮ লাখ ৭৭ হাজার টাকা আত্মসাৎ করা হয়।
অপরদিকে, ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো–অপারেটিভ সোসাইটি নামে ১ হাজার ৯০১ কোটি টাকা সংগ্রহ করা হয়, যার মধ্যে ১ হাজার ৮৬১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ হয়। এই অর্থ আত্মসাতের কারণে সাড়ে আট লাখের বেশি বিনিয়োগকারী ক্ষতিগ্রস্ত হন।
ডেসটিনির অপরাধের কারণে ২৫ লাখেরও বেশি বিনিয়োগকারী সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সুতরাং, এই মামলার রায় একটি বড় আঘাত হিসেবে এসেছিল দেশের এমএলএম খাতে। রায়টি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষার পর আসে, এবং তাদের ক্ষতিপূরণের জন্য কিছু একটা পদক্ষেপ আশা করা হচ্ছে।