সোমবার, নভেম্বর ১০, ২০২৫
সোমবার, নভেম্বর ১০, ২০২৫

টাঙ্গুয়ার হাওরে গান-বাজনা ও পার্টি আয়োজন করা যাবে না

Avatar photoদীপ্ত নিউজ ডেস্ক

দেশের গুরুত্বপূর্ণ দু’টি জলাভূমি এবং অন্যতম সংবেদনশীল জলজ বাস্তুতন্ত্র টাঙ্গুয়ার ও হাকালুকি হাওর।

অনিয়ন্ত্রিত পর্যটন ও নৌচলাচল, অবৈধ বালু উত্তোলন, জলজ বন ধ্বংস, বর্জ্য নিঃসরণসহ পরিবেশপ্রতিবেশ রক্ষায় ‘টাঙ্গুয়ার ও হাকালুকি হাওর সুরক্ষা আদেশ’’ জারি করা হয়েছে। এই দুই হাওরে হাউসবোটে বা নৌযানে উচ্চস্বরে গানবাজনা ও কোনো পার্টি আয়োজন করা যাবে না।

সোমবার (১০ নভেম্বর) পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় জারিকৃত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে

এতে বলা হয়, বাংলাদেশ পানি আইন ক্ষমতাবলে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গীকার বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে ‘টাঙ্গুয়ার ও হাকালুকি হাওর সুরক্ষা আদেশ’ জারি করা হলো।

টাঙ্গুয়ার ও হাকালুকি হাওর জন্য প্রতিপালনীয় নির্দেশনাগুলো:

. হাওর অঞ্চলে পাখি/পরিযায়ী পাখি শিকার, পরিযায়ী পাখি সমৃদ্ধ অঞ্চলে বাণিজ্যিকভাবে হাঁস পালন, গাছ কাটা এবং হাওরের জলজ বনের কোনোরূপ ক্ষতিসাধন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

. হাওরের জলজ গাছর (হিজল, করচ ইত্যাদি) ডাল কেটে ঘের নির্মাণ বা মাছের আশ্রয়ের কাঁটা হিসেবে ব্যবহার করা নিষিদ্ধ।

. পর্যটক/হাউসবোট অভয়াশ্রম বা সংরক্ষিত হিসেবে ঘোষিত এলাকাসহ জেলা প্রশাসন, পরিবেশ অধিদপ্তর বা হাওর অধিদপ্তর থেকে চিহ্নিত হাওরের সংবেদনশীল এলাকায় (যেমন পাখি বা মাছসহ জলজ প্রাণীর আবাসস্থল, প্রজনন কেন্দ্র বা বন্য প্রাণীর চলাচলের স্থান) প্রবেশ করতে পারবে না।

. সরকারের অনুমতি ব্যতীত বর্ণিত হাওর এবং এর ভূমির শ্রেণি পরিবর্তন কর যাবে না।

. পরিবেশগত ও সামাজিক প্রভাব নিরূপণ সাপেক্ষে সরকারের অনুমতি ব্যতীত হাওরের জলস্রোতের স্বাভাবিক প্রবাহ বিঘ্নিত করা যাবে না।

. হাওর এলাকায় ভূমি এবং পানির প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য নষ্ট/পরিবর্তন করতে পারে এমন কাজ করা যাবে না।

. শিক্ষা সফর ও বিদেশি পর্যটক পরিবহনের ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসনের পূর্বানুমোদন গ্রহণ করতে হবে।

. অনুমোদনের শর্ত অনুযায়ী যাত্রী সংখ্যা নিয়ন্ত্রিত থাকবে। কোনো হাউসবোট/নৌযান যাত্রী সংখ্যার অধিক যাত্রী পরিবহন ও মাছ ধরার যন্ত্র/ইক্যুইপমেন্ট বহন করতে পারবে না। নির্ধারিত রুট ছাড়া নৌযান চলাচল ও নোঙর করতে পারবে না।

. দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় পর্যটক পরিবহন সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ থাকবে। আকস্মিক ঝড়, প্রবল বৃষ্টিপাত বা বজ্রপাতের সময় পর্যটকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

১০. ট্যুর অপারেটর ও পর্যটকদেরকে স্থানীয় কৃষ্টি ও সংস্কৃতির প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করতে হবে।

১১. হাউসবোটে/নৌযানে উচ্চস্বরে গানবাজনা ও কোনো পার্টি আয়োজন করা যাবে না।

১২. হাউসবোট/নৌযানের মালিক ও ট্যুর অপারেটরগণ তাদের পরিচালিত ট্যুরে শব্দ দূষণকরী অর্থাৎ উচ্চ আওয়াজ সৃষ্টিকারী ইঞ্জিন বা জেনারেটর ব্যবহারকে নিশ্চিতভাবে পরিহার করবে।

১৩. হাউসবোটে/নৌযানে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বহন করতে পারবে না।

১৪. নিষিদ্ধ জালের ব্যবহার বা বৈদ্যুতিক শকের মাধ্যমে হাওরে মাছ শিকার করা নিষিদ্ধ।

১৫. যথাযথ কর্তৃপক্ষে অনুমতি ব্যতীত হাওরে বালু, পাথর বা মাটি ইজারা প্রদান ও উত্তোলন নিষিদ্ধ।

১৬. শুষ্ক মৌসুমে হাওরের কোনো জলাধারের পানি সম্পূর্ণভাবে নিঃশেষ করা যাবে না।

১৭. ট্যুর অপারেটররা ১০০ ফুট দৈর্ঘ্যের বেশি নৌযান/হাউসবোট পরিচালনা করতে পারবে না।

১৮. হাওর এলাকা সংশ্লিষ্ট বসতবাড়ি, শিল্পপ্রতিষ্ঠান এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের তরল ও কঠিন বর্জ্য হাওরে নির্গমন করা যাবে না।

১৯. হাওর অঞ্চলে পাকা সড়ক নির্মাণ পরিহার করতে হবে। তবে, জরুরি বা বিশেষ প্রয়োজনবোধে সড়ক নির্মাণের প্রয়োজন হলে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিতে হবে এবং সরকার অনুমোদিত কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে এরূপ নির্মাণ কাজ শুরুর পূর্বে অবশ্যই পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন এবং সামাজিক প্রভাব মূল্যায়ন সম্পাদন করতে হবে।

টাঙ্গুয়ার ও হাকালুকি হাওর সুরক্ষা আদেশ’ প্রতিপালন করা বাধ্যতামূলক। সুরক্ষা আদেশ লঙ্ঘন বাংলাদেশ পানি আইন ২০১৩ অনুযায়ী দণ্ডনীয় অপরাধ বলে গণ্য হবে মন্ত্রণালয় বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

 

এসএ

আরও পড়ুন

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More