শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলায় চাঞ্চল্যকর অটো ছিনতাই এবং চালক আরব আলীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে মরদেহ খালে ফেলে রাখার সঙ্গে জড়িত মূল হত্যাকারী ৩ জন এবং উদ্ধারকৃত মালামাল ক্রয়–বিক্রয়ে জড়িত ৪ জনসহ মোট ৭ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) সকালে শেরপুর পুলিশ সুপার কার্যালয়ের হলরুমে পুলিশ সুপার মোনালিসা বেগম পিপিএম এক প্রেসব্রিফিং–এর মাধ্যমে আরব আলী হত্যার বিবরণ এবং ছিনতাই ও খুনের সঙ্গে জড়িতদের আটকের ঘটনা বর্ণনা করেন।
মূল হত্যাকারী ৩ জনের মধ্যে ঝিনাইগাতী উপজেলার বনগাঁও পূর্বপাড়া গ্রামের শাহ আলীর ছেলে মো. শামীম মিয়া ওরফে হেদা (২৫), জুলগাঁও কোয়ারি রোড গ্রামের রজব আলীর ছেলে মো. হামিদ ওরফে সোজা (২৪) এবং বনগাঁও চকপাড়া গ্রামের মো. আব্দুল মজিদের ছেলে মো. সোহেল রানা (২৫)।
এছাড়া ছিনতাইকৃত অটোসহ অন্যান্য মালামাল ক্রয়–বিক্রয়ের সঙ্গে জড়িতদের মধ্যে শেরপুর সদর উপজেলার পৌরসভার নবীনগর মহল্লার আব্দুল করিমের ছেলে বাবুল মিয়া (৩৫), ঝিনাইগাতী উপজেলার জোলগাঁও কোয়ারি রোড গ্রামের জালাল আহমেদের ছেলে আবেদ আলী ওরফে ফকির (৩৭), শেরপুর পৌরসভার ঢাকলহাটি মহল্লার রফিকুল ইসলামের ছেলে মো. জাহিদ হাসান (২২) এবং নাগপাড়া মহল্লার হাসমত আলীর ছেলে ফরহাদ আলী (২২)।
পুলিশ সুপার মোনালিসা বেগম জানান, গত ৩০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৬ টার দিকে ভাড়ার উদ্দেশ্যে ঝিনাইগাতি উপজেলার গৌরীপুর ইউনিয়নের বনগাঁও পূর্বপাড়া গ্রামের আব্দুস সালামের ছেলে আরব আলী (২১) ব্যাটারি চালিত তার নিজ অটোরিক্সা নিয়ে বের হয়। পরে তিনি আর বাড়ি ফিরে না গেলে স্বজনরা তাকে খোঁজাখুঁজি করতে থাকে।
ঘটনার একদিন পর ২ অক্টোবর সকালে ঝিনাইগাতি উপজেলার সীমান্তবর্তী সড়কের রাংটিয়া দেওয়ানপাড়াস্থ একটি খালে আরব আলীর মরদেহ ভাসতে থাকে। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়। আরব আলীর মা ছামেদা খাতুন বাদী হয়ে ঝিনাইগাতি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।
পুলিশ এবং গোয়েন্দা সংস্থার ব্যাপক তদন্ত ও অনুসন্ধানে হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত ৩ জনের মধ্যে একজনকে ঢাকা থেকে আটক করে। পরবর্তীতে তাদের জিজ্ঞাসাবাদে নিজেদেরকে অটো ছিনতাই ও হত্যাকান্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত থেকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে আরব আলীর মরদেহ ওই স্থানে ফেলে রেখে যাওয়ার কথা স্বীকার করে।
নিহত অটো চালক আরব আলী হত্যাকারী শামীম–এর খালাত ভাই। তাই ছিনতাইকারীকে চিনে ফেলার কারণে এ হত্যাকান্ড হতে পারে বলে প্রেস ব্রিফিং এ জানায় পুলিশ সুপার।
এ ঘটনায় ছিনতাই ও হত্যাকান্ডের পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং আসামীদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির জন্য আদালতে প্রেরণ করা হবে বলে পুলিশ সুপার মোনালিসা বেগম জানান।
মঞ্জুরুল আহসান/মোরশেদ আলম/দীপ্ত নিউজ