ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলায় একই স্থানে সভা ডেকেছে বিএনপি ও যুবদল। বুধবার (১৩ আগস্ট) বিকেল ৩টায় উপজেলা পরিষদ মার্কেট চত্বরে এ সভা হওয়ার কথা।
দুই গ্রুপের উত্তেজনার কারণে মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) রাত ১০টা থেকে বুধবার রাত ১২টা পর্যন্ত সভাস্থলসহ আশপাশে ১৪৪ ধারা জারি থাকবে বলে জানিয়েছেন রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাহুল চন্দ।
জানা গেছে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে রাজাপুর উপজেলা পরিষদ মার্কেট চত্বরে উপজেলা বিএনপির আয়োজনে র্যালি ও সমাবেশের আয়োজন করে বিএনপির একটি অংশ। বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালামকে সমাবেশের প্রধান অতিথি করে দাওয়াতপত্র বিতরণ করা হয়। ওই দাওয়াতপত্রে রাজাপুর উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট নুর হোসেনের স্বাক্ষর রয়েছে। সমাবেশ সফল করতে রাজাপুরে বেশ কয়েকদিন আগে থেকেই ঝালকাঠি–১ আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী হাবিবুর রহমান সেলিম রেজাসহ আরও পাঁচজন মনোনয়নপ্রত্যাশী প্রচার–প্রচারণা চালিয়ে আসছেন। এই মনোনয়নপ্রত্যাশীরা সকলেই ঝালকাঠি–১ আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী ও বিএনপির কেন্দ্রীয় ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জামালের প্রতিপক্ষ হিসেবে পরিচিত। তবে এই সমাবেশের দাওয়াতপত্রে রফিকুল ইসলাম জামালের নাম ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদের নাম দেখা যায়নি।
এদিকে রফিকুল ইসলাম জামাল অনুসারী হিসেবে পরিচিত রাজাপুর উপজেলা যুবদলের প্যাডে দেয়া দাওয়াতপত্রে একই স্থানে পাল্টা সমাবেশ ডাকা হয়। এ সমাবেশে যুবদলের ঝালকাঠি জেলার ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক রবিউল হোসেন তুহিন এবং সদস্য সচিব আনিচুর রহমানকে অতিথি হিসেবে উল্লেখ করা হয়। তবে এ বিষয় জেলা যুবদলের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক রবিউল হোসেন তুহিন জানান, তারা জেলার নেতৃবৃন্দ রাজাপুর যুবদলের এ সমাবেশের ব্যাপারে কিছুই জানেন না।
সমাবেশের অন্যতম আয়োজক নিউইয়র্ক দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি হাবিবুর রহমান সেলিম রেজা বলেন, আমরা পাঁচদিন আগে এ অনুষ্ঠানের ঘোষণা করেছি। প্রশাসনের অনুমতি নিয়েছি। কেন্দ্রীয় ও জেলা বিএনপির নেতারা আসবেন। সেখানে এই সমাবেশ বানচাল করার জন্য একই স্থানে একই সময় যুবদলের নামে সমাবেশ ডাকা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
অন্যদিকে রাজাপুর উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব সৈয়দ নাজমুল হক বলেন, রাজাপুরে একটি সমাবেশ করার জন্য কেন্দ্রীয় নির্দেশনা ছিল। সে আলোকে অনেক আগেই আমরা সমাবেশ করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু বর্ষার কারণে দেরি হয়েছে। এক সপ্তাহ আগে আমরা প্রশাসনের কাছ থেকে অনুমতি নিয়েছি। এখন একই স্থানে তারা সমাবেশ ডেকে পায় ঝামেলা করতে চাচ্ছে।
এ বিষয় জানতে চাইলে রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাহুল চন্দ বলেন, কাউকেই লিখিত অনুমতি দেয়া হয়নি। দুপক্ষই আমাদের অবহিত করেছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সৈয়দ হোসেন বলেন, বিএনপির সমাবেশের কথা আমি জানি। সেখানে যুবদলের সমাবেশের কথা জানা নেই। তারা (যুবদল) কেন সমাবেশ ডেকেছে বিষয়টি খতিয়ে দেখব। বিএনপির সমাবেশে যাবেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, পরিস্থিতি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেব।
এদিকে মঙ্গলবার রাতে দু’পক্ষই সমাবেশ স্থলে অবস্থান নেওয়াসহ দিনভর মোটরসাইকেল মহড়া ও শোডাউনের কারণে পুরো রাজাপুরে উত্তেজনা ও ভয়ভীতি ছড়িয়ে পড়েছে।
খালিদ হাসান/এজে/দীপ্ত সংবাদ