জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে পুলিশের গুলিতে শহীদ জসিম উদ্দিনের মেয়ে লামিয়া আক্তারের (১৭) মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাত ৯টায় রাজধানী শেখেরটেক ৬ নম্বর রোডের বি/৭০ নম্বর বাড়ি থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
বিষয়টি গণমাধ্যম নিশ্চিত করেছেন শহীদ জসিমের চাচাতো ভাই কালাম হাওলাদার।
তিনি বলেন, মরদেহ বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে আছে। ময়নাতদন্তের পর মরদেহ বাড়িতে (পটুয়াখালী) নেয়া হবে।
নিহতের মামা সাইফুল ইসলাম বলেন, হঠাৎ গ্রামের বাড়ি থেকে ফোন করে বলে আমার ভাগ্নি মারা গেছে। জুলাই–আগস্ট আন্দোলনে আমার বোন স্বামী হারা হলো। এখন মেয়েকে হারিয়েছে। আমার ভাগ্নির ধর্ষকরা জামিন পেয়ে গেছে। এখন আমার ভাগ্নি চলে গেছে। আমরা কার কাছে বিচার চাইবো।
প্রতিবেশী জামিলা খাতুন জানান, সন্ধ্যার পর মা–মেয়ে মিলে কাপড় কিনে বাসায় আসে। রাতে ছোট মেয়েকে নিয়ে মাদরাসায় যাওয়ার পর বড় মেয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। রবিবার (২৭ এপ্রিল) বিকেলে লঞ্চে করে তাদের পটুয়াখালী গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার কথা ছিল।
এ বিষয়ে আদাবর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম জাকারিয়া জানান, ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। মরদেহ শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রাখা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ১৮ মার্চ সন্ধ্যায় লামিয়া নিজ বাড়ি থেকে নানা বাড়ি যাওয়ার পথে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন। পরে লামিয়া নিজে বাদী হয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে দুমকি থানায় মামলা দায়ের করেন।
পরিবারের অভিযোগ, ঘটনার পর থেকেই লামিয়া মারাত্মক মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছিলেন। সামাজিক লজ্জা, চাপ ও বিচার প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রিতায় হতাশ হয়ে পড়েন তিনি। সর্বশেষ এসব চাপ সহ্য করতে না পেরে তিনি আত্মহননের পথ বেছে নেন।
প্রসঙ্গত, জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের সময় নিহত লামিয়া আক্তারের বাবা জসীম উদ্দিন ১৯ জুলাই রাজধানী মোহাম্মদপুর এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন। ১০ দিন পর ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
এসএ