বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে ২০২১ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের জন্য মনোনীতদের হাতে পুরস্কার তুলে দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২৭টি ক্যাটাগরিতে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। মহামারীর পর এবারই প্রথম সশরীরে উপস্থিত হয়ে পুরস্কার তুলে দিলেন প্রধানমন্ত্রী।
সম্মাননা পাওয়ার অনুভূতি জানিয়ে অভিনেত্রী ডলি জহুর অনুষ্ঠানে বলেন, “এই সুন্দর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আজীবন সম্মাননা পেয়ে নিজেকে ধন্য মনে করছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, জুরি সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে কৃতজ্ঞতা জানাই।”
পুরস্কার পেলেন যারা
‘লাল মোরগের ঝুঁটি’ ও ‘নোনাজলের কাব্য’ এবার যৌথভাবে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের পুরস্কার পেয়েছে।
‘ধর’ শ্রেষ্ঠ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র, কাওসার চৌধুরীর বধ্যভূমিতে একদিন শ্রেষ্ঠ প্রামাণ্য চলচ্চিত্রের পুরস্কার পেয়েছে।
জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের শৈশব ও কৈশোরের বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য ঘটনা নিয়ে চিত্রায়িত ‘টুঙ্গিপাড়ার মিয়াভাই’ চলচ্চিত্রটি মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে বিশেষ সম্মাননা পেয়েছে।
নোনাজলের কাব্য সিনেমার জন্য রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত পেয়েছেন শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র পরিচালকের পুরস্কার।
যৌথভাবে মো. সিয়াম আহমেদ (মৃধা বনাম মৃধা) ও মীর সাব্বির মাহমুদ (রাতজাগা ফুল) শ্রেষ্ঠ অভিনেতার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন।
শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার পেয়েছেন যৌথভাবে আজমেরী হক বাঁধন (রেহানা মরিয়ম নূর) ও তাসনোভা তামান্না (নোনাজলের কাব্য)।
এম ফজলুর রহমান বাবু (নোনাজলের কাব্য) পার্শ্ব চরিত্রে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা, শম্পা রেজা (পদ্মপুরাণ) পার্শ্ব চরিত্রে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী; মো. আবদুল মান্নান জয়রাজ (লাল মোরগের ঝুঁটি) খল চরিত্রে শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরস্কার পেয়েছেন।
কৌতুক চরিত্রে শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরস্কার পেয়েছেন প্রভাষ কুমার ভট্টাচার্য মিলন (মৃধা বনাম মৃধা)। আফিয়া তাবাসসুম (রেহানা মরিয়ম নূর) শ্রেষ্ঠ শিশুশিল্পীর পুরস্কার পেয়েছে। শিশুশিল্পী শাখায় বিশেষ পুরস্কার পেয়েছে জান্নাতুল মাওয়া ঝিলিক (যা হারিয়ে যায়)।
সুজেয় শ্যাম (যৈবতী কন্যার মন) শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালক, কে এম. আবদুল্লাহ-আল-মুর্তজা মুহিন (শোনাতে এসেছি আজ-পদ্মপুরাণ) শ্রেষ্ঠ গায়ক, চন্দনা মজুমদার (দেখলে ছবি পাগল হবি-পদ্মপুরাণ) শ্রেষ্ঠ গায়িকা, প্রয়াত গাজী মাজহারুল আনোয়ার (অন্তরে অন্তর জ্বালা-যৈবতী কন্যার মন) শ্রেষ্ঠ গীতিকার, সুজেয় শ্যাম (অন্তরে অন্তর জ্বালা-যৈবতী কন্যার মন) শ্রেষ্ঠ সুরকারের পুরস্কার পেয়েছেন।
রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত (নোনাজলের কাব্য) শ্রেষ্ঠ কাহিনীকার, নূরুল আলম আতিক (লাল মোরগের ঝুঁটি) শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার, তৌকীর আহমেদ (স্ফুলিঙ্গ) শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন।
এছাড়া সামির আহমেদ (লাল মোরগের ঝুঁটি) শ্রেষ্ঠ সম্পাদক, শিহাব নূরুন নবী (নোনাজলের কাব্য) শ্রেষ্ঠ শিল্প নির্দেশক হিসেবে পুরস্কার পেয়েছেন।
পুরস্কার হিসেবে সবাইকে দেওয়া হয়েছে ১৮ ক্যারেট মানের ১৫ গ্রাম ওজনের স্বর্ণ দিয়ে তৈরি একটি পদক, পদকের একটি রেপ্লিকা ও এককালীন নির্ধারিত পরিমাণ সম্মানী ও সম্মাননাপত্র।
আজীবন সম্মাননার জন্য ৩ লাখ, শ্রেষ্ঠ পূর্ণদের্ঘ্য চলচ্চিত্র প্রযোজক, শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র পরিচালকের জন্য ২ লাখ ও অন্যান্য ক্ষেত্রে দেয়া হয় ১ লাখ টাকা।
এবারের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদানের জন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় ১৩ সদস্যের জুরি বোর্ড গঠন করে। ২০২১ সালের মুক্তিপ্রাপ্ত ২১টি পূর্ণদের্ঘ্য, ১৭টি স্বল্পদৈর্ঘ্য ও ৭টি প্রামাণ্য চলচ্চিত্রসহ মোট ৪৫টি চলচ্চিত্র থেকে বাছাই করা হয় এবারের বিজয়ীদের।
আল/দীপ্ত