২০১৯ সালের ১১ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের আগে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করেই এম. ফিল প্রোগ্রামে ভর্তি হয়েছিলেন নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী। বিষয়টি সামনে আসার পর ঢাবি সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেট তা সাময়িকভাবে বাতিলের সুপারিশ করেছে।
আর বৈধ ছাত্রত্ব না থাকার অভিযোগে একই বছর অনুষ্ঠিত ডাকসু নির্বাচনে রাব্বানী‘র প্রার্থীতাও অবৈধ হতে পারে। এই প্রেক্ষিতে জিএস নির্বাচিত হওয়ার বিষয়টিকে অবৈধ ঘোষণার সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমকে পাঠানো বিবৃতির বরাতে বিষয়টি জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ড. সাইফুদ্দীন আহমদ।
তিনি বলেন, তদন্ত কমিটি প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে এমন সুপারিশ করেছে সিন্ডিকেট। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য বিষয়টি একাডেমিক কাউন্সিলে পাঠানো হয়েছে। সেখানে ভর্তি বাতিলের চূড়ান্ত হলে তার প্রার্থীতা অবৈধ এবং জিএস নির্বাচিত হওয়ার বিষয়টিও অবৈধ হয়ে যাবে।
তদন্ত কমিটি প্রতিবেদনে বলা হয়, ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন–২০১৯ অনুষ্ঠানের বিষয়ে কিছু প্রার্থী/প্যানেলের পক্ষ হতে ভোটদান, অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের ভোট কেন্দ্রে ঢুকতে না দেয়া, ভোট কারচুপি করা, ভোট দানের জন্য কৃত্রিম লাইন সৃষ্টি করা, ভোট কেন্দ্র দখল করা, ব্যালট পেপারে অবৈধভাবে সিল মারা, ভোট দানে ভয়ভীতি প্রদর্শন করা, অবৈধ উপায়ে ভর্তি হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা, ব্যালট–বাক্সসহ নানা কারচুপি ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে। তবে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য অধিকতর তদন্তের প্রয়োজন।
এতে আরও বলা হয়, প্রাপ্ত তথ্য প্রমাণাদি ও সংশ্লিষ্ট পক্ষসমূহের সাক্ষাৎকার হতে প্রাপ্ত তথ্যসমূহ পর্যালোচনা করে কমিটির কাছে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান অবৈধভাবে জালিয়াতির মাধ্যমে ক্রিমিনোলজি বিভাগের গোলাম রাব্বানী, মেহজাবিন হক ও ফাহমিদা তাসনিম অনির এম. ফিল প্রোগ্রামে ভর্তি যথাযথ প্রক্রিয়া না মেনে সম্পন্ন হয়েছে। অতএব উক্ত ভর্তি আইনের দৃষ্টিতে বাতিল বলে গণ্য হতে পারে। এমতাবস্থায় বৈধ ছাত্রত্ব না থাকার কারণে গত ২০১৯ সালের ১১ মার্চ অনুষ্ঠিত ডাকসু নির্বাচনে গোলাম রাব্বানীর প্রার্থীতা বৈধ ছিল না। সুতরাং এই কমিটি গোলাম রাব্বানীর জিএস নির্বাচিত হওয়ার বিষয়টিকে অবৈধ ঘোষণার জন্য জোর সুপারিশ করা হলো।
এর আগে, গত ৫ ফেব্রুয়ারি অবৈধ উপায়ে ভর্তি হয়ে ডাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ সব সদস্যদের ডাকসু সদস্য পদ বাতিলসহ ভুক্তভোগী প্রার্থীদের মূল্যায়নে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ এবং ২২ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে ডাকসু ভবনে সংঘটিত নৃশংস হামলার ঘটনায় জড়িত অপরাধীদের বিচার দাবিতে অভিযোগ দেন ওই নির্বাচনের জিএস প্রার্থী রাশেদ খাঁন এবং ঢাবি ছাত্র অধিকার পরিষদ আহ্বায়ক মো. সানাউল্লাহ হক।
এসএ