নারী নির্যাতন ও ধর্ষণ মামলায় আলোচিত কণ্ঠশিল্পী মাইনুল আহসান নোবেলকে (৩১) গ্রেপ্তার করেছে ডেমরা থানা পুলিশ। সোমবার (১৯ মে) দিবাগত রাত ১টা ৫০ মিনিটে রাজধানীর ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মঙ্গলবার (২০ মে) ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, নারী নির্যাতন ও ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ডেমরা থানা পুলিশ মাইনুল আহসান নোবেলকে গ্রেপ্তার করেছে।
ডেমরা থানা সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী নারী অভিযোগে জানিয়েছেন, ২০১৮ সালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার সঙ্গে নোবেলের পরিচয় হয়। পরবর্তীতে মাঝে মাঝে তাদের মধ্যে মোবাইলে কথোপকথন হতো। ২০২৪ সালের ১২ নভেম্বর নোবেল মোহাম্মদপুরে তার সঙ্গে দেখা করেন এবং নিজের বাসার স্টুডিও দেখানোর কথা বলে ডেমরার বাসায় নিয়ে যান। সেখানে নোবেল ও তার আরও ২–৩ জন অজ্ঞাত সহযোগী ভুক্তভোগীকে জোরপূর্বক আটকে রাখেন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, নোবেল নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ভুক্তভোগীকে শারীরিকভাবে নির্যাতন ও ধর্ষণ করেন, তার মোবাইল ভেঙে ফেলেন এবং ঘটনার ভিডিও ধারণ করে তা সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেন। এরপর থেকে ১৯ মে ২০২৫ পর্যন্ত টানা ছয় মাস ধরে ভুক্তভোগীকে ওই বাসায় আটকে রাখা হয়।
এই ঘটনার মধ্যে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নোবেলের হাতে ভুক্তভোগীকে মারধরের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। ভিডিও দেখে তার পরিবার তাকে শনাক্ত করে এবং জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯–এ ফোন করে পুলিশের সহায়তা চায়। এরপর গতকাল ১৯ মে রাতে ডেমরা থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করে। পরবর্তীতে ভুক্তভোগী ডেমরা থানায় একটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন।
ডেমরা থানা পুলিশ আরও জানায়, ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ ও প্রযুক্তির সহায়তায় কণ্ঠশিল্পী নোবেলকে চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে আদালতে হাজির করে রিমান্ড আবেদন জানানো হয়েছে।
মাইনুল আহসান নোবেল ভারতের পশ্চিমবঙ্গের একটি টিভি চ্যানেলের রিয়েলিটি শো ‘সারেগামাপা‘য় অংশগ্রহণের মাধ্যমে আলোচনায় আসেন। পরবর্তীতে তিনি বাংলাদেশ ও ভারতে বেশকিছু কনসার্টে অংশগ্রহণ ও গান প্রকাশ করেন। তবে বিগত কয়েক বছর ধরে একাধিক ব্যক্তিগত বিতর্ক ও আইনি জটিলতায় বারবার আলোচনায় আসেন তিনি।