শনিবার, নভেম্বর ২৩, ২০২৪
শনিবার, নভেম্বর ২৩, ২০২৪

গভীর ঘুমে বাসিন্দারা, মুহূর্তেই চূর্ণবিচূর্ণ পুরো অঞ্চল

তুরস্ক-সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্প

Avatar photoমৃন্ময় মাসুদ

ভয়াবহ ভূমিকম্পের কবলে পড়ে নিস্তব্ধ তুরস্ক ও সিরিয়া। গভীর ঘুমে কেউ কিছু বোঝার আগেই চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যায় পুরো অঞ্চল। কতজন পড়ে আছে ধ্বংসস্তূপের ভেতরে তা এখনও অজানা। বিশাল বিশাল ভবন মুড়িয়ে গেছে কাগজের মতো। মানুষ হন্যে হয়ে খুঁজে বেড়াচ্ছেন প্রিয়জনদের। সন্তানকে বুকে জড়িয়ে বাবার চিৎকার, লাশ নিয়ে মানুষের আহাজারি। ধসে পড়া ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসা হচ্ছে শিশুদের।

ভূমিকম্পের কবলে পড়া দিয়ারবাকিরের শহরের ৩০ বছর বয়সী এক বাসিন্দা বলেন, ‘ভূমিকম্পের সময় তীব্র শব্দে আমাদের আশপাশের ভবনগুলো ধসে পড়ে। আমি দৌড়ে বাইরে আসি। চারপাশে শুধু চিৎকার। আমি হাত দিয়ে পাথর সরাতে শুরু করলাম। এরপর বন্ধুদের নিয়ে আহত ব্যক্তিদের বের করতে শুরু করলাম। কিন্তু চিৎকার থামেনি। তারপর উদ্ধারকারী দলগুলো আসে।

সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে সিরিয়া সীমান্তবর্তী তুরস্কের গাজিয়ান্তেপ অঞ্চলে আঘাত হানে এই শক্তিশালি ভূমিকম্প। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৮। যার তীব্রতা এতই বেশি ছিল যে, মাত্র ৪৫ সেকেন্ডে তুরস্কের শহরগুলো হলো গাজিয়ান্তেপ, কাহরামানমারাস, হাতে, ওসমানিয়া, আদিয়ামান, মালাতিয়া, সানলিউরফা, দিয়ারবাকির এবং কিলিস এবং সিরিয়ার আলেপ্পো, হামা এবং লাকাতিয়া পরিণত হয়েছে মৃত্যুপুরীতে।

ভূমিকম্পটি এতটাই শক্তিশালী ছিল যে তুরস্কসিরিয়া ছাড়াও লেবানন, সাইপ্রাস এবং ইসরায়েল জুড়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ এর কম্পন অনুভব করেন। এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছে ৪৩০০ মানুষ। কত শত মানুষ আহত হয়েছে সে হিসাব নেই। কেউ হারিয়েছেন মাবাবা, কেউ হারিয়েছেন সন্তান। মানুষের আর্তনাদ, আহাজারিতে ভারি হয়ে আছে তুরস্কসিরিয়ার আকাশ। এক ভূমিকম্পের প্রকোপ থেকে বের হওয়ার আগে মঙ্গলবার রাতে আবারও আঘাত হানে আরেকটি ভূমিকম্প। এর মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৬।

এর আগে ১৯৯৯ সালে মারাত্মক এক ভূমিকম্পে মারা যায় ১৭ হাজার মানুষ। ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে তুরস্কে ভূমিকম্পের ঘটনা হরহামেশাই ঘটে। কারণ ২০২০ সালে দেশটিতে ৩৩ হাজার বারেরও বেশি ভূমিকম্প হয়েছিল । এর মধ্যে রিখটার স্কেলে চার মাত্রার বেশি ভূমিকম্প ছিল ৩২২টি। দেশটি মূলত বেশ কয়েকটি টেকটোনিক প্লেটে তার ওপর অবস্থিত যা ভূমিকম্পের জন্য দায়ী। দেশটির মূল অবস্থান আনাতোলিয়ান টেকটোনিক প্লেটের ওপর। ফলে এসব প্লেটের কোনো একটির সামান্য নড়াচড়ার অর্থই হলো ভূমিকম্পের ‍সৃষ্টি হওয়া।

তাদের এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য এগিয়ে আসছেন বিশ্বনেতারা। ইতিমধ্যে ভারত, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, চীন, জার্মানি, যুক্তরাজ্য, জামান, গ্রিস, ন্যাটো, ইসরাইল, রাশিয়া, পোল্যান্ড, কাতার, স্পেন, যুক্তরাষ্ট্র, তাইওয়ান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ন্যাটো, জাতিসংঘ সহ বিভিন্ন সংস্থা সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন।

আরও পড়ুন

সম্পাদক: এস এম আকাশ

অনুসরণ করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন

স্বত্ব © ২০২৩ কাজী মিডিয়া লিমিটেড

Designed and Developed by Nusratech Pte Ltd.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More