দুদকে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ করা হয়েছে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা অধিদপ্তর (এনএসআই)-এর সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল টি এম জোবায়েরের বিরুদ্ধে।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, টি এম জোবায়ের একজন ঠান্ডা মাথার খুনি ও বিভিন্ন অপকর্মের সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণকারী। দুর্নীতি ও লুটপাটের মাধ্যমে তিনি গড়েছেন অঢেল অবৈধ সম্পদের পাহাড়। এরমধ্যে আছে–
১) গুলশান–২ এর ৮৪ নম্বর রোডে লেকের ধারে একটি বিশাল বাড়ি দখল। ২) বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি তানবীর আহম্মেদ সানডি’র নারী কেলেঙ্কারির বিষয় ধামাচাপা দেয়ার ঘুষ বাবদ বসুন্ধরার প্লট ও বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থ গ্রহণ। ৩) গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় রিসোর্ট ও গাজীপুর সদরে বহুতল বাড়ি। ৪) রাজধানী ঢাকাস্থ উত্তরা ৭ নং সেক্টরে নিজের ও বোনের নামে ফ্লাট, উত্তরা রাজলক্ষ্মী মার্কেটে ৩–৪ টি দোকান, রংপুরে বিস্তৃত ফসলি জমি দখল, ঢাকার পূর্বাচল ও বসুন্ধরায় প্লট। ৫) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ফ্ল্যাট ৬) ধানমন্ডি ৭/এ–তে ফ্ল্যাট ও সাভার ডিওএইসএস ১০ তলা বাড়ি।
অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, দুর্নীতিবাজ টিএম জোবায়ের নিজের গ্রামে গড়েছেন বিলাসবহুল বাড়ি। এছাড়া অধিকাংশ অর্থই তিনি লন্ডন, দুবাই, সিঙ্গাপুরে ও তুরস্কে পাচার করেছেন। তিনি দেশের গণ্ডি পেরিয়ে লন্ডন, তুরস্ক, দুবাইয়ে বিলাসবহুল বাড়ি তৈরি করেছেন।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতেও অভ্যন্তরীণ গ্রুপিং সৃষ্টি করে অনেক নিরীহ সেনা অফিসারদের ক্ষতি করেছেন তিনি। এমনকি ফ্যাসিস্ট খুনি হাসিনা পলায়ন করার কিছুদিন আগেই অবসরে গিয়েও থামেনি তার দাম্ভিকতা ও ক্ষমতার দাপট। মানবতাবিরোধী নিষ্ঠুর আয়নাঘর ও বৈষম্য বিরোধী কোটা আন্দোলনে ছাত্রদের উপর হেলিকপ্টার গানশিপ থেকে স্নাইপার রাইফেল দিয়ে গুলি করার নেপথ্যে শেখ হাসিনার সামরিক উপদেষ্টা ও শেখ রেহানার দেবর তারিক আহম্মেদ সিদ্দিকীর সহযোগী হিসেবে টিএম জোবায়ের অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। সেখানেও না থেমে সেনাপ্রধান ও অন্তর্বর্তীকালীন বিপ্লবী সরকারের বিরুদ্ধে ক্যু করার পরিকল্পনা করে এনএসআই–কে জাতির কাছে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হন তিনি।
পরিশেষে বিভিন্ন অপকর্ম, ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে, কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনসহ অন্যান্য অভিযোগসমূহ তদন্ত সাপেক্ষে টিএম জোবায়েরের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়।
এছাড়া টিএম জোবায়ের দরবেশ বাবা হিসেবে পরিচিত সালমান এফ রহমানের পরামর্শে ডলারের মূল্য নিয়ন্ত্রণ করার নাটকীয় ফেইক অভিযান পরিচালনা করে বিভিন্ন মানি এক্সচেঞ্জ এজেন্সির নিকট থেকে কোটি কোটি টাকা মূল্যের ডলার আদায় করেছেন।
কর্মরত থাকাকালীন তার চাচাতো ভাই জহির আনুমানিক ৫০ জনকে এনএসআই–এর অফিসার পদে জনপ্রতি ২০ লাখ টাকা নিয়ে চাকরি দিয়েছেন এবং শতশত কোটি টাকার বিভিন্ন দপ্তরের কাজ হাতিয়ে নিয়েছেন।
এছাড়া কাইয়ুম নামে তার ভায়রা ভাই জিয়া আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর দিয়ে স্বর্ণ চোরাচালান সিন্ডিকেট–এর সাথে জড়িত ছিলেন (তার এই কাজে বিমানবন্দরে অবস্থিত এনএসআই কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক গোপালী বদরুল হাসান চৌধুরী সার্বিক সহযোগীতা করতেন)।
এসএ/দীপ্ত সংবাদ