অবশেষে দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান। আজ উদ্বোধন হতে যাচ্ছে বহুল প্রতীক্ষিত যমুনা রেলসেতু। এটি উত্তরাঞ্চলের সাড়ে তিন কোটি মানুষের জন্য যোগাযোগের এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। নতুন এই সেতু ট্রেন চলাচলের ক্ষেত্রে আধুনিক সুবিধা আনায়ন করবে, যা দেশের রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাণিজ্যেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
যমুনা রেল সেতুটি ৫০টি পিলার ও ৪৯টি স্প্যানের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা অত্যাধুনিক স্টিল প্রযুক্তির ডাবল ট্র্যাক সেতু। এটি শত বছর স্থায়ী হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। নতুন সেতু চালুর ফলে ট্রেন পারাপারের সময় উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসবে। যেখানে বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে ট্রেন পার হতে ২০–২৫ মিনিট লাগত, সেখানে যমুনা রেল সেতু দিয়ে পার হতে সময় লাগবে মাত্র আড়াই থেকে তিন মিনিট।
সেতুটিতে একযোগে দুই দিক থেকে ট্রেন চলতে পারবে, যা পূর্বে সম্ভব ছিল না। ফলে উত্তরবঙ্গের ২৩ জেলার সঙ্গে সারা দেশের সংযোগ আরও দ্রুত ও সহজ হবে। পশ্চিমাঞ্চল রেলের ১৭০ কিলোমিটার পথজুড়ে চলাচল করা ৪০টি আন্তঃনগর, ছয়টি আন্তর্দেশীয় ও ১৮টি মালবাহী ট্রেনকে সিরাজগঞ্জের যমুনা পাড়ে আর অপেক্ষা করতে হবে না। এতে ভারত থেকে আমদানি করা পণ্যও সহজেই দেশের বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছানো সম্ভব হবে।
যদিও সেতুটি ডাবল ট্র্যাকের, তবে দুই পাশে এখনো সিঙ্গেল লাইন থাকায় পুরোপুরি সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। জয়দেবপুর থেকে ঈশ্বরদী পর্যন্ত ১১৭ কিলোমিটার রেলপথটি সিঙ্গেল থাকায় ট্রেন চলাচলে কিছুটা সীমাবদ্ধতা থাকবে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই সেতুর পুরো সুবিধা পেতে হলে আব্দুলাপুর থেকে রাজশাহী পর্যন্ত রেললাইন ডাবল করতে হবে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক আফজাল হোসেন জানিয়েছেন, যমুনা রেলসেতুর দুই পারের রেলপথ ডাবল করার প্রকল্প ইতোমধ্যে গ্রহণ করা হয়েছে। সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শেষ হয়েছে এবং দ্রুত বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা চলছে।