ইসলামে কোরবানি হলো ওয়াজিব। ইমাম আওযায়ী, ইমাম আবু হানীফা রহ. প্রমুখের মত এটাই। ইমাম মালেক ও ইমাম আহমদ রহ. থেকে একটি মত বর্ণিত আছে যে তারাও ওয়াজিব বলেছেন।
মহান আল্লাহ তায়ালা নির্দেশ দিয়েছেন:—
‘তোমার প্রতিপালকের উদ্দেশ্যে সালাত আদায় কর এবং (পশু) কুরবানি কর।’ সূরা কাউছার, আয়াত: ২
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:—
‘যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কুরবানি করে না সে যেন আমাদের ঈদগাহের ধারে না আসে।
কোরবানির শর্তাবলি:
এমন পশু দ্বারা কোরবানি দিতে হবে যা শরিয়ত নির্ধারণ করে দিয়েছে। সেগুলো হলো: উট, গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া, দুম্বা।
কোরবানির ওয়াক্ত বা সময়:
কোরবানি নির্দিষ্ট সময়ের সাথে সম্পর্কিত একটি ইবাদত। এ সময়ের পূর্বে যেমন কোরবানি আদায় হবে না তেমনি পরে করলেও আদায় হবে না।
যারা ঈদের সালাত আদায় করবেন তাদের জন্য কোরবানির সময় শুরু হবে ঈদের সালাত আদায় করার পর থেকে। যদি ঈদের সালাত আদায়ের পূর্বে কোরবানির পশু যবেহ করা হয় তাহলে কোরবানি আদায় হবে না। যেমন হাদিসে এসেছে—
আল–বারা ইবনে আযেব রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: আমি শুনেছি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুতবাতে বলেছেন: এ দিনটি আমরা শুরু করব সালাত দিয়ে। অতঃপর সালাত থেকে ফিরে আমরা কোরবানি করব। যে এমন আমল করবে সে আমাদের আদর্শ সঠিকভাবে অনুসরণ করল। আর যে এর পূর্বে যবেহ করল সে তার পরিবারবর্গের জন্য মাংসের ব্যবস্থা করল। কোরবানির কিছু আদায় হল না।
অংশীদারির ভিত্তিতে কোরবানি:
এটা ‘শরীকে কোরবানি দেয়া’ বলা হয়। ভেড়া, দুম্বা, ছাগল দ্বারা এক ব্যক্তি একটা কোরবানি করতে পারবেন। আর উট, গরু, মহিষ দ্বারা সাত জনের পক্ষ থেকে সাতটি কোরবানি করা যাবে। ইতোপূর্বে জাবের রা. কর্তৃক বর্ণিত হাদিস দ্বারা এটা প্রমাণিত হয়েছে।
মনে রাখতে হবে কোরবানি হল একটি ইবাদত ও আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের নৈকট্য লাভের উপায়। তাই তা আদায় করতে হবে সময়, সংখ্যা ও পদ্ধতিগত দিক দিয়ে শরিয়ত অনুমোদিত নিয়মাবলী অনুসরণ করে।
কোরবানির উদ্দেশ্য শুধু মাংস খাওয়া নয়, শুধু মানুষের উপকার করা নয় বা শুধু সদকা নয়। কোরবানির উদ্দেশ্য হলো আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের একটি মহান নিদর্শন তার রাসূলের নির্দেশিত পদ্ধতিতে আদায় করা।
তাই, আমরা দেখলাম কীভাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাংসের বকরি ও কোরবানির বকরির মাঝে পার্থক্য নির্দেশ করলেন। তিনি বললেন যা সালাতের পূর্বে যবেহ হল তা বকরির মাংস আর যা সালাতের পরে যবেহ হল তা কোরবানির মাংস। সূত্র: হাদিদ বিডি
এজে/ইএ/দীপ্ত সংবাদ