মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনার মধ্যে এক ঘণ্টার ব্যবধানে ছয় দফা মিসাইল হামলার পর ইসরাইলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিয়েছে ইরান। মঙ্গলবার (২৪ জুন) ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম ‘প্রেস টিভি’ জানায়, ইসরাইলি ভূখণ্ডে একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে।
একই ধরনের খবর দিয়েছে ইসরাইলের প্রভাবশালী গণমাধ্যম চ্যানেল ১২ ও ওয়াইনেট। তারা জানিয়েছে, তীব্র উত্তেজনার মধ্যে ইরান–ইসরাইল যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একধাপ এগিয়ে নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যালে’ ঘোষণা দেন— “পুরোপুরি ও সর্বাত্মক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে ইরান ও ইসরাইল। দয়া করে কেউ যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করবেন না।”
তবে ট্রাম্পের এই ঘোষণার ব্যাপারে ইরান আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি। বরং ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি সতর্ক করে বলেন, “এখন পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি বা সামরিক অভিযান বন্ধের বিষয়ে কোনো চুক্তি হয়নি। তবে ইসরাইল যদি তেহরানের সময় অনুযায়ী ভোর ৪টার মধ্যে হামলা বন্ধ করে, তাহলে আমরা আর পাল্টা হামলা চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা রাখি না।”
এর আগে মঙ্গলবার ভোর থেকে দুই দেশের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা চলে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানায়, এক ঘণ্টার মধ্যে ইরান ইসরাইলের বিভিন্ন স্থানে ছয়বার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়।
ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানায়, অধিকাংশ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করা সম্ভব হলেও বিরশেবা শহরের একটি অ্যাপার্টমেন্ট ভবনে সরাসরি আঘাত হানে একটি মিসাইল। এতে কমপক্ষে চারজন নিহত হন এবং আহত হন বেশ কয়েকজন।
উল্টো দিকে, ইসরাইলও তেহরানের বেশ কয়েকটি স্থানে পাল্টা হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন। তারা স্থানীয় সূত্র ও ভেরিফায়েড ছবি বিশ্লেষণ করে জানায়, তেহরানের আকাশে কালো ধোঁয়ার দৃশ্য দেখা গেছে।
গত প্রায় ১২ দিনের সংঘাতে ইরানে কয়েকশ এবং ইসরাইলে কয়েক ডজন মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। যুদ্ধবিরতির ঘোষণায় আপাতত কিছুটা স্বস্তি এলেও পরিস্থিতি এখনও স্পষ্ট নয়। দ্বন্দ্ব নতুন মোড় নেবে, নাকি প্রকৃত শান্তি ফিরবে— তা জানতে বিশ্ববাসীকে অপেক্ষা করতে হবে।