রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেই প্রকাশ্যে পাকিস্তান সরকারের সঙ্গে সুপ্রিমকোর্টের মতবিরোধ। ইমরান খানের গ্রেপ্তার ইস্যুতে সর্বোচ্চ আদালতের অবস্থান বিপাকে ফেলেছে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফকে।
ক্ষমতাসীনদের অনেকেই প্রকাশ্যে আদালতের সমালোচনাও করছেন। প্রশ্ন উঠেছে— সরকারের কর্তৃত্ব নিয়েও। খবর রয়টার্সের। ইমরান খানকে গ্রেপ্তার ইস্যুতে যখন টালমাটাল পাকিস্তান, তখনই দৃশ্যপটে দেশটির সুপ্রিমকোর্ট। ইসলামাবাদ হাইকোর্ট বৈধ বললেও পিটিআইপ্রধানকে গ্রেপ্তার বেআইনি বলছেন সর্বোচ্চ আদালত।
এই রায়ে স্পষ্ট হলো— পাকিস্তান সরকার ও সুপ্রিমকোর্টের মতবিরোধ। ইমরান সমর্থকরা বিজয় উৎসব করলেও প্রকাশ্যেই সর্বোচ্চ আদালতের সমালোচনা করছেন ক্ষমতাসীনদের অনেকেই। মনে করা হচ্ছে, সুপ্রিমকোর্টের এই রায়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছে পাক সরকারের কর্তৃত্ব, চাপে ফেলবে দেশটির সামরিক বাহিনীকেও।
পাকিস্তানের রাজনৈতিক অস্থিরতা নিরসনে, সুপ্রিমকোর্টের হস্তক্ষেপ এই প্রথম নয়। এর আগেও কয়েকবার সরকারের মুখোমুখি দাঁড়ায় সর্বোচ্চ আদালত। যদিও কেউ কেউ বলছেন, এতে স্পষ্ট হয়েছে— দেশটির বিচার বিভাগের স্বাধীনতা।
গত বছর পাঞ্জাব ও খাইবার পাখতুনখোয়ার প্রাদেশিক নির্বাচন নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন প্রধান বিচারপতি। অর্থনৈতিক সংকটের অজুহাতে সরকার নির্বাচন পিছিয়ে দিতে চাইলেও বাধা হয়ে দাঁড়ান সুপ্রিমকোর্ট। স্বপ্রণোদিত হয়ে ১৪ মে নির্বাচন আয়োজনের নির্দেশ দেন সর্বোচ্চ আদালত।
ওয়াশিংটন উড্রো উইলসন সেন্টার মাইকেল কুগেলম্যান বিশ্লেষক বলেন, পাকিস্তানের সাম্প্রতিক বিভিন্ন রাজনৈতিক সংকটে সুপ্রিমকোর্ট স্বাধীনভাবে ও স্বপ্রণোদিত হয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর আগে সরকারের প্রাদেশিক নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনাকেও থামিয়ে দিয়েছে। এবার ইমরান খানের গ্রেফতারের বৈধতা নিয়ে তুলল প্রশ্ন।
অবশ্য সুপ্রিমকোর্টের সঙ্গে দ্বন্দ্ব লুকাননি প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফও। সর্বোচ্চ আদালতের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা ছড়ানোর অভিযোগ তোলেন পাক প্রধানমন্ত্রী। এমনকি সংসদে আদালতের ক্ষমতা হ্রাসে বিলও পাস হয়।
এর আগে ইমরান খান সরকারেরও মুখোমুখি দাঁড়িয়েছিলেন পাকিস্তানের সর্বোচ্চ আদালত। তৎকালীন ডেপুটি স্পিকার, বিরোধীদের অনাস্থা ভোটের প্রস্তাব বাতিল করলে তা বেআইনি ঘোষণা করেন আদালত।
এফএম/দীপ্ত সংবাদ