মিসরের রাজধানী কায়রোতে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় নারীদের বিভাগে প্রথম স্থান অর্জন করে ইতিহাস গড়েছেন বাংলাদেশের তরুণী হুমায়রা মাসুদ। মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) কায়রোতে ‘ইন্দোনেশিয়ান কোরআন রিসাইটারস অ্যাসোসিয়েশন’–এর আয়োজনে অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতার সমাপনী পর্বে হুমায়রার নাম ঘোষণা করে আয়োজক কমিটি।
হুমায়রার স্বামী মাওলানা মাসুম বিল্লাহ গুলজার আজহারি গণমাধ্যমকে জানান, প্রতিযোগিতায় ১২টি দেশের মোট ১৪৩ জন প্রতিযোগী অংশ নেন। মেয়েদের বিভাগে বাংলাদেশি হুমায়রা মাসুদ প্রথম হয়। ইন্দোনেশিয়ার আয়েশা ইজ্জত মুসলিমা দ্বিতীয় এবং কায়রানি নফসুল মুতমাইন্না তৃতীয় স্থান অর্জন করেন। অন্যদিকে ছেলেদের বিভাগে প্রথম হন নাইজেরিয়ার বশির উসমান ইমাম।
বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন আল–আজহার মসজিদের ইমাম ও বিশিষ্ট ক্বারী শায়খ ফাওযী আল–বারবারী আজহারি।
চাঁদপুর জেলার হাইমচর থানার চর ভৈরবী গ্রামের মেয়ে হুমায়রা বর্তমানে মিসরের আল–আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক থিওলজি অনুষদে অধ্যয়নরত। এর আগে তিনি নারায়ণগঞ্জের উম্মে আইমান (রা.) আন্তর্জাতিক বালিকা মাদ্রাসা থেকে হিফজ সম্পন্ন করেন এবং জামিয়া ইব্রাহিমিয়া আমিনিয়া মহিলা মাদ্রাসা থেকে দাওরায়ে হাদিস শেষ করেন।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এটি হুমায়রার প্রথম সাফল্য নয়। ২০১০ সালে জর্ডানে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় তিনি দ্বিতীয় স্থান এবং ২০২৫ সালে মিসরের ওয়াক্ফ মন্ত্রণালয় আয়োজিত ৩১তম আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় অনারব বিভাগে পঞ্চম স্থান অর্জন করেন।
স্ত্রীর এই ঐতিহাসিক সাফল্যে মাওলানা মাসুম বিল্লাহ গুলজার আজহারি বলেন, এটি নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের জন্য এক গৌরবের মুহূর্ত। আন্তর্জাতিক পরিসরে কোরআন তেলাওয়াতে বাংলাদেশের মেয়েদের অংশগ্রহণ ও সাফল্য আমাদের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের উজ্জ্বল প্রতিফলন।
তিনি আরও বলেন, হুমায়রা প্রমাণ করেছেন, বাংলাদেশের মেয়েরাও কোরআনের খেদমতে বৈশ্বিকভাবে নেতৃত্ব দিতে পারেন। আল্লাহ যেন তাকে কোরআনের সেবায় কবুল করেন এবং তার এই যাত্রা আরও বরকতময় করেন।