নানা আয়োজনের মধ্যদিয়ে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের শারদীয় দুর্গাপূজার শেষদিনে বিসর্জন দেয়া হয়েছে দেবী দূর্গাকে। বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হয় আনন্দ উৎসবের মুহূর্ত। ঘোটকে চড়ে দেবী ফিরে যান কৈলাসে।
দশমীতে মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) সকাল থেকে ঢাকের বাদ্য, শঙ্খনাদ আর উলুধ্বনিতে পূজা মণ্ডপে চলে দেবীর কাছে মঙ্গলকামনা।
এর পরই আনন্দ উৎসবের মুহূর্ত শেষ হয় প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে। ফের দেবীকে মর্ত্যের পৃথিবীতে আমন্ত্রণ জানাতে অপেক্ষা করতে হবে আবার এক বছর। বছর ঘুরে অন্নপূর্ণার আগমনে দেশের মন্দির–মণ্ডপে আনন্দের যে লহর বইছিল, দশমী তিথিতে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা তাকে বিদায় জানিয়েছেন অশ্রুজলে।
বিজয়া দশমীর দিনটি ভক্তদের কাছে একদিকে যেমন উৎসবের, অপরদিকে বেদনার। এদিন ঘোটকে চড়ে দেবী ফিরে যান কৈলাসে।
সনাতন ধর্মের বিশ্বাস অনুযায়ী, বিসর্জনের মধ্য দিয়ে ‘পিতৃগৃহ’ থেকে পুত্র–কন্যা নিয়ে দুর্গা ফিরে যান কৈলাসে তার ‘স্বামীর’ ঘরে। এক বছর পর নতুন শরতে আবার তিনি আসবেন এই ধরণীতে।
“দর্পণে বিসর্জন এবং অঞ্জলি প্রদানের মধ্য দিয়েই মূলত পূজার আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়। পরে সিঁদুর খেলার আনন্দ হয় এবং বিকেল থেকে প্রতিমা বিসর্জন করা হয়।”
পূজা দিতে আসা প্রিয়াংকা পাল জানান, পূজার একটা দিক তো আরাধনা বা প্রার্থনা, আবার আরেকটি দিক হল আনন্দ উৎসব। এটা আনন্দটা সার্বজনীন একটা ব্যাপার, শ্বাশত বাঙালি ধর্মীয় সম্প্রীতির মধ্য দিয়ে এই আনন্দ উদযাপন করে। মা আসার আগ মুহূর্ত থেকে অনেক টা খুশি থাকে সবার মনে। আসার পর আরও ভালো লাগে। মায়ের প্রতিমা দেখার আনন্দ যেনো প্রতিটা আঙিনা জুড়ে থাকে। সপ্তমী অষ্টমী নবমী সব শেষ আসে দশমী যেনো মনের কোনে অনেকটা কষ্ট জমা থাকে একটা বছরের জন্য। মা আমাদের ছেড়ে চলে যাওয়া অনেকটা কষ্ট, তবুও হাসি মুখে মাকে বিদায় দিতে হয়। কারন, মা সবার জন্য সুখ শান্তি বয়ে আনে।
তাদের বিশ্বাস অনুযায়ী, মহালয়ার দিন ‘কন্যারূপে’ ধরায় আসেন দশভূজা দেবী দুর্গা; বিসর্জনের মধ্য দিয়ে তাকে এক বছরের জন্য বিদায় জানানো হয়। তার এই ‘আগমন ও প্রস্থানের’ মাঝে আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষের ষষ্ঠী থেকে দশমী তিথি পর্যন্ত পাঁচ দিন চলে দুর্গোৎসব।
দেশজুড়ে এবার ৩২ হাজার ৪০৭টি মন্দির–মণ্ডপে পূজা হচ্ছে। পঞ্জিকামতে, দেবী দুর্গা এবার মর্ত্যে এসেছেন ঘোটকে অর্থাৎ ঘোড়ায় চড়ে। ঘোড়ায় চড়েই কৈলাশে ফিরে যান তিনি।
মোরশেদ আলম/দীপ্ত নিউজ