সাজানো গোছানো সংসার ছিল সিরাজুল ইসলামের। হঠাৎ করেই আগুন কেড়ে নিল তার সর্বস্ব। মাথা গোজার শেষ আশ্রয়স্থল একমাত্র ঘর আগুনে পুড়ে যাওয়ায় এখন তার আশ্রয় হয়েছে অন্যের ঘরের বারান্দায়।
সিরাজুল ইসলাম পেশায় ছিলেন একজন কলা ব্যবসায়ী। এই কলা বিক্রির মাধ্যমে চলত তার ৬ সদস্যের সংসারের ব্যায়ভার। স্বামী–স্ত্রীসহ তাদের সংসারে রয়েছে চারটি সন্তান। যার মধ্যে একটি সন্তান আবার প্রতিবন্ধী। সম্পত্তি বলতে বসত ভিটায় তার সম্বল।
সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকাল পাঁচটার দিকে সিরাজুল ইসলামের স্ত্রী নার্গিস আক্তার বাড়ির পাশে একটি জমিতে ঘাস কাটার জন্য গিয়েছিলাম। সেখান থেকে বাড়িতে ফিরে দেখতে পায় ঘরের মধ্যে আগুন। মুহুর্তের মধ্যেই ছড়িয়ে পড়ে আগুন। এ সময় তার ডাক চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। ফায়ার সার্ভিসের সংবাদ দেওয়া হলে দ্রুত ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনা স্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। তবে ততক্ষণে ঘরে থাকা আসবাবপত্রসহ নগদ ৯০ হাজার টাকা পুড়ে ছাই হয়ে যায়। সবকিছু হারিয়ে সিরাজুল ইসলাম এখন চোখে অন্ধকার দেখছেন। পরিবার পরিজন নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন পাশের বাড়ির একটি বারান্দায়।
মাগুরা সদর উপজেলার ভারাসিয়া মধ্যপাড়া গ্রামে সিরাজুল ইসলামের বাড়িতে গেলে তিনি বলেন, আমার বাড়িতে যখন আগুন লাগে তখন আমি ব্যবসার কাজে বাইরে ছিলাম। আগুন লাগার খবর পেয়ে বাড়িতে এসে দেখি আমার সবকিছু পুড়ে শেষ হয়ে গেছে। ঘরে থাকা একটি ফ্রিজ, টেলিভিশন, পানির মোটর, গ্যাসের চুলা, সারা জীবনের সঞ্চিত আসবাবপত্র, কাপড়চোপড় ও ব্যবসার জন্য ঘরে রাখা নগদ ৯০ হাজার টাকা সবই পুড়ে শেষ হয়ে গেছে। এখন আমি পরিবার নিয়ে অসহায় জীবনযাপন করছি। এদিকে আমার হাতে এমন কোন অর্থ নেই যা দিয়ে আমি পুনরায় ঘর নির্মাণ ও ব্যবসা শুরু করতে পারব।
সিরাজুল ইসলামের স্ত্রী নার্গিস আক্তার কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, ছাগলের জন্য ঘাস কাটতে বাইরে গিয়েছিলাম। এসে দেখি আমার ঘর আগুনে পুড়ছে। আমার গায়ে জড়ানো শাড়ি ছাড়া আর অবশিষ্ট কিছুই এখন আমাদের নাই।
মাগুরা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের স্টেশন অফিসার মো. সোহাগ উজ্জামান বলেন, আগুন লাগার খবর পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনি। প্রাথমিকভাবে আমরা ধারণা করছি,চুলার আগুন থেকে এই অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হতে পারে।
মোরশেদ আলম/দীপ্ত নিউজ