গণঅভ্যুত্থান–পরবর্তী প্রথম বছরেই বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বৈদেশিক প্রত্যক্ষ বিনিয়োগে (এফডিআই) রেকর্ড ১৯.১৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। সম্প্রতি প্রকাশিত অর্থনৈতিক পরিসংখ্যানের তথ্য অনুযায়ী, এটি বৈশ্বিক প্রবণতার সম্পূর্ণ বিপরীত একটি ইতিবাচক দৃষ্টান্ত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
সোমবার (৩ নভেম্বর) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় গুণ হলো শত প্রতিকূলতার মধ্যেও ঘুরে দাঁড়ানোর অসাধারণ ক্ষমতা। এই পরিসংখ্যান সেটিরই দারুণ প্রতিফলন। সাধারণত গণঅভ্যুত্থানের পর বিদেশি বিনিয়োগ কমে যায়, কিন্তু আমরা দেখছি উল্টো চিত্র। সঠিক অর্থনৈতিক নীতি, বাংলাদেশ ব্যাংক ও এনবিআরের সমন্বিত পদক্ষেপ, প্রাইভেট সেক্টরের অদম্য স্পৃহা সব মিলিয়ে এই সাফল্য এসেছে।
তিনি আরও জানান, সব সমস্যার সমাধান আমরা এখনো করতে পারিনি, তবে সদিচ্ছার কোনো ঘাটতি রাখিনি। শিগগিরই বিডা আমাদের এক বছরের কর্মপরিকল্পনা ও সাফল্যের একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করবে।
বিশ্বব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যেসব দেশে গণঅভ্যুত্থান ঘটেছে, সেখানে পরবর্তী এক বছরে এফডিআই হ্রাস পেয়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। উদাহরণস্বরূপ, শ্রীলঙ্কায় ২০২২ সালের পর এফডিআই কমেছে ১৯.৪৯ শতাংশ, চিলিতে ২০১৯ সালের পর ২৫.৬৮ শতাংশ, সুদানে ২০২১ সালের পর ২৭.৬০ শতাংশ, ইউক্রেনে ২০১৪ সালের পর ৬১.২১ শতাংশ, মিশরে ২০১১ সালের পর ১০৭.৫৫ শতাংশ এবং ইন্দোনেশিয়ায় ১৯৯৮ সালের পর ১৬১.৪৯ শতাংশ।
এই ধারাবাহিক হ্রাসের বিপরীতে বাংলাদেশের এফডিআই বৃদ্ধিকে অর্থনীতির স্থিতিশীলতা ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশের প্রতি আন্তর্জাতিক আস্থার প্রতিফলন হিসেবে দেখা হচ্ছে।