ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট জুনাইদ আহমেদ পলকের শ্যালক লুৎফুল হাবিব রুবেল মনোনয়ন প্রত্যাহার করায় একক প্রার্থী হিসেবে অপহৃত প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন পাশাকে বেসরকারিভাবে সিংড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে বিজয়ী ঘোষণা করেছে।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সকালে জেলা নির্বাচন অফিসের কার্যালয়ে প্রতীক বরাদ্দ অনুষ্ঠান শেষে এ ঘোষণা দেন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং অফিসার আব্দুল লতিফ শেখ।
রিটার্নিং অফিসার আব্দুল লতিফ শেখ জানান, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সিংড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে মাত্র দু
জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ছিল সোমবার (২২ এপ্রিল) কিন্তু রোববার (২১ এপ্রিল) দুপুরে জেলা নির্বাচন অফিসে এসে তার কাছে চেয়ারম্যান প্রার্থী লুৎফুর হাবীব রুবেলের পক্ষে তাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মিনহাজ উদ্দিন মনোনয়ন প্রত্যাহারের আবেদন পত্রটি জমা দেন। আবেদন পত্রটি পেয়ে তিনি ফোনে লুৎফুল হাবিব রুবেলের সঙ্গে যোগাযোগ করে তার পাঠানো প্রতিনিধি ও প্রার্থীতা প্রত্যাহারের বিষয় নিশ্চিত হন এবং প্রত্যাহার পত্রটি গ্রহণ করেন। এরপর সিংড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না থাকায় একক প্রার্থী হিসেবে দেলোয়ার হোসেন পাশাকে বেসরকারিভাবে সিংড়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ঘোষণা করা হয়।
অপহৃত দেলোয়ার হোসেন পাশা বর্তমানে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
উল্লেখ্য, ২১ এপ্রিল সকালে এক ভিডিও বার্তায় লুৎফুল হাবিব রুবেল বলেন, সিংড়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন যে, কোন মন্ত্রী, সংসদ সদস্যের আত্মীয়–স্বজন নির্বাচন করতে পারবে না। তার এই ঘোষণার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে এবং জুনাইদ আহমেদ পলকের নির্দেশনা অনুযায়ী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিচ্ছেন বলে তিনি জানান।
গত সোমবার (১৫ এপ্রিল) মনোনয়নপত্র দাখিলের জন্য দেলোয়ার হোসেন ব্যাংকে জামানতের টাকা জমা দেয়ার জন্য বের হন। এ সময় তারা জরুরি প্রয়োজনে জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের সামনে গেলে সেখান থেকে একটি কালো রঙের মাইক্রোবাসে করে কয়েকজন দুর্বৃত্ত আলাউদ্দিন মুন্সিকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে দেলোয়ার হোসেন নির্বাচন অফিস থেকে নেমে আসলে তাকেও একটি মাইক্রোবাসে করে তুলে নিয়ে নেয়।
এ সময় তারা তাকে গাড়ির ভিতর মারধর করে। পরে বিকেলে দেলোয়ার হোসেনের বাড়ির সামনে (সিংড়া উপজেলার কলম ইউনিয়নের পারসাঐল গ্রাম) সামনে ফেলে দিয়ে চলে যায়। চেয়ারম্যান প্রার্থী দেলোয়ার হোসেনকে অপহরণের দুটি সিসিটিভি ফুটেজ পাওয়া গেছে। দেলোয়ার হোসেনকে অপহরণ করে যে গাড়িতে তোলা হয় সেটি তার প্রতিদ্বন্দ্বী লুৎফুল হাবীব রুবেলের। পরে আহত দেলোয়ার হোসেনের ভাই বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তিন আসামিকে গ্রেফতার করেন। পরে গত ১৯ এপ্রিল অসুস্থ দেলোয়ার হোসেনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দেখতে যান ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট জুনাইদ আহমেদ পলক।
সাহেদুল আলম/এজদীপ্ত সংবাদ