বৃহস্পতিবার, ১৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৪ঠা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৬ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
বৃহস্পতিবার, ১৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৪ঠা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৬ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

নওগাঁয় বন্যায় আমনের ব্যাপক ক্ষতি

দীপ্ত নিউজ ডেস্ক
7 minutes read

নওগাঁয় ছোট যমুনা ও আত্রাই নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ভাঙ্গনের ফলে জেলার রাণীনগর ও আত্রাই উপজেলার বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ ভেঙ্গে সৃষ্ট বন্যায় তলিয়ে যায় শতাধিক গ্রাম। মান্দা উপজেলায় আত্রাই নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে দুই হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে। বর্তমানে নদীর পানি কমায় রাণীনগর ও মান্দা উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে আত্রাই উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। এদিকে সরকারের পক্ষ থেকে বন্যার্তদের মাঝে খাবার সামগ্রী বিতরণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

গত বুধবার রাণীনগরের ছোট যমুনা নদীর নান্দাইবাড়ি ও কৃষ্ণপুর নামক স্থানের বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ার কারণে পানির চাপে ভেঙ্গে গেছে নান্দাইবাড়ি নামক স্থানের বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের ২৬মিটার। ফলে নওগাঁআত্রাইনাটোরের সঙ্গে বর্তমানে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এছাড়া নান্দাইবাড়ি, কৃষ্ণপুর, মালঞ্চিসহ ওই এলাকার প্রায় ৮গ্রামের মানুষ বর্তমানে পানি বন্দি হয়ে পড়ে। বর্তমানে আকাশের বৃষ্টি না হওয়ায় ছোট যমুনা নদীর পানি কমতে শুরু করায় বন্যা কবলিত এলাকার বাড়িঘর থেকে নামতে শুরু করেছে পানি।

অপরদিকে গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার আত্রাই উপজেলার কাশিয়াবাড়িকালীগঞ্জ সড়কের বলরামচক নামক স্থানে বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের ২৫মিটার, আত্রাইসিংড়া সড়কের জগদাস নামক স্থানে ১৬মিটার ও পাশাপাশি শিকারপুর নামক স্থানে ৫৭মিটার বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ার কারণে উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের মধ্যে ৭টি ইউনিয়নের প্রায় ৮০টি গ্রাম বর্তমানে বন্যার পানিতে তলিয়ে আছে। এছাড়া আত্রাইবান্দাইখাড়া সড়কের নন্দলালী নামক স্থানে ভেঙ্গে যাওয়া বেরিবাঁধের অংশটুকু বন্ধ করায় রক্ষা পেয়েছে ওই এলাকার অনেক গ্রামের মানুষ, ফসল ও পুকুরের মাছ।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে যে বন্যায় রাণীনগর উপজেলায় ৮৫হেক্টর জমির আমন ধান ও ১.৫০হেক্টর সবজির ক্ষেত, মান্দা উপজেলায় ৮০হেক্টর আমন ধান ও ১১হেক্টর সবজি ক্ষেত এবং আত্রাই উপজেলায় ৩১০হেক্টর আমন ধান বন্যার পানিতে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। জেলা প্রশাসক গোলাম মওলা গত শুক্রবার (২৯সেপ্টেম্বর) বিকেলে বন্যায় ভাঙ্গা স্থানগুলো পরিদর্শন করেছেন এবং মেরামত কাজ সঠিক মানে বুঝে নিতে স্থানীয়দের প্রতি আহ্বান জানান। এসময় নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফইজুর রহমান সঙ্গে ছিলেন।

নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী প্রবীর কুমার পাল বলেন বর্তমানে আত্রাই নদীর পানি কমায় কোন পয়েন্টেই আর বিপদসীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে না। ছোট যমুনার নদীর পানি কমার ফলেও শুধুমাত্র লিটন ব্রীজ পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ৩০সেমি উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। আমরা দিনরাত ভেঙ্গে যাওয়া বাঁধ মেরামতে এবং নতুন করে কোথাও ভেঙ্গে যাওয়ার আগেই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছি। এছাড়া রাণীনগরের ভেঙ্গে যাওয়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের মেরামতের কাজ চলমান রয়েছে। দ্রুতই এই সড়কটি আবার ব্যবহার করতে পারবে স্থানীয়রা।

নওগাঁ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশেদুল হক রাসেল বলেন বাঁধগুলো ভাঙ্গার পরই সড়ক বিভাগের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা পরিদর্শন করেছেন। তাই ভেঙ্গে যাওয়া বাঁধের মেরামত কাজ সম্পন্ন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা সড়কের পাঁকাকরণ কাজ শুরু করবো।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ আবুল কালাম আজাদ বলেন বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা কৃষকদের বিকল্প ফসল চাষের পরামর্শ প্রদান অব্যাহত রেখেছি। আর এখনোও আমন ধান রোপনের সময় থাকায় বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমন ধান রোপন করা সম্ভব।

জেলা প্রশাসক মো. গোলাম মওলা জানান, জেলায় গত কয়েকদিনের বন্যায় ৩টি উপজেলার পানিবন্দি পরিবারগুলোকে সহায়তার জন্য এখন পর্যন্ত (শনিবার) আত্রাই উপজেলায় ২৬মে.টন চাল ও নগদ ১লাখ টাকা, মান্দা উপজেলায় ১৪মে.টন চাল ও রাণীনগর উপজেলায় ৪মে.টন চাল ও ৫০হাজার টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। যেভাবে নদীর পানি কমতে শুরু করেছে তাতে আশা করা যাচ্ছে আর দু’এক দিনের মধ্যেই রাণীনগর ও মান্দা উপজেলার বাড়িগুলো থেকে পানি নেমে যাবে। এতে করে দ্রুতই নওগাঁর বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হবে।

 

রিপন/মোরশেদ আলম/দীপ্ত নিউজ

আরও পড়ুন

সম্পাদক: এস এম আকাশ

অনুসরণ করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন

স্বত্ব © ২০২৩ কাজী মিডিয়া লিমিটেড

Designed and Developed by Nusratech Pte Ltd.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More