মঙ্গলবার, ১৭ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২রা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৪ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
মঙ্গলবার, ১৭ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২রা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৪ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

পাগলা মসজিদের দানবাক্সে মিলল ১৯ বস্তা টাকা, চলছে গণনা

6 minutes read

কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদে দানবাক্স খু‌লে পাওয়া গে‌ছে ১৯ বস্তা টাকা। এখন চল‌ছে টাকা গণনা। শ‌নিবার (৬ মে) সকাল ৮টায় মস‌জি‌দের দান‌ বাক্সের সিন্দুকগু‌লো খোলা হয়।

কি‌শোরগ‌ঞ্জের অতি‌রিক্ত জেলা প্রশাসক (সা‌র্বিক) এটিএম ফরহাদ চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

জানা গে‌ছে, শ‌নিবার সকা‌লে মস‌জি‌দের লোহার দা‌ন সিন্দুক থে‌কে পাওয়া যায় ১৯ বস্তা টাকা। এরপর টাকাগু‌লো বস্তায় ভ‌রে মস‌জি‌দের দ্বিতীয় তলায় মে‌ঝে‌তে ঢে‌লে টাকা গণনা শুরু হয়।

এর আগে সর্বশেষ গত ৪ জানুয়া‌রি দানবাক্সগুলো খু‌লে ২০ বস্তা টাকা পাওয়া গি‌য়ে‌ছিল। তখন ৪ কোটি ১৮ লাখ ১৬ হাজার ৭৪৪ টাকা পাওয়া যায়।

তিন মাস পর সিন্দুকগুলো খোলা হয়। এবার ৪ মাস পর শ‌নিবার সকাল ৮টার দি‌কে কি‌শোরগ‌ঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এটিএম ফরহাদ চৌধুরীর নেতৃত্বে কা‌লেক্ট‌রে‌টের ১০ জন ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে মসজিদের আট‌টি লোহার বড় বড় সিন্দুক খোলা হয়। এগু‌লো থেকে ১৯ বস্তা টাকা পাওয়া যায়।

বস্তাভ‌র্তি টাকা মস‌জি‌দের দ্বিতীয় তলায় ঢে‌লে শুরু হয় গণনা।

মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি খলিলুর রহমান ও রূপালী ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) রফিকুল ইসলামসহ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য এবং মসজিদ কমপ্লেক্সে অবস্থিত মাদ্রাসা ও এতিমখানার শিক্ষকশিক্ষার্থীসহ দুই শতা‌ধিক মানুষ টাকা গণনায় অংশ নেয়।

জানা গে‌ছে, পাগলা মসজিদে মানত করলে মনের আশা পূর্ণ হয়। এমন ধারণা থেকে ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে অসংখ‌্য মানুষ এ মসজিদে দান করে থাকেন।

জনশ্রুতি রয়েছে, এক সময় এক আধ্যাত্মিক পাগল সাধকের বাস ছিল কিশোরগঞ্জ শহরের হারুয়া ও রাখুয়াইল এলাকার মাঝ দিয়ে প্রবাহিত নরসুন্দা নদীর মধ্যবর্তী স্থানে জেগে ওঠা চ‌রে। ওই পাগল সাধকের মৃত‌্যুর পর এটি পাগল পীরের মসজিদ হিসেবে ব্যবহার শুরু করে এলাকাবাসী। তখন থে‌কে এ মস‌জি‌দে লোকসমাগম বাড়‌তে থা‌কে।

এখা‌নে মানত করলে মনোবাসনা পূরণ হয় এমন বিশ্বাস থেকে হিন্দুমুসলিমসহ বিভিন্ন ধর্মবর্ণের নারীপুরুষ মানত নিয়ে আসেন এ মসজিদে। তারা নগদ টাকাপয়সা, সোনা ও রুপার অলঙ্কারের পাশাপাশি গরু, ছাগল, হাঁসমুরগি এমনকি বিদেশি মুদ্রাও দান করেন। বিশেষ করে প্রতি শুক্রবার দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এ মসজিদে মানত নিয়ে আসা বিভিন্ন বয়সের নারীপুরুষের ঢল নামে। আগতদের মধ্যে মুসলিমদের অধিকাংশই জুমার নামাজ আদায় করেন মসজিদে। এর ইতিহাস প্রায় ২৫০ বছরেরও অধিক সময়ের বলে জানা যায়।

বর্তমানে কিশোরগঞ্জ শহরের ঐতিহাসিক স্থাপনার মধ্যে পাগলা মসজিদ অন্যতম। শহরের পশ্চিমে হারুয়া এলাকায় নরসুন্দা নদীর তীরে মাত্র ১০ শতাংশ জমির ওপর মসজিদটি গড়ে উঠলেও বর্তমানে মসজিদ কমপ্লেক্সটি ৩ একর ৮৮ শতাংশ জায়গা রয়েছে। এ মসজিদের পরিধির সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে এর খ্যাতি ও ঐতিহাসিক মূল্য।

ইতোমধ্যে দেশের অন্যতম আয়কারী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃত মসজিদটিকে পাগলা মসজিদ ইসলামি কমপ্লেক্স নামকরণ করা হয়েছে। এ ছাড়া মসজিদের আয় থেকে বিভিন্ন সেবামূলক খাতে অর্থ সাহায্য করা হয়।

এফএম/দীপ্ত সংবাদ

আরও পড়ুন

সম্পাদক: এস এম আকাশ

অনুসরণ করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন

স্বত্ব © ২০২৩ কাজী মিডিয়া লিমিটেড

Designed and Developed by Nusratech Pte Ltd.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More