প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পঁচাত্তরের পর ক্ষমতা জনগণের হাতে ছিল না, সেটা ক্যান্টনমেন্টে বন্দি ছিল। পরিবারের ন্যায়বিচার পেতে আমাকে ক্ষমতায় আসতে হয়েছে।
শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু সম্মেলন কেন্দ্রে সুপ্রিমকোর্ট আয়োজিত ‘একবিংশ শতাব্দীতে দক্ষিণ এশিয়ার সাংবিধানিক আদালত: বাংলাদেশ ও ভারত থেকে শিক্ষা’ শীর্ষক সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুসহ আমার পরিবারের সবাইকে হত্যার পর বিচারের জন্য আমাকে অনেক কাঠখড় পোহাতে হয়েছে। আমি আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম যে এ দেশে বিচার পাবো না। ন্যায় বিচার নিভৃতে কাঁদে। বিচারের জন্য আমাকে ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসতে হলো। কেন এ দেশের কারও কী বিবেক ছিল না? অবশেষে ক্ষমতায় এসে আমরা আইন পরিবর্তন করে বিচার শুরু করেছিলাম। কিন্তু ২০০১ সালে বিচার বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর আবার বিচার শুরু হলো। এরপর খুনিদের রায় কার্যকর করা সম্ভব হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশের পাশাপাশি স্মার্ট বিচার বিভাগ গড়ে তোলা হবে। করোনাকালীন অনলাইনে কোর্ট চালু, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন মামলার দ্রুত নিরসনের কাজ হয়েছে যেটার সুফল মানুষ পাচ্ছে। আদালতের মামলাজট নিরসনে অনেক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া আদালত অঙ্গনে ন্যায়কুঞ্জ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে যাতে বিচারপ্রার্থীরা এসে বসতে পারে। এজন্য প্রধান বিচারপতিকে ধন্যবাদ জানাই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত থেকে যারা এসেছেন তারা সৌভাগ্যবান। ভারত, পাকিস্তান পাশাপাশি রাষ্ট্র। কিন্তু ভারতে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত ছিল। অপরদিকে পাকিস্তান এবং বাংলাদেশে মিলিটারি ডিক্টেটরশিপ অব্যাহত ছিল। যেকারণে দেশের উন্নয়ন হয়নি। এখন দেশে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলেই আর্থ–সামাজিক উন্নতি হচ্ছে। ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত যদি হিসেব করেন, আজকে দেশের যে আর্থ–সামাজিক উন্নতি হচ্ছে, সেটা গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলেই। একটা স্থিতিশীল পরিবেশ আছে বলেই এটা সম্ভব হয়েছে।
তিনি বলেন, আজকে এটা প্রমাণিত সত্য যে মানুষের জীবনে ন্যায়বিচার প্রাপ্তি এবং আর্থসামাজিক উন্নতি– এটা একমাত্র হতে পারে যখন মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ করার সুযোগ হয়। তখন দেশ উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যেতে পারে। আজকে জনগণের মৌলিক অধিকার সুরক্ষিত করা হয়েছে।
এ সময় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন– বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, ভারতের প্রধান বিচারপতি ড. ধনঞ্জয় যশবন্ত চন্দ্রচূড়, আইন মন্ত্রী আনিসুল হক প্রমূখ।