যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রধানত ডেমোক্র্যাট এবং রিপাবলিকান প্রার্থীরাই থাকেন আলোচনার কেন্দ্রবুন্দুতে। এই দুই দলের প্রার্থী ছাড়াও বিভিন্ন দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী নানা এজেন্ডা নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাদের মধ্যে অনেকেই পরিবেশ, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও সমাজের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রচলিত নির্বাচনী ব্যবস্থার কারণেই এই প্রার্থীরা পর্যাপ্ত প্রচার পান না; বরং অনেকটাই আড়ালেই থেকে যান। নিচে কয়েকজনের পরিচিতি তুলে ধরা হলো:
কর্নেল ওয়েস্ট (পিপলস পার্টি)
প্রখ্যাত দার্শনিক ও মানবাধিকার কর্মী কর্নেল ওয়েস্ট পিপলস পার্টির প্রার্থী হিসেবে এবারের নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। তিনি সামাজিক ন্যায়ের প্রশ্ন তুলে অর্থনৈতিক বৈষম্য, স্বাস্থ্যসেবা এবং কর্পোরেট প্রভাবের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাচ্ছেন। ওয়েস্ট জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় একটি বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছেন।
জিল স্টেইন (গ্রিন পার্টি)
পরিবেশবাদী এবং সামাজিক ন্যায়ের পক্ষে লড়াই করে আসা জিল স্টেইন ২০১২ ও ২০১৬ সালে গ্রিন পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ছিলেন। যদিও তিনি এবার প্রার্থী নন, তার পরিবেশ সংরক্ষণ, স্বাস্থ্যসেবা সংস্কার এবং কর্পোরেট ক্ষমতা হ্রাসের বার্তাগুলো গ্রিন পার্টির নীতিতে গভীর প্রভাব ফেলেছে এবং দলের বর্তমান প্রার্থীদের এজেন্ডাকে শক্তিশালী করেছে।
চেইস অলিভার (লিবার্টেরিয়ান পার্টি)
লিবার্টেরিয়ান পার্টির প্রার্থী চেইস অলিভার ব্যক্তি স্বাধীনতা ও সীমিত সরকারের পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছেন। তার প্রচারণার মূল এজেন্ডা হলো ব্যক্তি অধিকার রক্ষা, সরকারি হস্তক্ষেপ কমানো এবং মুক্ত বাজার অর্থনীতি স্থাপন। অলিভার বিশেষভাবে অপরাধ বিচার ব্যবস্থা সংস্কার এবং বিদেশী হস্তক্ষেপহীন নীতি অনুসরণে জোর দিচ্ছেন।
ক্লাউডিয়া ডে লা ক্রুজ (পার্টি ফর সোশ্যালিজম অ্যান্ড লিবারেশন)
ক্লাউডিয়া ডে লা ক্রুজ শ্রমজীবী জনগণের অধিকার এবং সাম্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে পার্টি ফর সোশ্যালিজম অ্যান্ড লিবারেশনের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। তার এজেন্ডায় রয়েছে আবাসন অধিকার, পরিবেশগত ন্যায়বিচার এবং স্বাস্থ্যসেবাকে মৌলিক অধিকার হিসেবে প্রতিষ্ঠা। তিনি সমাজতান্ত্রিক নীতিমালার মাধ্যমে সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পক্ষে কাজ করছেন।
রবার্ট এফ. কেনেডি জুনিয়র (স্বতন্ত্র)
রবার্ট এফ. কেনেডি জুনিয়র একজন পরিবেশ ও স্বাস্থ্য অধিকার কর্মী হিসেবে পরিচিত। এবারের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নিয়ে তিনি স্বাস্থ্যসেবা, পরিবেশ রক্ষা, এবং সরকারী ব্যবস্থার সংস্কারের এজেন্ডা নিয়ে কাজ করছেন। দ্বিদলীয় ব্যবস্থার বাইরে গিয়ে জনগণের পক্ষে নতুন সমাধান প্রস্তাব করার লক্ষ্য নিয়েই তিনি এগিয়ে এসেছেন।
মূলধারার বাইরে থাকা এই প্রার্থীরা তাদের নিজ নিজ দলের মূল্যবোধ ও নীতি তুলে ধরছেন। তারা যুক্তরাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট গঠনে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে সক্ষম, যা মূলধারার বাইরে বিকল্প একটি দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করতে পারে।