বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২১, ২০২৪
বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২১, ২০২৪

উপদেষ্টা নাহিদের সম্মাননা স্মারক প্রত্যাখান ‘শিশুসুলভ কাজ’

Avatar photoদীপ্ত নিউজ ডেস্ক

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে প্রধান অতিথি সম্মাননা স্মারক গ্রহণ না করার ঘটনাকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের শিশুসুলভ কাজবলে দাবি করেছেন অভিযোগ ওঠা কলা অনুষদের ডিন ড. শফিকুর রহমান।

শনিবার (১২ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৭টার পরে নিজের ফেসবুক আইডিতে এক পোস্ট করে এই দাবি করেন ড. শফিক।

ফেসবুক পোস্টে ড. শফিক দাবি করে লেখেন, ‘আবু সাঈদ শহীদ হওয়ার পর সর্বপ্রথম কলা অনুষদ শোক প্রস্তাব জানিয়েছিল। আবু সাঈদ শহীদ হওয়ার পর কলা অনুষদের ডিন জানাজায় ছুটে গিয়েছিল। আজ কলা অনুষদের ডিনের দিকে আঙুল তুলে অসম্মান করা হলো। ব্যক্তি আর অনুষদের ডিন দুইটা আলাদা বিষয়। অনুষদের ডিনকে অসম্মান করা মানেই গোটা অনুষদকে অসম্মানিত করা। আজ কলা অনুষদকে মঞ্চে তুলে অসম্মানিত করা হয়েছে। একজন শিক্ষার্থীর বক্তব্য শুনে কোনোরূপ যাচাইবাছাই ছাড়াই উপদেষ্টা নাহিদের সম্মাননা স্মারক প্রত্যাখ্যান করা অত্যন্ত শিশুসুলভ কাজ হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা অনুষদের এই অসম্মানে আমি ভীষণ মর্মাহত।

যেভাবে ঘটনার শুরু

অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম প্রধান অতিথির বক্তব্য দেওয়ার পর মঞ্চের সামনে থাকা পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী রাইসুল ইসলাম এবং গণযোগাযোগ বিভাগের শিক্ষার্থী নাইম তাকে প্রশ্ন করেন।

রাইসুল ইসলাম বলেন, যারা বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে আ.লীগের রাজনীতি করে এবং দোসর রয়েছে, তারা এখনো বলবৎ আছে। আমাদের এই মঞ্চে বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. কমলেশ রায় আছেন তিনি বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি। ওই পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন মশিউর রহমান, যিনি ছাত্রদের বিরুদ্ধে সরাসরি হামলায় নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি আজ মঞ্চে এবং তাকে সম্মাননা স্মারক দেওয়া হলো। মঞ্চে কলা অনুষদের ডিন ড. শফিকুর রহমান স্যার উপস্থিত আছেন। তিনি গত ১৩ আগস্ট কালের কণ্ঠে একটি কলাম লেখেন। সেই কলামে তিনি লিখেছিলেন, আবু সাঈদ নিহত হওয়ার পরও পরিস্থিতি সামলানোর পর্যায়ে ছিল।

আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা জানতে চাই, আবু সাঈদের প্রাণের বিনিময়ে আর কি সামলানোর মতো ছিল, সেটা আমরা জানতে চাই, তার কাছে ব্যাখ্যা চাই। তাকেও স্মারক সম্মাননা দেওয়া হলো। তাহলে আন্দোলন করে যদি আজ দেখতে পাই যে যারা স্বৈরাচারের দোসরগিরি করেছেন, তাদের সম্মামনা স্মারক দেওয়া হচ্ছে, মঞ্চে বসানো হচ্ছে, আমরা এটা মেনে নিতে পারি না।

প্রশ্নের উত্তরে উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা সরকারে থেকেও বিভিন্ন জায়গায় বলেছি। যারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন, তারাও এ কথাটি বলছেন, আমাদের অভ্যুত্থান শেষ হয়ে যায়নি। এই অভ্যুত্থানকে আরও বিপ্লবে নিয়ে যেতে হবে। প্রয়োজনে আরও একটি গণঅভ্যুত্থান করতে হতে পারে। কারণ আমরা মনে করছি, ফ্যাসিস্ট কাঠামো এখনো রয়েছে। আমাদের এক দফা দাবি ছিল সেই ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থার বিলোপ ঘটানো। সেটি যেমন রাষ্ট্রে, সমাজে একইভাবে বিশ্ববিদ্যালয়েও।’

নাহিদ আরও বলেন, ‘এই (রোকেয়া) বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন ভিসি এসেছেন। তার কাছে আমার আবেদন থাকবে যাতে এসব বিষয়কে তিনি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখেন। আপনারা যে অভিযোগ করলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। যেহেতু এই মঞ্চ থেকে যারা ক্যাম্পাসে আ.লীগ ও স্বৈরাচারের দোসর, তাদের স্মারক সম্মাননা দেওয়া হয়েছে। ফলে একই মঞ্চ থেকে আমাকে যে সম্মাননাটি দেওয়া হয়েছে, এটি আমি গ্রহণ করছি না। হয়তো কোনো একদিন ফ্যাসিবাদমুক্ত এই বেরোবিতে আসব। আপনাদের সব দাবি পূরণ করার সক্ষমতা নিয়ে আপনাদের সামনে এসে দাঁড়াব। সেদিনই আমি এই সম্মাননাটি গ্রহণ করব।’

পরে মঞ্চে থাকা অভিযুক্ত কলা অনুষদের ডিন ড. শফিকুর রহমান নিজেই মাইকের সামনে আসেন। তিনি দাবি করে বলেন, ‘আমার কলাম আন্দোলনের বিপক্ষ ছিল না। তবু যেহেতু শিক্ষার্থীরা আমার কলামকে ভালোভাবে নেয়নি, সে কারণে আমি আজকের সম্মাননা স্মারক প্রত্যাহার করে নিলাম।’

এরপর তিনি মঞ্চে বসে থাকা অভিযুক্ত আরেক শিক্ষক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ও বঙ্গবন্ধু পরিষদ সভাপতি ড. কমলেশ রায়ের পাশে গিয়ে বসেন। নাহিদ ইসলাম মঞ্চ ছাড়ার পর তারা মঞ্চ ছাড়েন।

 

সএ

আরও পড়ুন

সম্পাদক: এস এম আকাশ

অনুসরণ করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন

স্বত্ব © ২০২৩ কাজী মিডিয়া লিমিটেড

Designed and Developed by Nusratech Pte Ltd.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More