নানা দুর্নীতিতে বেহাল দশা দেশের ঐতিহ্যবাহী প্রাচীনতম ক্লাব রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটি। নিজের ব্যক্তিগত স্বার্থে ব্যবহার করে, পুরান ঢাকার সম্মান নষ্ট করার অভিযোগ উঠেছে ক্লাবটির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ইমতিয়াজ হামিদ সবুজের নামে।
১৯৩৩ সালে আবুল কাশেমের হাত ধরে প্রতিষ্ঠিত হয় রহমতগঞ্জ ক্লাব। শুরুর দিকে সমাজসেবা প্রতিষ্ঠান হিসাবে পরিচালিত হলেও ধীরে ধীরে এটি খেলাধূলার সঙ্গে জড়িত হয়ে পড়ে। ফলে ক্লাবটি বিভিন্ন ফুটবল টুর্নামেন্টে অংশ নিতে শুরু করে, এলাকার তরুণদের নিয়ে দল গঠন করে।
কিন্তু বর্তমান বাস্তবতার সাথে ইতিহাসের কোনো সম্পর্ক নেই। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে নবমস্থানে থেকে গেলো মৌসুম শেষ করে রহমতগঞ্জ। শেষ সাফল্য বলতে প্রতিষ্ঠার ৮৭ বছরে ইতিহাসে ফেডারেশন কাপের ফাইনাল খেলা। প্রশ্ন আসে কেন, দেশের প্রাচীন এই ক্লাবটির বেহাল দশা।
আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিমের আস্থাভাজন হয়ে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে রহমতগঞ্জ ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন বাফুফে কার্যনির্বাহী কমিটির অন্যতম সদস্য ইমতিয়াজ হামিদ সবুজ। নিজেকের দক্ষ সংগঠক হিসেবে পরিচয় দিয়ে, ক্লাবকে নিজের কুক্ষিগত সম্পত্তি বানিয়ে ফেলেছেন সবুজ।
অর্থনৈতিক সমস্যার কথা বলে দমিয়ে রাখা ক্লাবটির বড় আর্থিক আয়টা আসে কোরবানি গরুর হাট থেকে। সোয়ারীঘাটের পাশে রহমতগঞ্জ ক্লাবের মাঠটিতে শতবর্ষ থেকেই গরু বেচাকেনা হয়ে আসছে। হাতঘুরে সেই হাটই ১৯৬৭ সাল থেকে পরিচালনা করে আসছে রহমতগঞ্জ ক্লাব। প্রতি কোরবানিতে প্রায় ১৫ কোটি ইজারা উঠলেও সেই অর্থ ক্লাবের প্রয়োজনের ব্যবহার করা হয়নি এমন অভিযোগ রয়েছে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ইমতিয়াজ হামিদ সবুজের নামেও।
ছাত্র–জনতার গণঅভ্যুত্থান দ্বিতীয়বার স্বাধীন হয়েছে বাংলাদেশ। এখন সময় পরিবর্তনের। দেশের ঐতিহ্যবাহী ক্লাবকে বাঁচাতে প্রয়োজন সঠিক পরিকল্পনা ও ক্লাববান্ধব কমিটি।
নতুন নেতৃত্বে, মাঠের খেলায় প্রাণ ফিরে পাবে দেশের প্রাচীন ক্লাব রহমতগঞ্জ এমএফসি, এমনটাই প্রত্যাশা ক্লাব ভক্তদের।
মোহাম্মদ হাসিব/এজে/দীপ্ত সংবাদ