বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা সর্বাত্মক অসহযোগ কর্মসূচি ঘিরে রবিবার (৩ আগস্ট) দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক সংঘর্ষে ৯৯ জন নিহত হয়েছেন। এ পরিস্থিতিতে সরকার পতনের এক দফা আদায়ের লক্ষ্যে সোমবার (৫ আগস্ট) ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া সংগঠনটি।
গতকাল বেলা ৩টায় রাজধানীর শাহবাগে এক সমাবেশ থেকে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম। প্রথমে আগামীকাল মঙ্গলবার ‘মার্চ টু ঢাকা’ পালনের ঘোষণা দিলেও সরকার কারফিউ জারির পর এক বিজ্ঞপ্তিতে কর্মসূচি একদিন এগিয়ে আনা হয়েছে বলে জানান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ।
এর আগে গতকাল দুপুরে আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীদের ধাওয়া দিয়ে শাহবাগে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা। এরপর বিভিন্ন দিক থেকে একের পর এক মিছিল শাহবাগে জড়ো হতে শুরু করে। পরে বিকেলে শাহবাগে ছাত্র–জনতার সমাবেশে নাহিদ ইসলাম কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
এ সময় নাহিদ বলেন, ‘যাঁরা ঢাকার বাইরে রয়েছেন সব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী–শিক্ষক, ছাত্র–জনতা, শ্রমিক, পেশাজীবী দলে দলে আপনারা ঢাকামুখী লং মার্চ করবেন। আমরা শাহবাগে সমাবেশ করব।’ প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমরা এখনো সময় দিচ্ছি। সরকার যদি এখনো সহিংসতা চালিয়ে যায়, আমরা কিন্তু গণভবনের দিকে তাকিয়ে আছি। আপনাকে ঠিক করতে হবে শেখ হাসিনা, আপনি কী এখনো সহিংসতা চালাবেন, রক্তপাত চালাবেন? নাকি ছাত্রদের দফা অনুযায়ী পদত্যাগ করবেন?’
প্রতিটি পাড়া–মহল্লায় সংগ্রাম কমিটি গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আর যদি আমার ভাইদের বুকি গুলি করা হয়, আমার বোনদের কেউ আহত হয়, আমরা বসে থাকব না। পাড়ায় পাড়ায়, গ্রামে গ্রামে, মহল্লায় মহল্লায়, অলিগলিতে প্রতিরোধ সংগ্রাম কমিটি গঠন করুন। আমরা এই সরকারকে মানি না। এখন থেকে দেশের নেতৃত্ব দেবে ছাত্র–জনতা। ছাত্র–জনতার ঘোষণা চূড়ান্ত ঘোষণা।’
আওয়ামী লীগ দেশে গৃহযুদ্ধ সৃষ্টি করেছে অভিযোগ করে নাহিদ বলেন, ‘আজকে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা সরাসরি মাঠে নেমেছে। দেশটা একটা গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতিতে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। ছাত্র–জনতা যেকোনো মুহূর্তের জন্য প্রস্তুত। আজকে লাঠি তুলে নিয়েছি। যদি লাঠিতে কাজ না হয় আমরা অস্ত্র তুলে নিতে প্রস্তুত। প্রতিরোধ করুন, রুখে দাঁড়ান, সন্ত্রাসীদেরকে বাংলাদেশ ছাড়া করতে হবে।’
‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি ছাড়াও আজ সোমবার ঢাকায় বেলা ১১টায় শাহবাগে ছাত্র–জনতার পাশাপাশি শ্রমিক সমাবেশ এবং বিকেল ৫টায় শহীদ মিনারে নারী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে বলেও জানানো হয়েছে।