নওগাঁর রাণীনগরে বীরমুক্তিযোদ্ধা মো. হোসেন আলীর বসবাস ঝুঁকিপূর্ণ একটি মাটির ঘরে। দীর্ঘদিন সংস্কার না করার কারণে কখন যে মাটির বাড়ি ভেঙ্গে পড়বে তার কোন নিশ্চয়তা নেই।
এমন ঝুঁকিপূর্ণ মাটির ঘরে বছরের পর বছর পরিবার নিয়ে দিনানিপাত করলেও নানা জটিলতার কারণে বরাদ্দ হওয়া প্রধানমন্ত্রীর উপহারের সরকারি ঘর হোসেন আলীর ভাগ্যে জুটছে না।
উপজেলার খট্টেশ্বর রাণীনগর গ্রামের হোসেন আলী বলেন, ‘বৃদ্ধ স্ত্রীসহ তিন ছেলে ও তাদের পরিবার নিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ মাটির ঘরে কোন মতে বসবাস করে আসছেন। বয়সের ভারে তেমন আর ভারী কোনো কাজ করা সম্ভব হয়ে ওঠে না তাই ভাতার টাকার উপরই পুরোপুরি নির্ভরশীল। তিন ছেলেও কোনো মতে বিভিন্ন কাজ করে কম আয়ের মধ্যদিয়ে পরিবার–পরিজন নিয়ে জীবন–যাপন করে। সরকারের কাছ থেকে পাওয়া মুক্তিযোদ্ধা ভাতা দিয়ে নিজেসহ ছেলেদের পরিবার নিয়ে কোন মতে দিন যাপন করছি। এমতাবস্থায় জায়গা থাকলেও নতুন করে ইটের পাকা বাড়ি নির্মাণ করা আমার পক্ষে অসম্ভব বিষয়।’
‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে ২য় পর্যায়ে অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আবাসন নির্মাণের প্রকল্পের আওতায় গত ২০২১–২২ অর্থবছরে একটি বাড়ির বরাদ্দ পাই। এমন উপহারের তালিকায় নিজের নাম দেখে খুবই খুশি হয়েছিলাম যে শেষ জীবনে এসে স্ত্রী ও পরিবার–পরিজনকে নিয়ে একটি পাকা বাড়িতে কিছুদিন থাকতে পারবো। পরবর্তিতে সংশ্লিষ্ট অফিসে যোগাযোগ করলে বাড়ি নির্মাণের কাজ আজ শুরু হবে কাল শুরু হবে এমন আশ্বাস শুনতে শুনতে প্রায় দুই বছর পার হতে চলেছে কিন্তু আজও বাড়ি নির্মাণের সূচনা হলো না। জানি না জীবনের শেষ সময়ে এসে শেখের বেটি হাসিনার দেয়া উপহারের পাকা ঘরে থাকার সুযোগ পাবো কি না। এদিকে দীর্ঘদিনের পুরাতন হওয়া মাটির বাড়িটি সংস্কার না করার কারণে এতোটাই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে যে কখন যেন ভেঙ্গে পড়বে। তাই দ্রুত একটি থাকার ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করছি।’
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মেহেদী হাসান বলেন ২য় পর্যায়ের অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের বরাদ্দ হওয়া আবাসন প্রকল্প বাতিল হওয়ার কারণে পরবর্তিতে বাড়ি নির্মাণের সকল কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। সম্প্রতি আবার সেই প্রকল্পের সকল কার্যক্রম নতুন করে শুরু করা হয়েছে। দ্রুতই দরপত্রের মাধ্যমে বরাদ্দকৃত সকল বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু করা হবে। বাড়ি নির্মাণের পর মুক্তিযোদ্ধা হোসেন আলীকে আর ঝুঁকিপূর্ণ মাটির ঘরে বসবাস করতে হবে না।
রিপন / আল/ দীপ্ত সংবাদ