শুক্রবার, ১৮ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২রা কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৫ই রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
শুক্রবার, ১৮ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২রা কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৫ই রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

সাপে কাটলে যা করবেন, যা করবেন না

দীপ্ত নিউজ ডেস্ক
16 minutes read

বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে সর্পদংশন প্রায়ই ঘটে। তবে সাপে কাটলেই আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। আমাদের দেশে বিষধর সাপের চেয়ে বিষহীন সাপের সংখ্যাই বেশি। সাধারণত কিং কোবরা, গোখরা, চন্দ্রবোড়া, শঙ্খচূড়, গ্রিন পিট ভাইপার, রাসেল ভাইপার ইত্যাদি বিষধর সাপ দেখা যায়।

সাপ কামড়ালেই মানুষ এক রকম আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। ফলে চিকিৎসা ব্যাহত হয়। ভুক্তভোগীদের একটি বড় অংশই আবার চিকিৎসক বা হাসপাতালের শরণ না নিয়ে ওঝা বা সাপুড়েদের শরণাপন্ন হন। ফলে নিষ্কৃতি তো দূর, সংকট বাড়ে।

এ জন্য জানা প্রয়োজন যে, সাপ কামড়ালে আসলে কী করা উচিত। আর কী করা উচিত নয়।

 

সাপের কামড়ের লক্ষণ

বিষহীন সাপের কামড়ের সাধারণ লক্ষণ হল কামড়ের স্থানে ব্যথা, আঘাত এবং আঁচড়। তবে বিষাক্ত সাপের কামড়ের পরে, সাধারণত কামড়ের স্থানটিতে গুরুতর ব্যথা থাকে। এ ছাড়া কামড়ের চারপাশে লালভাব, ফোলাভাব, ক্ষত, রক্তপাত বা ফোসকা হয়ে যেতে পারে। অন্যান্য উপসর্গগুলি হল বমি বমি ভাব, শ্বাসকষ্ট, দুর্বলতা, মুখে একটি অদ্ভুত স্বাদ, কামড়ের স্থানে জ্বালাপোড়া করে, খিঁচুনি।

এ ছাড়া, মুখে লালা, শরীরে ঘাম, দ্রুত হৃদস্পন্দন, দুর্বল নাড়ি, নিম্ন রক্তচাপ, মুখ অথবা অঙ্গপ্রত্যঙ্গের চারপাশে অসাড়তা এগুলোও বিষাক্ত সাপের কামড়ের লক্ষণ। কিছু সাপে আবার এমন কিছু বিষাক্ত পদার্থ থাকে যা মস্তিষ্ক এবং স্নায়ুকে প্রভাবিত করে।

 

সাপে কাটলে করণীয়: সাপ কামড়ালে সবার প্রথমে যেসব পদক্ষেপ নেয়া উচিত তা নিচে দেয়া হল,

. প্রথমেই সাপটিকে ধরা বা ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করবেন না। এতে করে বার বার কামড় খাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হবে।

. কামড়ের স্থান কাটাকাটি বা বিষ অপসারণের চেষ্টা করবেন না।

. কামড়ের স্থান সাবান ও পরিস্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

. একটি পরিষ্কার, শুকনো কাপড় দিয়ে কামড়ের স্থান ঢেকে রাখুন।

. রক্ত প্রবাহ বন্ধ করার জন্য কামড়ের স্থানে শক্ত করে ব্যান্ডেজ বাধবেন না।

. ক্যাফেইন বা অ্যালকোহল পান করবেন না।

. ব্যথানাশক ওষুধ গ্রহণ করবেন না, যেমন অ্যাসপিরিন, আইবুপ্রোফেন (অ্যাডভিল, মট্রিন আইবি, অন্যান্য) বা নেপ্রোক্সেন সোডিয়াম (আলেভ)। এগুলো খেলে রক্তপাতের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

. কামড়ের স্থান ফুলে গেলে সমস্ত আংটি, ঘড়ি খুলে ফেলুন এবং টাইট পোশাক পরা থাকলে তা খুলে আরামদায়ক পোশাক পরিধান করুন।

. সম্ভব হলে নিরাপদ দূরত্ব থেকে সাপের ছবি নিয়ে রাখুন। সাপ শনাক্ত করা গেলে সাপের কামড়ের চিকিৎসায় সাহায্য হয়।

১০. বিষাক্ত সাপের কামড় হলে যতদ্রুত সম্ভব নিকটস্থ চিকিৎসাকেন্দ্রে যাওয়া উচিত। কারণ যত তাড়াতাড়ি অ্যান্টিভেনম শুরু করা যায়, তত তাড়াতাড়ি বিষ থেকে অপরিবর্তনীয় ক্ষতি বন্ধ করা যায়।

১১. বিশ্রাম নিশ্চিত করুন এবং শান্ত থাকুন। রোগীর যাতে আক্রান্ত অঙ্গ নড়াচড়া না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

১২. প্রথাগত প্রাথমিক চিকিৎসা পদ্ধতি, ভেষজ ওষুধ এবং অন্যান্য অপ্রমাণিত বা অনিরাপদ প্রাথমিক চিকিৎসা এড়িয়ে চলুন।

১৩. মুখ দিয়ে চুষে বিশ বের করার চেষ্টা করবেন না।

 

সাপের কামড় প্রতিরোধ: সাপে কামড়ানোর সম্ভাবনা এড়াতে সাপের বসতি এলাকা এড়িয়ে চলাই শ্রেয়। তারপরও অনেক সময় সেটা সম্ভব না হলে সাপের কামড় এড়াতে যেসব পদক্ষেপ নিতে পারেন।

. সাপ থাকতে পারে এমন জায়গাগুলি এড়িয়ে চলুন। যদি আপনি সাপ দেখতে পান, ধীরে ধীরে এটি থেকে দূরে সরে যান এবং এটি কাছে যাবেন না। সাপকে একা ছেড়ে দিন।

. লম্বা ঘাস জাতীয় এলাকায় গেলে মোটা চামড়ার বুট পরা উচিত যাতে করে সাপের কামড় শরীরে না লাগে।

. রাতে বাইরে হাঁটার সময় সাথে একটি টর্চলাইট জ্বালিয়ে রাখুন।

. বাড়িতে বিষধর সাপ দেখতে পেলে দ্রুত প্রাণী নিয়ন্ত্রণ সংস্থাকে ফোন করুন।

 

সূত্র: ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন।

 

এসএ/দীপ্ত সংবাদ

আরও পড়ুন

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More

সম্পাদক: এস এম আকাশ

স্বত্ব © ২০২৩ কাজী মিডিয়া লিমিটেড

Designed and Developed by Nusratech Pte Ltd.