অবশেষে মেসির হাতেই উঠলো স্বপ্নের বিশ্বকাপ। অবসান হলো ৩৬ বছরের অপেক্ষার। টাইব্রেকারে ফ্রান্সকে ৪-২ গোলে হারিয়েছে আর্জেন্টিনা। এরআগে নির্ধারিত ৯০ মিনিটর পর খেলা ২-২ এবং অতিরিক্ত সময়ের পর ৩-৩ সমতায় ছিলো।
সোনার হাতে সোনার ট্রফি, কে কার অলঙ্কার….? আসলেই, বিশ্বসেরার সোনার ট্রফি জিতে মেসি নিজের ক্যারিয়ারকে পূর্ণতা দিলেন, নাকি ওই ৬ কেজির ট্রফিটি মেসির হাতের ছোঁয়ায় ধন্য হলো, বলা মুশফিল।
১২০ মিনিটের টানটান উত্তেজনা এবং এরপর টাইব্রেকার। হাসির চেয়ে কান্নার বাঁধটাই যেনো বেশি ভাঙলো আর্জেন্টাইনদের। কারণ, এই ট্রফিটি তো কেবল মেসি-ডি মারিয়ারা জেতেননি, জিতেছেন, গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতা থেকে শুরু কোরে কার্লোস তেভেজ হয়ে সার্জিও অ্যাগুয়েরো পর্যন্ত আর্জেন্টিনার কয়েকটি প্রজন্ম। একের পর এক আসরে শিরোপাপ্রত্যাশী দল নিয়ে এসেও, শূণ্য হাতে ফেরার যে জ্বালা, তা আর্জেন্টিনার চেয়ে আর বেশি কে জানে?
অথচ লুসাইল স্টেডিয়ামে, ফাইনাল ম্যাচের শুরুতে বোঝাই যায়নি, আলবি সেলেস্তেদের ম্যাচটা জিততে এত কষ্ট পোহাতে হবে। কারণ প্রথমার্ধে, তাদের দাপটের সামনে পাত্তাই পায়নি আগের আসরের চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স। ২৩ মিনিটে পেনাল্টি পেয়ে মেসির গোলের পর ৩৬ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ডি মারিয়া।
অবশ্য দ্বিতীয়ার্ধে পাল্টে যায় চিত্র। একজন কিলিয়েন এমবাপ্পে একাই টেনে নিয়ে যান ফরাসী বিপ্লবের স্বপ্ন। তবে গোলের দেখাটাই কেবল মিলছিলো না। অবশেষে ম্যাচের ৮০ মিনিটে পেনাল্টি পেয়ে ব্যবধান কমানোর পরের মিনিটেই ম্যাচে সমতা ফেরান এমবাপ্পে। দুই মিনিটের ম্যাজিকে নির্ধারিত সময়ের পর খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।
সেখানেও চলে নাটক। মেসি যে নিয়তি থেকে লিখিয়ে এনেছিলেন, আর্জেন্টিনাকে শিরোপা জেতাবেন তিনি; তা তো পূর্ণতা পেতে হবে! ১০৮ মিনিটে তাই চরম নাটকীয় গোলটি আসে তারই পা থেকে। শিরোপা থেকে হাত ছোঁয়া দূরত্বে থাকতে হ্যান্ডবলের কারণে পেনাল্টি পায় ফ্রান্স। ১৯৬৬ বিশ্বকাপের পর ফাইনালে প্রথম হ্যাটট্রিকের নজির গড়ে ম্যাচ টাইব্রেকারে নেন কিলিয়েন এমবাপ্পে।
বড় ম্যাচের চাপ নেয়ার অনভ্যস্ততাতেই হয়তো শুয়ামেনি শট নেন পোস্টের বাইরে। তবে তারও আগে, কিংসলে কোমানের শট রুখে দিয়ে নায়কের আসনে ভাগ বসান এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। ২০০২ বিশ্বকাপের পর ইউরোপ রাজত্ব ভেঙে আবারো বিশ্বকাপ যায় লাতিন আমেরিকায়।