শ্রীলংকার বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের প্রথম সেশনে দু’টি ক্যাচ ও একটি রান আউটের সহজ সুযোগ হাতছাড়া করেছেন স্বাগতিক বাংলাদেশের ফিল্ডাররা। এই সুযোগে তিন ব্যাটারের হাফ–সেঞ্চুরিতে টেস্টের প্রথম দিন নিজেদের করে রাখলো সফরকারী শ্রীলংকা। দিন শেষে ৯০ ওভারে ৪ উইকেটে ৩১৪ রান করেছে লংকানরা।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৯৩ রান করেন কুশল মেন্ডিস। বাংলাদেশের পক্ষে ২ উইকেট নেন অভিষেক টেস্ট খেলতে নামা পেসার হাসান মাহমুদ।
শনিবার (৩০ মার্চ) চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে সিরিজ হার এড়ানো মিশনে প্রথম ম্যাচের একাদশ থেকে দুই পরিবর্তন নিয়ে খেলতে নামে বাংলাদেশ।
দুই পেসার শরিফুল ইসলাম ও নাহিদ রানার জায়গায় একাদশে সুযোগ পান সাকিব আল হাসান ও হাসান। এক বছর পর সাকিব বড় ফরম্যাটে খেলতে নামলেও, অভিষেক টেস্টের শুরুটা স্মরনীয় করে রাখার দারুন সুযোগ পেয়েছিলেন হাসান।
শ্রীলংকান ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে ব্যক্তিগত ৯ রানে ওপেনার নিশান মাদুশকাকে শিকার করতে পারতেন হাসান। কিন্তু স্লিপে মাদুশকার ক্যাচ ফেলেন মাহমুদুল হাসান জয়। এরপর ১৬তম শ্রীলংকার উদ্বোধনী জুটি ভাঙ্গার সুর্বন সুযোগ পেয়েছিলো বাংলাদেশ। কিন্তু সরাসরি থ্রোতে মেহেদি হাসান মিরাজ স্টাম্প ভাঙ্গতে না পারলে, ১৮ রানে জীবন পান শ্রীলংকার আরেক ওপেনার দিমুথ করুনারতে।
২২তম ওভারে আবারও উইকেট বঞ্চিত হন হাসান। ঐ ওভারের শেষ বলে হাসানের বাউন্সারে হুক করেন করুনারত্নে। বড় উড়ে যায় ফাইন লেগে থাকা সাকিব আল হাসানের দিকে। কিন্তু সীমানা থেকে একটু এগিয়ে থাকায় ঠিকঠাক বলের লাইনে যেতে পারেননি সাকিব। বল তার হাত ফসকে ছক্কায় পরিণত হয়।
জীবন পেয়ে প্রথম সেশনেই টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় হাফ–সেঞ্চুরি তুলে নেন মাদুশকা। দ্বিতীয় সেশনের দ্বিতীয় ওভারেই হাসানের দারুন ফিল্ডিংয়ে রান আউটের ফাঁদে পড়েন মাদুশকা। ৬টি চারে ১০৫ বলে ৫৭ রান করেন তিনি।
দলীয় ৯৬ রানে শ্রীলংকার উদ্বোধনী জুটি পতনের পর বাংলাদেশ বোলারদের সামনে প্রতিরোধ গড়ে তুলেন করুনারত্নে ও তিন নম্বরে নামা কুশল মেন্ডিস। এই জুটিতে করুনারত্র্নে ৩৭ এবং কুশলের ১৮তম হাফ–সেঞ্চুরিতে ২শ রানে পৌঁছে যায় শ্রীলংকা।
দলীয় ২১০ রানে করুনারত্নেকে বোল্ড করে অভিষেক টেস্টে প্রথম উইকেটের দেখা পান হাসান। ৮টি চার ও ১টি ছক্কায় ১২৯ বলে ৮৬ রান করেন করুনারত্নে। হাসানের শিকার হয়ে বিচ্ছিন্ন হওয়ার আগে কুশল–করুনারত্নে জুটিতে ১১৪ রান যোগ করেন।
করুনারত্নের ফেরার পর অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ নিয়ে দলের রানের চাকা সচল রাখেন কুশল। নিজেও সেঞ্চুরির পথে হাঁটতে থাকেন তিনি। কিন্তু সাকিবের করা ১১তম ওভারে স্লিপে মিরাজকে ক্যাচ দিয়ে নাভার্স–নাইন্টিতে বিদায় নেন ১১টি চার ও ১টি ছক্কায় ১৫০ বলে ৯৩ রান করা কুশল। ম্যাথুজকে নিয়ে দলকে ৫৩ রান এনে দিয়েছিলেন তিনি।
কুশল ফেরার পর দিনেশ চান্ডিমালকে নিয়ে জুটি গড়ার পথে ছিলেন ম্যাথুজ। এ অবস্থায় ৮০ ওভার শেষেই নতুন বল নিয়ে প্রথম ওভারেই সাফল্য পেয়ে যায় বাংলাদেশ। হাসানের করা ঐ ওভারের শেষ বলে স্লিপে মিরাজকে ক্যাচ দেন ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ২৩ রান করা ম্যাথুজ।
এরপর দিনের শেষ ৫৪ বলে ২৫ রান তুলে অবিচ্ছিন্ন থেকে মাঠ ছাড়েন চান্ডিমাল ও অধিনায়ক ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা। ২টি করে চার–ছক্কায় চান্ডিমাল ৩৪ ও ২টি বাউন্ডারিতে ধনাঞ্জয়া ১৫ রানে অপরাজিত আছেন। বাংলাদেশের হাসান ৬৪ রানে ২টি ও সাকিব ৬০ রানে ১ উইকেট নেন।
আল / দীপ্ত সংবাদ