শুক্রবার, নভেম্বর ২২, ২০২৪
শুক্রবার, নভেম্বর ২২, ২০২৪

নারীবান্ধব টয়লেট সুবিধা পান না ৯৩ শতাংশ নারী

Avatar photoদীপ্ত নিউজ ডেস্ক

বাংলাদেশে নারীবান্ধব টয়লেট সুবিধা পান না ৯৩ শতাংশ নারী।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ওয়াটার এইড বাংলাদেশের মনিটরিং, ইভালুয়েশন, রিসার্চ ও লার্নিং ম্যানেজার মো. মাহাদী হাসান।

এর আগে সুইডেনের দূতাবাসের আর্থিক সহযোগিতায় ওয়াটার এইড বাংলাদেশের প্রকল্প ওয়াশ ফর আরবান পুওর প্রকল্পের আওতায় চারটি সিটি করপোরেশন ও তিনটি পৌরসভায় নিম্ন আয়ের সম্প্রদায়ের ৫৫০টি পরিবারের ওপর সমীক্ষার তথ্য তুলে ধরা হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ওয়াটার এইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান, সুইডেন দূতাবাসের জলবায়ু ও পরিবেশবিষয়ক ন্যাশনাল প্রোগ্রাম অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান।

ওয়াটার এইড জানায়, গবেষণাটি ৫৫০টি পরিবারকে নিয়ে পরিচালিত হয়েছে, যেখানে ৩৩০ জন নারী ও ২২০ জন পুরুষ ছিলেন। ৫০০ জন উত্তরদাতার মধ্যে ১০ দশমিক ৪ শতাংশ জানান, তাদের পরিবারে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি আছেন। প্রায় ২০ দশমিক ৫৫ শতাংশ অংশগ্রহণকারী প্রান্তিক অবস্থায় আছেন বলে মনে করা হয়।

সমীক্ষার তথ্য বলছে, প্রান্তিক অবস্থায় আছেন, এমন ব্যক্তিদের মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক (৬১ দশমিক ৯ শতাংশ) মনে করেন, তারা জেন্ডার ভিত্তিতে অবমূল্যায়ন বা বৈষম্যের শিকার। এ ছাড়া ৪১ দশমিক ৬ শতাংশ নানা অর্থনৈতিক কারণ উল্লেখ করেন, যেমন অর্থনৈতিক অসমতা, দারিদ্র্য বা উপার্জনের সীমিত সুযোগ।

সমীক্ষা প্রতিবেদন নিয়ে মাহাদী হাসান বলেন, এই মূল্যায়নে বিভিন্ন বিষয়বস্তুর অর্থাৎ জেন্ডারভিত্তিক ওয়াশব্যবস্থা, অসমতা, বৈষম্য, সামাজিক নীতি, জেন্ডার অসমতা, নারীর ক্ষমতায়ন, জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা, সচেতনতা ইত্যাদি বিষয় পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে।

গবেষণায় পাওয়া উপাত্তে দেখা গেছে, গতানুগতিক জেন্ডার ভূমিকার কারণে নারীদের ওপর পরিবারের কাজ ও পানি সংগ্রহ করার দায়িত্ব চলে আসে; ৮৭ শতাংশ উত্তরদাতা মনে করেন, গৃহস্থালির কাজ ও পানি সংগ্রহ করা নারীদের কর্তব্য। মাসিককেন্দ্রিক ট্যাবুর কারণে তারা মাসিক বিষয়ে পরিবারে আলোচনাও করতে পারেন না।

প্রায় ৯৬ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন, তাদের পরিবারের পুরুষ সদস্যদের সঙ্গে তারা মাসিক বিষয়ে আলাপ করেন না।

গবেষণায় আরও দেখা গেছে, জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা একটি গুরুতর সমস্যা। যেহেতু ৯ শতাংশ নারী উত্তরদাতা বলেন, তারা বিভিন্ন ধরনের সহিংসতার শিকার হয়েছেন; তাদের মধ্যে ৬৬ শতাংশ মৌখিক সহিংসতা ও ১৪ শতাংশ পানি সংগ্রহের সময় শারীরিক সহিংসতার শিকার। এটা পরিষ্কার যে পুরুষরা প্রধানত পানির উৎস নিয়ন্ত্রণ করেন এবং তারাই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাও রাখেন।

গবেষণায় জানা যায়, পরিবার ও সমাজ উভয় ক্ষেত্রেই সাস্থ্যবিধি সম্পর্কিত উপাদানগুলোয় নারীদের অভিগম্যতা সীমিত (৪০ শতাংশ)। এ ছাড়া ওয়াশ সংক্রান্ত বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের এবং অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে নারী, কিশোরী ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অংশগ্রহণ সম্পর্কে সার্বিক সচেতনতারও অভাব আছে।

মাহাদী হাসান জানান, সামগ্রিক ফলাফলের বিবেচনায় এবং অ্যাম্বাসি অব সুইডেনের নারীবাদী সিদ্ধান্ত নীতি ও জেন্ডার ট্রান্সফরমেটিভ অ্যাপ্রোচ মাথায় রেখে এ মূল্যায়ন সংকটগুলো চিহ্নিত করেছে। এখানে মূল সংকট হচ্ছে যে নারীদের পরিবর্তনের অনুঘটক হিসেবে দেখা হয় না বরং তাদের অবস্থান দুর্বল মনে করা হয়। জেন্ডারভিত্তিক পক্ষপাতের কারণে নারীরা জীবিকা উপার্জনে সময় ব্যয় করতে পারেন না। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় উভয় পর্যায়েই জেন্ডারভিত্তিক বাজেটিংয়ের অভাব রয়েছে।

ওয়াটার এইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান বলেন, নারীদের উন্নতি ও জেন্ডার সমতা নিশ্চিত করার জন্য আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি এবং সামাজিক মূল্যবোধ পরিবর্তন হওয়া বাঞ্ছনীয়। আমাদের পরিবার, সমাজ ও প্রতিষ্ঠানে অর্থাৎ সব স্তরে এবং সব পর্যায়ে নারীদের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা ও স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে।

সুইডেন দূতাবাসের ন্যাশনাল প্রোগ্রাম অফিসার (জলবায়ু ও পরিবেশ) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সমাধান আমাদের হাতের মুঠোয়। আমাদের শুধু সমর্থন করতে হবে এমন একটি ন্যায্য ও সমতার, সমাজে যেখানে সব লিঙ্গের মানুষ সমান সেবা ও অধিকার পাবে।

আরও পড়ুন

সম্পাদক: এস এম আকাশ

অনুসরণ করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন

স্বত্ব © ২০২৩ কাজী মিডিয়া লিমিটেড

Designed and Developed by Nusratech Pte Ltd.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More