এখনো মর্গে বেইলি রোডের ভবনে অগ্নিকাণ্ডে নিহত সংবাদকর্মী অভিশ্রুতি শাস্ত্রীর মরদেহ। পরিচয় নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা।
রাজধানীর বেইলি রোডে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় নিহত সাংবাদিক অভিশ্রুতি শাস্ত্রীর পরিচয় মিলেছে। তার নাম বৃষ্টি খাতুন বলে জানা গেছে।
অভিশ্রুতির গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায়। সে বেতবাড়ীয়া ইউনিয়নের বনগ্রাম পশ্চিমপাড়ার বাসিন্দা শাবলুল আলম সবুজ ওরফে সবুজ শেখের মেয়ে। বৃষ্টি ২০১৫ সালে বনগ্রাম মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করে এবং কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। ২০১৮ সালে বৃষ্টি চলে যান ঢাকায়। পরে ইডেন মহিলা কলেজ থেকে দর্শন বিভাগে অনার্স পাস করেন।
স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার জানান, শাবলুল আলম সবুজ এর তিন মেয়ের মধ্যে বৃষ্টি সবার বড়। তার মেজো বোন ঝর্না ও ছোট বোন বর্ষা। তার মা বিউটি বেগম। পরিবারে সবাই ইসলাম ধর্মের অনুসারী।
বৃষ্টির পরিবার সূত্রে জানাযায়, ‘অভিশ্রুতি বৃষ্টি’ নামে ফেসবুক একটি আইডি চালাতেন বৃষ্টি। এ ছাড়া কখনো অন্য ধর্ম গ্রহণের বিষয় কিছুই জানেনা তারা। বৃষ্টি গত ঈদেও বাড়ি এসে সবার সঙ্গে ঈদের আনন্দ করেছেন।
এদিকে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক বিপ্লব দের দাবি, নিহত ওই তরুণীর নাম অভিশ্রুতি শাস্ত্রী। সনাতন ধর্মের অনুসারী তিনি। পূজার্চনায় নিয়মিত অংশ নিতেন রমনা কালী মন্দির ও ঢাকেশ্বরীতে।
আরও পড়ুন: পরিচয় মিলেছে সাংবাদিক অভিশ্রুতি শাস্ত্রীর
এছাড়া অভিশ্রুতির সহকর্মীরা দাবি, তিনি দ্যা রিপোর্ট অনলাইন পোর্টালের ইলেকশন কমিশন বিটের রিপোর্টার ছিলেন। এই নামেই সবাই চেনেন তাকে। অন্য একটি অফিসে যেই সিভি পাঠিয়েছিলেন সেখানেও তার নাম, অভিশ্রুতি শাস্ত্রী। তার সনাতন ধর্মাবলম্বী বাবা–মাকে খুঁজে বের করে তাদের হাতে লাশ বুঝিয়ে দেওয়ার দাবি তাদের।
তবে এ অবস্থায় অভিশ্রুতির লাশ পাবে কে, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে নানান প্রশ্ন।
এ নিয়ে পুলিশ বলছে, ডিএনএ পরীক্ষা ও আদালতের নির্দেশ ছাড়া সাংবাদিক অভিশ্রুতি শাস্ত্রী বা বৃষ্টি খাতুনের লাশ হস্তান্তর করা হবে না।
এসআই হাবিবুর রহমান বলেন, মর্গে তার ময়নাতদন্ত ও ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
অভিশ্রুতি শাস্ত্রী বা বৃষ্টি খাতুনের আত্মীয় হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের বলেন, নিহত অভিশ্রুতি তার ফুফাতো বোনের মেয়ে। শুক্রবার (১ মার্চ) রাত পর্যন্ত কথা ছিল— বৃষ্টি খাতুনের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। পরে পুলিশ তাদের জানায়, ডিএনএ পরীক্ষা ছাড়া লাশ হস্তান্তর করা হবে না। বৃষ্টির বাবা সবুজ শেখ লাশ নেওয়ার জন্য শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে বসে আছেন। এই ইনস্টিটিউটের মর্গেই রাখা হয়েছে বৃষ্টির লাশ। তিনি বলেন, ডিএনএ পরীক্ষা হলে হবে। এতে তাদের কোনও আপত্তি নেই।
আল / দীপ্ত সংবাদ