বগুড়ার ধুনট উপজেলায় মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন বাবা হারা যমজ তিন ভাই।
একসঙ্গে জন্ম, একসঙ্গে বেড়ে ওঠা। প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে পড়েছেন একই প্রতিষ্ঠানে। সবক্ষেত্রে তিনজনের ফলাফলও একই। যমজ তিন ভাই এবার চান্সও পেয়েছেন চিকিৎসাশাস্ত্রে অধ্যায়নের। তবে আলাদা প্রতিষ্ঠানে। এ গল্প যেন সিনেমার গল্পকেও হার মানায়।
যমজ তিন ভাই হলেন– মফিউল হাসান, মফিউল হাসান ও রাফিউল হাসান। তারা ধুনট নবির উদ্দিন পাইলট উচ্চবিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও পরে বগুড়া সরকারি কলেজ শাহ সুলতান থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করেন।
মফিউল হাসান ২০২৩ সালে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে চান্স পেয়ে সেখানে পড়াশোনা করছেন। আর সম্প্রতি প্রকাশিত মেডিকেল পরিক্ষার ফলাফলে শাফিউল ইসলাম দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ ও রাফিউল হাসান নোয়াখালী আব্দুল মালেক মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য মনোনীত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাসের হার ৪৭.৮৩ শতাংশ
বগুড়ার ধুনট উপজেলার বথুয়াবাড়ি গ্রামের মৃত স্কুলশিক্ষক গোলাম মোস্তফার ছেলে তারা। মাত্র ছয় বছর বয়সে বাবা হারান অদম্য এ তিন মেধাবী।
মাফিউল হাসান জানান, তিন জমজ ভাই বগুড়ায় মেসে একই সঙ্গে থেকে সরকারি শাহ সুলতান কলেজে পড়েছি। মা কষ্ট করে এবং জমি বিক্রি করে পড়ালেখা খরচ যোগান দিয়েছেন। কখনোই আমাদের কষ্ট দেননি।
শাফিউল হাসান জানান, আজ বাবা থাকলে কত খুশী হতেন। বাবাকে হারিয়েছি শিশুকালে। এখন মাই বাবার অভাব পূরণ করছেন। মানুষের সেবা করার জন্য চিকিৎসক হতে পারি, এই দোয়া চাই সবার কাছে।
রাফিউল হাসান জানান, অসুস্থ্য অবস্থায় বাবা মারা যায়। যখন বুঝতে পারলাম বাবার সেই কথা তখন থেকেই তিন ভাই প্রতিজ্ঞা করি ডাক্তারি পড়ব এবং মানবতার কাছে গরীব মানুষের চিকিৎসা সেবায় নিজেদের নিয়োজিত হবো।
রত্নগর্ভা মা আর্জিনা বেগম বলেন, মাত্র পাঁচ বছর বয়সে তার সন্তানরা এতিম হয়। তারা বাবার স্নেহ ও ভালোবাসা পায়নি। আমার স্বামীর রেখে যাওয়া ও বাপের বাড়ির থেকে পাওয়া সম্পত্তি বিক্রি করে তাদের লেখাপড়ার খরচ জুগিয়েছি।
আরজিনা বেগম আরও বলেন, আমার জমি না হয় শেষ হয়েছে। তবু এতিম ছেলে ও মেয়ে মানুষের মতো মানুষ হওয়ার রাস্তায় পদাপর্ন করেছি। অবশিষ্ট যা আছে, তাও বিক্রি করে ওদের চিকিৎসক বানাবো।
এসএ/দীপ্ত নিউজ