মানিকগঞ্জ–১ (ঘিওর, দৌলতপুর ও শিবালয়) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক নাঈমুর রহমান দুর্জয় মনোনয়ন না পাওয়ার পর দলীয় কার্যালয় থেকে তাঁর ছবি সরিয়ে ফেলার অভিযোগ ওঠেছে। এছাড়া তাঁর নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন স্থান থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবিসহ ছোট–বড় ব্যানার, ফেস্টুন ও বিলবোর্ড নামানোসহ ভাংচুরের অভিযোগও করা হয়েছে।
মানিকগঞ্জ–১ আসনে দুর্জয়ের পরিবর্তে মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা ও জেলা জজ কোর্টের সরকারি কৌঁসুলি আব্দুস সালামকে দলীয় প্রার্থী হিসেবে নাম ঘোষণা করা হয়। এরপর আব্দুস সালামের নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের একাংশ আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ করে।
অভিযোগ ওঠেছে, রবিবার (২৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ঘিওর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ইশতিয়াক আহমেদ শামীম ২০ থেকে ২৫ জন নেতা–কর্মী নিয়ে উপস্থিত হন ঘিওর উপজেলার বানিয়াজুরী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে। এ সময় তাঁর সঙ্গে আসা অনুসারীরা দলীয় কার্যালয় থেকে দুর্জয়ের ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে এবং দুর্জয়ের অনুসারী বানিয়াজুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম মোহাম্মদ মিন্টুকে মারধর করেন।
মিন্টু অভিযোগ করে বলেন, ইশতিয়াক আহমেদ শামীমের নেতৃত্বে তাঁর অনুসারীরা অফিসে ঢুকে তাঁকে চড়থাপ্পড় মারতে থাকেন। এ সময় সঙ্গে থাকা কয়েকজন ভয়ে দলীয় কার্যালয়ের বাইরে চলে যান। পরে তাঁরা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবিসহ সংসদ সদস্য নাঈমুর রহমান দুর্জয়ের ব্যানার ছিঁড়ে বাইরে ফেলে দেন। এ সময় কার্যালয়ের ভেতরে থাকা এমপি সাহেবের একক ছবি নামিয়ে ফেলেন।
ঘিওর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হামিদুর রহমান আলাই বলেন, অতি উৎসাহী হয়ে ইউনিয়ন দলীয় কার্যালয়ে প্রবেশ করে দলীয় সংসদ সদস্যের ছবি ছিঁড়ে ফেলা দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের শামিল। এটা একটা ন্যাক্কারজনক ঘটনা।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ইশতিয়াক আহমেদ শামীম বলেন, আনন্দ মিছিল করে বানিয়াজুরী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে গিয়ে নেতা–কর্মীদের মিষ্টি খাওয়ানো হয়। কিন্তু সংসদ সদস্য নাঈমুর রহমানের ব্যানার, ফেস্টুন ছেড়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি। এছাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম মোহাম্মদ মিন্টুকে শুধু চেয়ার ছেড়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। তাঁকে লাঞ্ছিত করা হয়নি।
এ ব্যাপারে আব্দুস সালাম বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। এই ধরনের কাজ যদি কেউ করে থাকেন, তা নিন্দনীয়। আমি খবর নিয়ে দেখছি ?’
মানিকগঞ্জ–১ আসনে দুর্জয় ২০১৪ এবং ২০১৮ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এর আগে ২০০১ সালে এই আসনে নৌকা প্রতীক পেয়েছিলেন আব্দুস সালাম। সেই নির্বাচনে বিএনপির প্রয়াত মহাসচিব খন্দকার দেলোয়ার হোসেনের কাছে তিনি পরাজিত হন। এ আসনে অ্যাডভোকেট আব্দুস সালামকে দ্বিতীয়বারের মতো দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হলো।
জাহিদুল হক চন্দন/মোরশেদ আলম/দীপ্ত নিউজ