বাংলাদেশ দলের এক নিরব যোদ্ধা মাহুমুদউল্লাহ রিয়াদ। নিজের অনন্য কীর্তির জন্যই দর্শকমনে গেথে আছেন। ২০২৩ বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ জানান দিলেন বিশ্বমঞ্চে তার বিদায়ের ক্ষণ। তবে যাবার আগে মোক্ষম জবাব দিয়ে গেলেন অনেককে।
বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের হয়ে এবার সর্বোচ্চ রানের মালিক তিনি। ৯ ম্যাচের ৭ ইনিংসে ৩২৮ রান তার। সেঞ্চুরি ও ফিফটি রয়েছে একটি করে।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৪১, ভারতের বিপক্ষে ৪৬। বিশ্বকাপের আসরে দেশের হয়ে মাহুমুদউল্লাহ তৃতীয় সেঞ্চুরিটি করেন সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে। ডাচদের বিপক্ষে ২০, পাকিস্তানের বিপক্ষে ৫৬, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২২। সবমিলিয়ে ৯১.৬২ স্ট্রাইক রেটে ৫৪.৬৬ গড়ে ৩২৮ রান তুলেছেন। যা এবার কোনো তরুণ ক্রিকেটাররাও করতে পারেননি।
আপসোস হয়ে থাকবে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে নিজের শেষ বিশ্বকাপ ম্যাচটি। ২৮ বলে ৩২ রান করে রান আউটের শিকার হন। তা না হলে হয়তো বড় ইনিংসের দিকেই পা বাড়াতে পারতেন সাইলেন্ট কিলার।
তবে বিশ্বকাপের আগে তাকে দলে নেবে কি নেবেনা এ নিয়ে চলছিলো বেশ টানা পোড়ন। তার ফর্ম নেই, ব্যাটিং এখন কার্যকর নয়। নানাবিধ অজুহাতের বলয়ে ঘিরে ফেলেছিলো তাকে বোর্ড কর্মকর্তারা। কিন্তু সেই তিনিই কিনা বারবার বাচিয়েছেন দেশের মান। সাইলেন্টলি নিজের কাজ চালিয়ে গেছেন। নিজেকে গড়ে তুলেন বিশ্বকাপের জন্য।
বিশ্বকাপের অতিত ইতিহাসের দিকে তাকালেও দেখা যাবে মাহুমুদউল্লাহ পদচিহ্ন। ৯ মার্চ, ২০১৫ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২০১৫ বিশ্বকাপে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে সেঞ্চুরি করেন তিনি। সেবার সেই ম্যাচ জয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছিল বাংলাদেশ। পরের ম্যচেই, ১৩ ই মার্চ, তিনি আরেকটি বিশ্বকাপ সেঞ্চুরি করেছিলেন নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। বিশ্বকাপের ছয়টি খেলায় তিনি ৭৩.০০ গড়ে ৩৬৫ রান করেন এবং শেষ পর্যন্ত বিশ্বকাপে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হন।
এরপর ২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির কোয়ার্টার ফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেন মাহমুদউল্লাহ। সেই ম্যাচে সাকিব আল হাসানের সঙ্গে মিলে ২২৪ রানের পার্টনারশিপের মাধ্যমে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসে ৫ম উইকেট জুটির সর্বোচ্চ জুটির রেকর্ড গড়েন তিনি।
এছাড়াও তার ৪ সেঞ্চুরির তিনটি বিশ্বকাপে আর একটি আইসিসির ইভেন্টে।
এতসব অর্জন যার ঝুলিতে সেই মাহুমুদউল্লাহ কিন্তু কখনোই হাল ছেড়ে দেননি। সব বাধাকে উপড়ে দেশের জন্য লড়ে গেছেন বারবার। তবে সময় কারো জন্য থেমে থাকে না আর বয়সও কারো জন্য বসে থাকেনা। তাই হয়তো বিদায় ক্ষণের প্রান্তে এখন দেশ সেরা এই সাইলেন্ট কিলার।
এসএ/দীপ্ত নিউজ