দিনাজপুর শহরের কালুর মোড়ে মহিলা হোটেল শ্রমিক জয়া বর্মনকে (৩২) প্রকাশ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা মুল হত্যাকারী তরিকুল ইসলাম চান্দু (৩২) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত দা উদ্ধার করা হয়।
রবিবার (১ অক্টোবর) দুপুরে পুলিশ সুপারের কাযালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে হত্যাকারীকে আটকের সংবাদ নিশ্চিত করেন অতিরিক্তি পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন।
তিনি বলেন, নারী হোটেল শ্রমিক জয়া বর্মন (৩২) কুপিয়ে হত্যার পর হত্যাকারী তরিকুল ইসলাম চান্দু আত্ম গোপনে চলে যায়। গোয়েন্দা নজরধারী ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে গত শুক্রবার দিনগত রাতে দিনাজপুর জেলার খানসামা উপজেলার পাকের হাট বাজারের মাহিন সুইট নামীয় মিষ্টির দোকানে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত তরিকুল ইসলাম চান্দু দিনাজপুর জেলা সদরের মুরাদপুর দামপুকুর গ্রামের আশরাফ আলীর পালক সন্তান।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরও জানান, দিনাজপুর শহরের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল সাউদিয়া হোটেলের বাবুর্চি হিসাবে তরিকুল ইসলাম চান্দু কাজ করত। সেই একই হোটেলে জয়া বর্মন নারী শ্রমিক হিসাবে রান্নার কাজ করত। সেখান থেকে তাদের পরিচয়। একই হোটেলে কাজ করার সুবাদে একে অপরের ভালবাসা ও প্রেমের সর্ম্পক তৈরী হয়। এক পযায়ে তরিকুল ইসলাম চান্দু জয়া বর্মনকে বিয়ের চাপ দিলে বিরোধের সৃষ্টি হয়। জয়া বর্মন যেহেতু একজন হিন্দু নারী তার একটি মেয়ে স্বামী সংসার আছে। তাই সে কোন ভাবেই এই সর্ম্পক দীর্ঘ করতে চাচ্ছে না। তাই তরিকুল ইসলাম চান্দু ক্ষোভে অভিমানে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা কান্ড ঘটিয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরও বলেন, তরিকুল ইসলাম চান্দু গত ৯ বছর আগে পারিবারিক ভাবে বিয়ে করেছিল। সেই স্ত্রী গত ৫ বছর পুর্বে মারা যায়। সেই স্ত্রীর চার বছর সংসার করলেও কোন সন্তান হয়নি। তরিকুল অনেকটাই ছিন্ন ছরা টাইপের মানুষ। হোটেলের প্রধান বাবুর্চি হওয়ায় সে হোটেল মালিকের বাসায় বসবাস করত।
উল্লেখ, যে গত বুধবার ( ২৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় সাড়ে ৬ টার দিকে দিনাজপুর শহরের মির্জাপুর বাস টার্মিনাল (কালুর মোড়) বিসমিল্লাহ হোটেলের দক্ষিন পাশ্বের গলিতে জয়া বর্মন ( সুন্দরী) কে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। পরবতীতে আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ভর্তি করালে চিকিতসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়। এই ঘটনায় নিহতের স্বামী বাদি হয়ে কোতয়ালী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা নাম্বার ৫৭/৭৩৮।
নিহত গৃহবধূ হলেন জয়া বর্মন (৩০)। তিনি ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ থানার বনডাঙ্গা গ্রামের সপাল রায়ের স্ত্রী। নিহত গৃহবধুর ১৩ বছর বয়সি সপ্তম শ্রেনীতে পড়ুয়া একটি মেয়ে রয়েছে। নিহত গৃহবধূ লালমনিহাট জেলার বান্দরকুড়া প্রভাস রায়ের কন্যা। স্বামী ও স্ত্রী মিলে ফকিরপাড়ার আব্দুস সামাদের একটি টিন সেটের বাড়ীতে ভাড়া নিয়ে বসবাস করতেন। ১৪ বছর পূর্বে তাদের হিন্দু ধর্মালম্ভী ভাবে তাদের বিয়ে হয়। সংসারের অভাব অনটনের কারনে তারা দিনাজপুরে বসবাস করেন।
সুলতান মাহমুদ/মোরশেদ আলম/দীপ্ত নিউজ