প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচন প্রসঙ্গে বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে সংসদের বিভিন্ন উপনির্বাচন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনসহ যত নির্বাচন হয়েছে, সব স্বচ্ছ ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে, এর থেকে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন কবে হয়েছে বাংলাদেশে বা পৃথিবীর কোন দেশে হয়ে থাকে? ‘আজকে যখন আমরা সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন করছি, তখনই নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন করা, এর অর্থটা কী? দেশ যখন অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, তখন নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন কেন?’
বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাতে জাতীয় সংসদের সমাপনী বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
সরকার প্রধান বলেন, জনগণের ভোটাধিকার নিয়ে যাতে কেউ ছিনিমিনি খেলতে না পারে সে বিষয়ে সতর্ক থাকুন। কোন চক্রান্তের কাছে বাংলাদেশের জনগণ মাথানত করেনি আর করবেও না। গণতান্ত্রিক ধারাটা যেন ব্যাহত করতে না পারে। আজকের বাংলাদেশ, বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। এদেশের মানুষকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না। দেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, এই অগ্রযাত্রা যেন অব্যাহত থাকে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেক দেশে নির্বাচন তো এখনো তাদের বিরোধী দল মানেইনি। এরকম তো ঘটনা আছে। তারপরও আমাদের নির্বাচন নিয়ে অনেক ছবক শুনতে হচ্ছে। আজকে যখন সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন আমরা করছি তখনই নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন করা। এর অর্থটা কী? আজ দেশ যখন অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে তখন নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন কেন?
গণতান্ত্রিক আন্দোলনে আওয়ামী লীগের ভূমিকার কথা তুলে ধরে দলটির প্রধান বলেন, জনগণের ভোট ও ভাতের অধিকারের জন্য আন্দোলন করেছি আমরা। রাজপথে ছিলাম আওয়ামী লীগ। রক্ত দিয়েছি অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য। সেই শহীদের তালিকা দেখলে আওয়ামী লীগের নাম পাওয়া যাবে। সংগ্রামের মধ্যদিয়ে মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছি এটাই সব থেকে বড় কথা।
জাতীয় সংসদে দেওয়া বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। কিছু মানুষের অবশ্যই কষ্ট হচ্ছে। তবে জিনিসের অভাব নেই। উৎপাদনে ঘাটতি নেই। আন্তর্জাতিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে কিছুটা হিসাব করে চলতে হচ্ছে।
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথাও সংসদে তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ব্যাংকের সুদের হার বাড়ানো হয়েছে। টাকা ছাপানো হচ্ছে না। অনেকেই বলছে, টাকা ছাপিয়ে টাকা ছড়ানো হচ্ছে। টাকা ছাপানো একদম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
ডলার–সংকট দূর করতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা বলেন, খোলাবাজারে ডলার কেনাবেচার বিষয়টি সরকার নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। নিত্যপণ্য আমদানির জন্য রিজার্ভ থেকে টাকা দেওয়া হচ্ছে। ডলারের ওপর চাপ কমাতে ভারতের সঙ্গে লেনদেনে নিজস্ব অর্থে কেনাবেচার চুক্তি করা হয়েছে।
দ্রব্যমূল্য প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাজারে গেলে কোনো জিনিসের অভাব নেই। মনে হয়, কৃত্রিম উপায়ে মূল্য বাড়ানো হয়, ইচ্ছা করে বাড়ানো হয়। অনেক সময় গোডাউনে রেখে দিয়ে কেউ কেউ এ রকম খেলা খেলে। সরকার পদক্ষেপ নিলে কমে আসে।’
বাণিজ্যমন্ত্রীকে বাজার তদারকির নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, গোয়েন্দা সংস্থাকে বলা হয়েছে বিশেষভাবে দেখার জন্য, কেন জিনিসপত্রের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়বে।
মোরশেদ আলম/দীপ্ত নিউজ