অস্থিরতা চলছে গাজীপুরের কালীগঞ্জের চড়াখোলা খ্রীস্টান কো–অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লিমিটেডে। সাবেক ব্যবস্থাপনা কমিটির অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় তোলপাড় চলছে সমবায় সমিতিতে। এমনকি অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি এড়িয়ে যেতে সাবেক কমিটির অভিযুক্তরা নানা কৌশল অবলম্বন করছেন বলে জানান বর্তমান কমিটির নেতৃবৃন্দ।
বর্তমান কমিটির চেয়ারম্যান কমল উইলিয়াম গমেজ জানান, সেপ্টেম্বর ২০১৭ থেকে সেপ্টেম্বর ২০২০ সাল পর্যন্ত থাকা বিগত ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান ঋণ নীতিমালা ভেঙ্গে এফডিআর এর বিপরীতে ঋণ দেয়া সহ নানা জালিয়াতি করেন। এভাবে প্রায় ৮৩ লাখ ৫ হাজার ৯৪৩ টাকা অনিয়ম, জালিয়াতি ও অর্থ তসরুপের ঘটনা সরকারি তদন্ত প্রতিবেদনেও উল্লেখ রয়েছে।
এমন অবস্থায় চড়াখোলা ক্রেডিটের সদস্যবৃন্দের একটি সার্বজনীন সভা অনুষ্ঠিত হয় গত ৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ সালে। ওই সভাতে বিগত ব্যবস্থাপনা কমিটির প্রায় সকলেই উপস্থিত ছিলেন। সেখানে সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ ও আলোচনার মুখে তারা স্বীকার করে যে সমিতিতে তাদের সময়ে কিছু বড়মাপের দুর্নীতি সংঘটিত হয়। পরে ওই সদস্যসভার সর্বসম্মত সিদ্ধান্তের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে, সংঘটিত দুর্নীতির বিষয়ে সঠিক ও বিস্তারিত তথ্য জানার জন্য একটি ৯ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে। পরে উক্ত তদন্ত কমিটি ১১ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখে অনুষ্ঠিত অপর একটি সার্বজনীন সদস্য সভাতে তাদের গুরুত্বপূর্ণ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। সেই সভাতেও অভিযুক্ত সাবেক ব্যস্থাপনা কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় বিস্তারিত আলোচনা ও উপস্থাপিত তদন্ত প্রতিবেদনটি গ্রহণ ও অনুমোদন করা হয়। তদন্ত কমিটি ৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখের সভায় উত্থাপিত দুর্নীতির সত্যতা পায় এবং সে বিষয়ক তথ্য–উপাত্ত বিস্তারিতভাবে তাদের তদন্ত প্রতিবেদনে তুলে ধরে।
বর্তমান কমিটির চেয়ারম্যান আরও জানান, তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে চড়াখোলা ক্রেডিটের যে আর্থিক ক্ষতি সাধিত হয়েছিল, সে অর্থ আদায়ের লক্ষ্যে, একটি ত্রি–পক্ষীয় চুক্তি হয়। এতে অভিযুক্ত বিগত ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যদেরও স্বাক্ষর ছিল। ওই চুক্তির মাধ্যমে আত্মসাতের সমুদয় টাকা সুদ–জরিমানাসহ চড়াখোলা ক্রেডিটকে ফেরৎ দিতে চুক্তিবদ্ধ হন অভিযুক্তরা। তবে নির্দিষ্ট সময়েও তারা টাকা ফেরত না দেয়ায় চুক্তি মোতাবেক অভিযুক্তদের বিভিন্ন হিসাবে জমা থাকা টাকা হতে যতটা সম্ভব সমন্বয় করা হয়। কিন্তু এরপরই অভিযুক্তরা সমবায় অফিসে এই সমন্বয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানায়। কমল উইলিয়াম গমেজ, অভিযুক্তদের আবেদনের পর গাজীপুর সমবায় অফিস বিষয়টি স্থগিত করে তদন্তের নির্দেশ দেন। কিন্তু এতে আত্মসাতের অর্থ আদায়ে ধীরগতি এবং প্রমাণ লোপাটের আশঙ্কা করছে বর্তমান কমিটির সদস্যরা।
মোরশেদ আলম/দীপ্ত নিউজ