কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলায় দেশে প্রথম বারের মতো প্রধানমন্ত্রীর আশ্রায়ন –২ প্রকল্পের অধীন ঘর পাচ্ছে সমাজের অবহেলিত হরিজন সম্প্রদায়ের ৩০ পরিবার।
আগামী বুধবার (৯ আগস্ট) আনুষ্ঠানিক ভাবে তাদের হাতে জমির দলিল ও ঘরের চাবী হস্তান্তর করা হবে।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার থানাহাট ইউনিয়নের সবুজপাড়া এলাকায় গড়ে উঠেছে হরিজন পল্লী আবাস। আবাসনের চারদিকে লাগানো হয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। সারিবদ্ধ ভাবে লাল চাল বিশিষ্ট হলুদ রংয়ের সেমি পাকা ভবন দাঁড়িয়ে আছে সেখানে। সাজানো গোছানো এই পল্লীতে আশ্রয় হয়েছে ৩০টি পরিবারের প্রায় দেড় শতাধিক হরিজন সম্প্রদায়ের মানুষের।
হরিজন পল্লীর বসবাসরত সুবিধাভোগী সুমি রাণী (২৮) বলেন, ছোট সন্তানদের নিয়ে বিভিন্ন অফিসের বারান্দা কিংবা বাজারের দোকানের বারান্দার নিচে ঝড়–বৃষ্টি উপেক্ষা করে দিন রাত পার করতে হয়েছে। সরকার যে আমাদের মানুষ হিসেবে মূল্যায়ন করে স্থায়ীভাবে ঘরের ব্যবস্থা করেছে এজন্য আমরা দারুন খুশি। এক বেলা কম খেলেও নিশ্চিন্তে রাতে পরিবার নিয়ে ঘুমাতে পারবো।
সুবিধাভোগী মন্টু লাল (৪৫) বলেন, লজ্জা শরম খেয়ে আগে বাপ–ভাই, বোন, স্ত্রী–সন্তান নিয়ে ভাঙ্গা ঘরে কোন রকমে দিন কেটেছে। খাবারের কষ্ট, থাকার কষ্ট নিয়ে যেখানে রাত সেখান কাত অবস্থায় দিন কেটেছে আমাদের। প্রশাসনের মাধ্যমে এই ঘর পেয়ে আমরা অত্যন্ত খুশি।
চিলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ৪র্থ পর্যায়ের আশ্রয়ণ–২ প্রকল্পের আওতায় হরিজন পল্লী গড়ে তোলা হয়েছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিঞা চিলমারী সফরে আসেন। এ সময় স্থানীয় প্রশাসন হরিজন সম্প্রদায়ের আবাসন সমস্যার কথা তুলে ধরেন।
প্রধানমন্ত্রীর অনন্য উদ্যোগের কারণে চিলমারীতে এক একর জমিতে ৩০টি পরিবারকে গৃহ নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে। এই পল্লীতে নাগরিক সুবিধার সব ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও এখানে বসবাসরত হরিজন সম্প্রদায়কে উন্নয়নের মূল ধারায় আনতে তাদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। ছেলে মেয়েদের পড়াশোনা নিশ্চিত করতে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। বাংলাদেশে প্রথম হরিজন পল্লী সেই প্রেক্ষিতে দৃষ্টিনন্দন প্রকল্পে হিসেবে গড়ে তুলতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
শায়লা/ দীপ্ত নিউজ