সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলার মনসুরনগর গ্রামের ইকবাল হোসেন (২০) হত্যা মামলায় নিহতের ভাইসহ দুই আসামিকে যাবজ্জীবন এবং অপর দুই আসামিকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
একই সাথে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামিকে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরো ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। এছাড়া ১০ বছর কারাদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামিকে ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড ও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (২৪ জুলাই) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে সিরাজগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ ফজলে খোদা মো. নাজির এই কারাদণ্ড প্রদান করেন।
যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, কাজীপুর উপজেলার মনসুর নগর ইউনিয়নের মাজনাবাড়ি গ্রামের সোহবার শেখের ছেলে মজনু মিয়া (৪২) ও একই গ্রামের আমজাদ হোসেনের ছেলে ও নিহতের বড়ভাই লাল বাবু (৪০)।
১০ বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, মাজনাবাড়ি গ্রামের বছির শেখের ছেলে রবিউল ইসলাম (৩৮) ও ছলি ওরফে চিকাছলির ছেলে রেজাব (৩৯)।
সিরাজগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের স্টেনোগ্রাফার রাশেদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০০৩ সালে কাজীপুর উপজেলার মাজনাবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাদ ঢালাইয়ের কাজ চলছিল। এসময় ছাত্রদল নেতা ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বে তার ভাই লাল বাবু, মজনু মিয়া, রবিউল, রেজাব সহ ৭/৮ জন যুবক ঠিকাদারের কাছে চাঁদাদাবি করে। ঠিকাদার চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে তারা ছাদ ঢালাই কাজ বন্ধ করে দেয়। এ খবর পেয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের ভাই শফিকুল ইসলামসহ স্থানীয় লোকজনের বাঁধার মুখে ইকবাল ও তার লোকজন চলে যায়। এরই জেরে পরের দিন ছাত্রদল নেতা ইকবাল হোসেন লোকজন নিয়ে মাজনাবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের ভাই শফিকুল ইসলামের উপর হামলা চালায়। এসময় মজনু মিয়া ডেগার দিয়ে শফিকুলকে পর পর ৫টি আঘাত করে। ৫ম আঘাতটি শফিকুল সরে যাওয়ায় ছাত্রদল নেতা ইকবাল হোসেনের বুকে ডান পাশে লেগে ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন।
এঘটনায় নিহত ইকবালের ভাই লাল বাবু বাদী হয়ে কাজীপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্তে প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসলে তদন্তকারী কর্মকর্তা নিজেই বাদী হয়ে প্রধান শিক্ষকের ভাই শফিকুলের উপর হামলাকারীদের আসামি করে মামলা দায়ের করেন। মামলা চলাকালে ৩৭ জনের স্বাক্ষ্য গ্রহণ করে আদালত।
দীর্ঘ সাক্ষী গ্রহণ শেষে আদালত এ রায় ঘোষণা করেন ।
শায়লা/ দীপ্ত নিউজ