গত কয়েকদিন ধরেই তীব্র গরম আর লোডশেডিংয়ে জনজীবন অতিষ্ঠ। এমন সময় সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমের বিদুৎ নিয়ে সংসদে কথা বলার পুরোনো একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে নানাভাবে প্রচার করছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীরা। এ বিষয়ে কন্ঠশিল্পী সংসদ সদস্য ফেসবুক লাইভে কথা বলেছেন।
মানিকগঞ্জ–২ আসনের সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম বলেছেন , বর্তমান সময়ে সাময়িক একটি কষ্টের মধ্যে সারা দেশের মানুষ পড়েছে বিদুৎ নিয়ে । যেমন কষ্ট আছে ঠিক তেমনি সামাজিক যোগাযোগ ম্যাধ্যম গুলোর আছে আলোচনা সমালোচনা প্রবাকান্ড , সেই বিষয় নিয়ে দুটি কথা বলতে চাই ।
বুধববার (৭ জুন ) রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লাইভে তিনি এসব কথা বলেন। পরে ওই ১২ মনিটি ১২ সেকেন্ডের ভিডিও বার্তা ভাইরাল হয় ( মমতাজ বেগমের ভেরিফাই পেজ )
ওই ভিডিও বার্তায় মমতাজ বেগম বলেন , আমি যেহেতু সংসদ সদস্য , আমি আমার নির্বাচনী এলাকায় কি কাজ করেছি কি কাজ করা বাকি আছে ,এই সকল কিছু বলার জায়গা হলো সংসদ । আমি কতটুকু কাজ করতে পেরেছি কোন কোন মন্ত্রনালয়ের অধিনে করেছি তাদেরকে ধন্যবাদ দেওয়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ দেওয়া । এছাড়া আর কি কি কাজ আমার করা উচিত এবং সেই গুলো চাওয়া । এই সুবাদেই সংসদে অনেক বক্তব্য দেই ,তার দু–একটি কথা ধরেই সমালোচনার ঝড় তুলেছেন । বিদুৎ থাকছে না , বিদুৎ এর এই কষ্টটা সবাই পাচ্ছি কম বেশি , সবার ঘরেই এ সমস্যা আছে এটা আসলে একটি সাময়িক সমস্যা ।
তিনি বলেন ,সরকার চেষ্টা করছে আপনারা জানেন , গতকাল বিদুৎ মন্ত্রী কথা বলেছেন,প্রধানমন্ত্রী বলেছেন,সংসদে আলোচনা হচ্ছে ,এই সাময়িক সমস্যাটা কাটিয়ে তুলে , বিদুৎতের একটি সুন্দর পরিবেশ তৈরি করতে চেষ্টা চলছে । আমি বলে ছিলাম সংসদে আপনারা জানেন , সরকার যে হারে বিদুৎ উৎপাদন করছে এবং যে হারে বিদুৎতের লাইন দিয়েছে সতিকার্থে এটার প্রশংসা কুড়িয়েছে । আর সেই প্রশংসাটাই আমি করেছি , আমার নির্বাচনি এলাকায় ৩০ ভাগ মানুষের ঘড়ে বিদুৎ ছিলো এক সময় , আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর শত ভাগ মানুষের ঘড়ে বিদুৎ দিয়েছি ।
মমতাজ আরো বলেন , এক সময় এলাকায় গেলে গ্রামের মা–বোনেরা এসে বলতো কিছুই চাই না , বিদুৎতের লাইন দেন আমাদেরকে মিটার দেন , সেই সংকট কিন্তু আমরা মোকাবেলা করেছি । লোক জন বলে স্বাধীনতা পরবর্তি সময় যে উন্নয়ন হয় নাই সেই উন্নয়ন এই সরকারের আমলে হয়েছে । সেই জন্য আমি সংসদে বলে ছিলাম যে ভাবে বিদুৎতের উন্নয়ন হয়েছে ,ঘড়ে ঘড়ে বিদুৎ দিয়েছি , সত্যিকার্থে এখন কিন্তু গ্রামে গেলে আর বলে না আপা দুইটা মিটার দেন । আসলেও এখন মিটার দেওয়ার জায়গা খুজে পাওয়া যায় না , এটাই কিন্তু বাস্তব , সেই জন্যই সংসদে এই কথা বলা হয়ে ছিলো । সেই কথাটাকে ভুল ব্যখ্যা দিয়ে ভুল ভাবে উপস্থাপন করে অসাধু লোক জন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বলার চেষ্টা করছে । আমি তাদেরকে বিনিত ভাবে বলবো, সঠিক সময়ে সঠিক কথা বলেছি ,আমার কাছে তার সত্যতা আছে । সাময়িক এই সমস্যা সৃষ্টি হবে এটা আমি আপনি কেউ কিন্তু জানতাম না ।
আমাদের ধৈর্য ধারন করতে হবে , আমাদের বিদুৎতের খরচ কিভাবে কমানো যায় ,সকলকেই নিয়েই মোকাবেলা করতে হবে । দোষারোপ করে একে অপরের গায়ে কাদা ছুড়াছুড়ি করে লাভ নেই ক্ষতি হবে অশান্তি হবে । আমি ফেইজবুকে ঢুকে দেখি , মমতাজের বাড়ী ঘেড়াও করা হয়েছে , কেন বিদুৎ পাওয়া যাচ্ছে না । এই যে প্রবাকান্ড এই যে মিথ্যাচার এ গুলা কি আপনাদের বিবেককে একটুও নাড়া দেয় না । শুধু শুধু একটি মানুষের বিরুদ্ধে কেন আমরা মিথ্যাচার করছেন , আপনারা বিবেকবান মানুষ আপনাদের বিনিত ভাবে বলছি এই ধরণের মিথ্যাচার থেকে দূরে থাকবেন । একটু ধৈর্য ধরুন , আমাদের সঙ্গে থাকুন , আল্লাহ যেন আমাদের খুব দ্রুত এই কষ্ট থেকে মুক্ত করেন ।
ভিডিও বার্তার শুরুতেই তিনি তার ব্যাক্তিগত ভাবে কি কি উন্নয়ন করেছেন সেই কথা গুলো তিনি বলেন , আমি আপোনাদের শিল্পী মমতাজ যে যেখান থেকে এই ভিডিও দেখছেন তাদের সালাম জানাই । এই মুহুর্তে যেই বার্তাটি নিয়ে আপনাদের সামনে বসেছি , আমি এমপি হওয়ার আগে থেকেই সেবা মূলক অনেক কাজ করেছি তার প্রমানও আছে অনেক । আমি আমার গানের টাকা দিয়ে মমতাজ চক্ষু হাসপাতাল করেছি ,মমতাজ শিশু চক্ষু হাসপাতালসহ আরো অনেক কাজ অনেক আগে থেকেই করেছি । সেই সুবাদেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে সেবা করার সুযোগটি করে দিয়েছেন আর সেই থেকেই মানুষের পাশে আছি কাজ করছি । আমার নির্বাচনি এলাকার মানুষ জানেন আমি কখনোই কোন অন্যায় , অবৈধ কাজ বা নিজের স্বার্থে কোন কাজ করিনি আল্লাপাক যেন কখনোই আমাকে না করায় । যতটুকু পারি আমার নিজের কষ্টের পয়সা দিয়ে হোক সরকারের পয়সা দিয়ে হোক শতভাগ মানুষের জন্য কাজ করার চেষ্টা করি । এই কাজে তৃপ্তি আছে ভালো লাগা ভালোবাসা আছে । আজ আমি শিল্পি মমতাজ হয়েছি এমপি মমতাজ হয়েছি সব কিছু আপনাদের দোয়া আর ভালোবাসায় হয়েছি ।
মমতাজ বেগমের ভেরিফাই পেইজের ভাইরাল হওয়া সেই ১২.১২ মিনিটের ভিডিও বার্তার নিচে বেশ কিছু কমেন্ট জমা পড়েছে। সাইফুল ইসলাম নামের এক জন লিখেন –আপনার গানের টাকায় করা হাসপাতালের লাইসেন্স নবায়ন করা হয় না ৫ বছর ধরে, সেটা একটু করেন আপা । আর হাসপাতালের সামনে যে সরকারি খাল দখল করে রেখেছেন সেটা দখলমুক্ত করে দিন । আর সেই জায়গা দিয়ে চলাচলের জন্য জনগনের ট্যাক্সের টাকায় খালের ওপর দিয়ে ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহারের জন্য ব্রিজ করেছেন তার কি হবে ? হেলাল দেওয়ান নামের আরেক জন লিখেন কেউ বিশ্বাস করুক বা না করুক আমি আপনার কথা ১০০% বিশ্বাস করলাম । পরিশেষে সম্মান রেখে একটা কথা বলতে চাই—— ( বিদ্যুৎ লাগবোনি বিদ্যুৎ ) । মোঃ ইমরান হোসেন নামের আরেক জন লিখেছেন , বিদ্যুৎ আপা আপনার সব কথাই বুঝলাম আমার একটা কথা আপনি বলেন আমরা যখন বিদ্যুৎ চালাই মাস শেষ হলে আমরা বিদ্যু বিলের টাকাটা দেই । এই টাকাটা যায় কোথায় এটা একটু জানান ।
জাহিদুল হক /আল/দীপ্ত সংবাদ