দেড় বছর পর গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের কেন্দ্র হতে সীলমরা একশত ব্যালট পেপার উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ।
গত শনিবার (২৭মে) দিবাগত রাতে উপজেলার শান্তিরাম ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের কেন্দ্র ক্ষুদিরাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অফিসের টেবিলের নিচে বিছানো কর্পেটের নিচ হতে ইউপি সদস্য ছাইদার রহমানের তালা মার্কায় সীলমারা একশত ব্যালট উদ্ধার করা হয়। ছাইদার রহমান বর্তমান ইউপি সদস্য জাহেদুল ইসলামের চেয়ে সাত ভোট কম পেয়ে পরাজিত হয়।
জানা গেছে, গত শনিবার বিদ্যালয়ের পিয়ন ওসমান গনি অফিস কক্ষের কার্পেট পরিবর্তন করতে গিয়ে টেবিলের নিচে সীলমারা একশত ব্যালট পেপার দেখতে পায়। পিয়ন বিষয়টি বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক উত্তম কুমার সরকারকে জানায় করায় । প্রধান শিক্ষক তাৎক্ষনিক ভাবে বিষয়টি পুলিশ প্রশাসন ও নির্বাচন অফিসারকে অবগত করায়। রাতে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কে এম আজমিরুজ্জামান ও ধুবনী কঞ্চিবাড়ি তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ পরিদর্শক ইসলাম হোসেন সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সাক্ষীগণের মোকাবেলায় একশত ব্যালট পেপার জব্দ করে নিয়ে যায়।
স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা বিল্পব খন্দকার দুলু জানান, এটি নির্বানের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের কাজ। তারা এটি করেছে। তদন্ত সাপেক্ষে জরুরীভাবে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানান তিনি।
ইউপি সদস্য প্রার্থী ছাইদুর রহমান জানান, নির্বাচনের দায়িত্বেরত কর্মকর্তাগণ তাঁর তালা মার্কায় সীলমারা ব্যালট পেপার লুকিয়ে রেখে আমাকে হেরে দিয়ে বর্তমান ইউপি সদস্য জাহেদুল ইসলামকে জিতে দিয়েছে। তিনি তদন্ত সাপেক্ষ সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানিয়েছেন।
বর্তমান ইউপি সদস্য জাহেদুল ইসলাম জানান, দায়িত্বেরত প্রিজাইডিং অফিসারের ফলাফলের শিট মোতাবেক তিনি নির্বাচিত ইউপি সদস্য। এর বাইরে তিনি কোন মন্তব্য করেননি।
ওই কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার উপজেলার সাবেক কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার এ কে এম ফরিদুল হক জানান, ওই কেন্দ্রে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। বিধি মোতাবেক ভোট গননার পর সকল প্রর্থীর এজেন্টকে ফলাফল শিট সরবরাহ করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত ব্যালট পেপারের ব্যাপার নিয়ে তিনি কোন মন্তব্য করেননি।
থানার ওসি জানান, উদ্ধারকৃত সীলমারা ব্যালট পেপার আইন মোতাবেক জব্দ করা হয়েছে। গভীরভাবে তদন্ত করার পর প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেয়া হবে।
শান্তিরাম ইউনিয়নের রিটানিং অফিসার ও উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা তারিকুল ইসলাম সাবু জানান, ২০২১ সালের ২৮ নভেম্বর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। প্রায় দেড় বছর পর কেন্দ্র প্রতিষ্ঠানের অফিস কক্ষের কার্পেটের নিচ হতে সীলমারা ব্যালট পেপার উদ্ধার তাঁর কাছে রহস্যজনক মনে হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাচন অফিসার সেকেন্দার আলী জানান, এটি এখন থানা পুলিশের কাজ। পুলিশ তদন্ত করে নির্বাচন অফিসকে অবগত করাবেন। তারপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া ।
তৎকালিন উপজেলা নিবাহী অফিসার ও বর্তমানে বগুড়ার জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ আল মারুফ জানান, দেড় বছর পর ব্যালট পেপার উদ্ধারের বিষয়টি তাঁর কাছে রহস্যজনক মনে হচ্ছে। তদন্তে সবকিছু বেরিয়ে আসবে।
আল/দীপ্ত সংবাদ