শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

দৃষ্টি প্রতিবন্ধী আশিকের পাশে ইউএনও শাহাদাত

সহযোগিতা পেলে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করতে চায় রাণীনগরের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী আশিক

দীপ্ত নিউজ ডেস্ক
4 minutes read

নওগাঁর রাণীনগরের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী দৃষ্টি প্রতিবন্ধী আশিক হোসেন ধ্রুবর পাশে সহযোগিতার বার্তা নিয়ে দাঁড়িয়েছেন নির্বাহী কর্মকর্তা শাহাদাত হুসেইন। আশিক উপজেলার খট্টেশ্বর গ্রামের মৃত আমজাদ হোসেনের ছেলে।

মঙ্গলবার (১৬ মে) বিকেলে আশিকের আবেদনের প্রেক্ষিতে নিজ উদ্যোগে ১৩ হাজার টাকা মূল্যের একটি অ্যানড্রয়েড মোবাইল ফোন আশিকের মা মোসাম্মৎ সামিনা বিবি‌র হাতে উপহার হিসেবে তুলে দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।

আশিক হোসেন ধ্রুব বলে সে বর্তমানে সিরাজগঞ্জ এসবি রেলওয়ে স্কুল এন্ড কলেজে নবম শ্রেণীতে মানবিক বিভাগের অধ্যায়নরত। তাদের পরিবারে দুই ভাই এবং দুই বোন। সে ছাড়াও তার আরো এক দৃষ্টি প্রতিবন্ধী বোন রয়েছে সে বর্তমানে চট্টগ্রাম ইউনিভার্সিটিতে অনার্স থার্ড ইয়ারে অধ্যায়নরত। তার বড় ভাই ভ্যান চালক এবং আরো এক বোনের বিয়ে হয়েছে। ছোটবেলা থেকেই আর্থিক সমস্যার কারণে লেখাপড়া চালিয়ে নিতে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে তাকে। তাদের ব্রেইল পদ্ধতির লেখাপড়ায় অনেক খরচ। ছোটবেলা থেকে তাদেরকে অনেক দূরে দূরে গিয়ে লেখাপড়া করতে হয়েছে। সে রাজশাহী পি এইচ টি সি সেন্টার থেকে ২০১৯ সালে পিএসসি পাশ করার পর শুরু হয় হাই স্কুল জীবন। হাই স্কুল জীবনে তার অনেক খরচ যোগাতে পরিবারকে হিমশিম খেতে হয়।

২০২০ সালে এসে তার ভ্যানচালক বাবাও মারা যান যিনি ছিলেন তাদের পরিবারের একমাত্র উর্পাজনক্ষম ব্যক্তি। এরপর থেকে বড় ভাই ভ্যান চালিয়ে আর মা মানুষের বাড়িতে কাজ করে যে আয় হয় সেই আয় দিয়ে নিজেদের প্রয়োজন পূরনের পর তার লেখাপড়ার খরচ যোগান দিয়ে আসছে মা ও বড় ভাই। আর বড় বোনের লেখাপড়ার খরচ একটি সংস্থা যোগান দিয়ে আসছে। বর্তমানে ঊর্ধ্বগতির বাজারে তার চলাফেরার খরচ, স্কুলের ফি, পরীক্ষা ফিসহ অন্যান্য ফি, কাগজপত্র, লেখার সরঞ্জামাদিসহ যাবতীয় খরচ যোগান দেয়া পরিবারের পক্ষে কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। প্রতিনিয়তই হিমশিম খেতে হচ্ছে মা ও বড় ভাইকে। এমতাবস্থায় সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা পেলে সেই সহযোগিতার ওসিলায় উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করে বড় হওয়ার স্বপ্নটা পূরণ হতো আশিকের।

আশিক তার আগামীর স্বপ্ন নিয়ে বলে সে দেশ ও দেশের মানুষের সেবা করতে চায়। সমাজ ও তার মতো মানুষদেরকে নিয়ে কাজ করতে চায়। তার মতো গরীব পরিবারের দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের স্বপ্ন পূরণে দেশের বিত্তবানরা একটু সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসবেন এমনই আহবান তার। সরকারের পাশাপাশি দেশের বিত্তবানরা এগিয়ে এলে তাদের মত আর কেউ পিছিয়ে পড়তো না। আর কোন চিন্তা ছাড়াই তারাও দেশ ও দেশের মানুষের সেবা করার প্রত্যয় হৃদয়ে ধারণ করে পুরো উদ্যোমে বুক বেঁধে এগিয়ে যেতে পারতো সমাজের হৃদয়বান বিত্তবানদের প্রতি এমনটাই আকুতি আশিকের।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহাদাত হুসেইন বলেন, দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের লেখাপড়া অনেক ব্যয়বহুল। তাই আশিকের মা তার ছেলের পড়ালেখার সহযোগিতা হিসেবে একটি অ্যানড্রয়েড ফোনের আবেদন করেছিলো। তারই প্রেক্ষিতে উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা পরিষদের তহবিল থেকে অর্থের যোগানের ব্যবস্থা করে নিজ উদ্যোগে এই ফোনটি আশিককে উপহার দিয়েছি। কোন প্রতিবন্ধীই কারো বোঝা নয় যদি তাদেরকে সার্বিক সহযোগিতা দিয়ে গড়ে তোলা সম্ভব হয়। তারাও দেশের জন্য সম্পদে পরিণত হতে পারে। তাই শুধু সরকারই নয় সমাজে যারা বিত্তবান রয়েছে তাদের একটু সহযোগিতায় হয়তোবা এমন অসহায় পরিবারের ছেলেমেয়েরা উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ শেষে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়ে দেশ ও দেশের মানুষের জন্য কাজ করার যে স্বপ্ন বুকে ধারণ করে থাকে তা বাস্তবায়ন করা খুবই সহজ হতো। আগামীতেও এই ধরণের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলেও তিনি জানান।

 

আব্দুর রউফ রিপন/এফএম/দীপ্ত নিউজ

আরও পড়ুন

সম্পাদক: এস এম আকাশ

অনুসরণ করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন

স্বত্ব © ২০২৩ কাজী মিডিয়া লিমিটেড

Designed and Developed by Nusratech Pte Ltd.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More