বয়সের ভারে নুয়ে পড়েছেন মরনী রাজবংশী(৯৪)। চলাফেরা করতে পারেন না ঠিকমতো। দিনের বেশিরভাগ সময় কাটে বিছানায় শুয়ে। স্বামী বেঁচে থাকতে কোনো মতে চলতো সংসার। স্বামীর মৃত্যুর পর সন্তানরাও দেখভাল করতে পারে না ঠিক মতো। টাকার জন্য ভালো মতো চিকিৎসা সেবা নিতে পারেন না তিনি। শুয়ে আর বসে দিন কাটছে নুয়ে পড়া এ বৃদ্ধার!
একটু সচ্ছলতার জন্য বয়স্ক ভাতার কার্ডের জন্য বেশ কয়েক বছর ধরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির দ্বারে দ্বারে গিয়েছেন। কিন্তু আশ্বাস ছাড়া কিছুই মেলেনি।
অসহায় জীবনযাপন করা টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার সদর ইউনিয়নের মিরিকপুর গ্রামের মৃত মুছিরাম রাজবংশীর স্ত্রী মরনী রাজবংশীর জোটেনি ভাতার কার্ড। এখন তার দিন কাটছে অতিকষ্টে। প্রতি সপ্তাহে ৩০০–৪০০ টাকার ঔষুধ লাগলেও টাকার অভাবে কিনতে পারছেন না।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী, ১৯২৯ সালে ১০ আগস্ট মাসে জন্ম মরনী রাজবংশীর। এতে তার বয়স এখন ৯৪ বছর। তিন ছেলে ও তিন মেয়ে সন্তানের মধ্যে সবার বিয়ে হয়ে গেছে। দুই ছেলের মৃত্যু হয়েছে অনেক আগেই। স্বামীর রেখে যাওয়া সামান্য জায়গার ওপর টিনের ছাপড়া ঘরে বসবাস করেন মরনী রাজবংশী।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে মরনী রাজবংশী বলেন, চোখে তেমন দেখতে পাই না, বয়স তো আর কম হলো না। শরীর আর চলতে চাই না, শুয়ে বসেই দিন কাটে। কখন যেনো মৃত্যুর ডাক এসে যায়। অনেক বয়স হয়েছে এখন পর্যন্ত কোনো ভাতার কার্ড পাইনি। কত জনপ্রতিনিধির দ্বারে দ্বারে গেছি আমাকে কার্ড করে দেয়নি। আশেপাশের অনেকেই ভাতার টাকা পাইছে। কিন্তু আমি পাই নাই! আর কত বয়স হলে ভাতার কার্ড পাব আমি?’
বাসাইল সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহানুর রহমান সোহেল বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। আমি অবশ্যই উনার (মরনী রাজবংশী ) বাড়িতে যাবো এবং খুব তাড়াতাড়ি ভাতার কার্ডের ব্যবস্থা করে দিবো।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা নূরে–ই–লায়লা বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। দ্রুতই মরনী রাজবংশীর খোঁজ–খবর নিয়ে তার কার্ড করে দেওয়া হবে।
আফ/দীপ্ত সংবাদ