অনেকের মনে এই ভুল ধারণা রয়েছে যে সাতাশের রাতই হচ্ছে শবে কদর। এই ধারণা ঠিক নয়। সহীহ হাদিসে এসেছে যে রাসুলে কারীম (সা.)-কে লাইলাতুল কদর কোন রাত তা জানানো হয়েছিল। তিনি তা সাহাবীদের জানানোর জন্য আসছিলেন, কিন্তু ঘটনাক্রমে সেখানে দুই ব্যক্তি ঝগড়া করছিল। তাদের ওই ঝগড়ার কারণে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট থেকে সে রাতের ইলম উঠিয়ে নেওয়া হয়। এ কথাগুলো সাহাবিদের জানানোর পর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হতে পারে, এতেই তোমাদের জন্য কল্যাণ রয়েছে। এখন তোমরা এ রাত (অর্থাৎ তার বরকত ও ফজিলত) রমজানের শেষ দশকে অন্বেষণ করো। সহীহ বুখারি হাদিস নং ২০২০, সহীহ মুসলিম ১১৬৫/২০৯
অন্য হাদিসে বিশেষভাবে বেজোড় রাতগুলোতে শবে কদর তালাশ করার আদেশ দেওয়া হয়েছে। –সহীহ মুসলিম, হাদিস ১১৬৫
তাই সাতাশের রাতকেই সুনির্দিষ্টভাবে লাইলাতুল কদর বলা উচিত নয়। খুব বেশি হলে এটুকু বলা যায় যে, এ রাতে লাইলাতুল কদর হওয়ার অধিক সম্ভাবনা রয়েছে। রমজানের শেষ দশকের ফজিলতই সবচেয়ে বেশি। রাসুলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শেষ দশকে ইতিকাফ করতেন। –সহীহ মুসলিম, হাদিস ১১৭১
লাইলাতুল কদর রাতটি বুঝার কিছু আলামত হাদীসে বর্ণিত আছে।
সেগুলো হল:
(১) রাতটি গভীর অন্ধকারে ছেয়ে যাবে না।
(২) নাতিশীতোষ্ণ হবে, অর্থাৎ গরম/শীতের রাত থাকবে না, মধ্যম বা না গরম/না শীত।
(৩) মৃদুমন্দ বাতাস প্রবাহিত হতে থাকবে।
(৪) সে রাতে ইবাদত করে মানুষ অপেক্ষাকৃত অধিক তৃপ্তিবোধ এবং অন্য রকম এক অনুভূতি বোধ করবে।
(৫) কোন ঈমানদার ব্যক্তিকে আল্লাহ স্বপ্নে হয়তো তা জানিয়েও দিতে পারেন।
(৬) ঐ রাতে বৃষ্টি বর্ষণ হতে পারে।
(৭) সকালে হালকা আলোকরশ্মিসহ সূর্যোদয় হবে। যা হবে পূর্ণিমার চাঁদের মত উজ্জ্বল এবং তাপ থাকবে কম।
(সহীহ ইবনু খুযাইমাহ : ২১৯০ ;বুখারী : ২০২১ ; মুসলিম : ৭৬২)।
যূথী/দীপ্ত সংবাদ