ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া–দৌলতদিয়া ও আরিচা–কাজিরহাট নৌরুটে প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। তবে জেলার বারবাড়িয়া থেকে পাটুরিয়া ঘাট পর্যন্ত ঢাকা–আরিচা মহাসড়কে চলছে উন্নয়ন কাজ। সড়ক বিভাগের দাবি, দ্রুত উন্নয়ন কাজ শেষ করে মহাসড়ক পুরোপুরি ঈদযাত্রার জন্য প্রস্তুত হয়ে যাবে।
দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের সাথে রাজধানী ঢাকার যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম মানিকগঞ্জের এ দুটি নৌরুট। গত বছর থেকে পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় পাটুরিয়া–দৌলতদিয়া নৌরুটে যাত্রী ও যানবাহন পারাপারের হার কমেছে। তবে আরিচা–কাজিরহাট নৌরুটে পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় যাত্রী ও যানবাহন পারাপারে তেমন প্রভাব পড়েনি।
এদিকে ঢাকার আশুলিয়া, সাভার, ধামরাই, গাজীপুর, চন্দ্রা, কালিয়াকৈর, টঙ্গীসহ আশেপাশের দক্ষিনপশ্চিমাঞ্চলের যাত্রীরা এ দুটি নৌরুট দিয়ে এখানো চলাচল করেন। ঈদের সময় এ দুটি নৌরুটে বাড়তি যাত্রী ও যানবাহনের চাপ থাকার সম্ভবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন ঘাট সংশ্লিষ্টরা। বিআইডব্লিউটিসির দাবি পর্যাপ্ত পরিমান ফেরি চলাচলের ব্যবস্থা থাকায় ঈদে ঘরমুখো মানুষের ভোগান্তি হবে না। এছাড়া এ দুটি নৌরুটে যাত্রী পারাপারে ৩৩ টি লঞ্চ চলাচল করবে বলে জানিয়েছে লঞ্চ ঘাট কর্তৃপক্ষ।
সরেজমিনে ঢাকা–আরিচা মহাসড়ক ও ঘাট এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বারবাড়িয়া থেকে পাটুরিয়া ঘাট পর্যন্ত ঢাকা–আরিচা মহাসড়কে ১৭ টি স্পটে সড়ক বিভাগের উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড, গোলড়া, বানিয়াজুড়ি, পুখুরিয়া, মহাদেবপুর, বরংগাইলসহ বেশিরভাগ বাস স্টপেজ এলাকায় এসব উন্নয়ন কাজ চলমান থাকায় সাধারন মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে। পাটুরিয়া ঘাট এলাকার ৫ টি ফেরি ঘাট প্রস্তুত করা হয়েছে। দুটি নৌরুটেই প্রস্তুত করা হয়েছে লঞ্চ।
মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মো.মোশারফ হোসেন নামের এক পথচারি বলেন, এক সপ্তাহ বাদেই ঈদ। সবাই কেনাকাটায় ব্যস্ত। বাসস্ট্যান্ডের এ অংশে এখনো রাস্তার কাজ চলছে। ফলে যানজট লেগেই থাকছে। ঈদে কেনাকাটা করতে আসা সাধারন মানুষ ও যানবাহন চালকরা ভোগান্তিতে পড়ছেন। দ্রুত কাজ শেষ না হলে ভোগান্তি আরো বাড়বে।
পাটুরিয়া লঞ্চ ঘাটের ব্যবস্থাপক পান্না লাল নন্দী বলেন, পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের পর থেকে এ দুটি নৌরুটে যাত্রী পারাপারের হার কমে গেছে। ঈদকে সামনে রেখে দুটি নৌরুটে ৩৩ টি লঞ্চ প্রস্তুত করা হয়েছে। পর্যাপ্ত লঞ্চ থাকায় যাত্রী পারাপারে তেমন কোন ভোগান্তি হবে না।
বিআইডব্লিউটিসির আরিচা ঘাটের ব্যবস্থাপক আবু আব্দুল্লাহ বলেন, গত দুই বছর ধরে আরিচা–কাজিরহাট নৌরুট চালু হয়েছে। পদ্মা সেতু উদ্বোধন হলেও এ নৌরুটে তেমন প্রভাব পড়েনি। আরিচা–কাজিরহাট নৌরুটে ৬ টি ফেরি রয়েছে। ঈদকে সামনে রেখে আরো একটি ফেরি বহরে যুক্ত করা হবে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. সালাম হোসেন বলেন, পাটুরিয়া–দৌলতদিয়া নৌরুটে ১৮ টি ফেরি রয়েছে। যাত্রী ও যানবাহনের হার কম থাকায় বেশিরভাগ ফেরি বসিয়ে রাখতে হয়। ঈদকে সামনে রেখে আরো ২ টি ফেরি বহরে যোগ দিবে। ঈদে যাত্রী ও যানবাহন পারাপারে এ নৌরুটে ২০ টি ফেরি চলাচল করবে।
মানিকগঞ্জ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী গাউস–উল–হাসান মারুফ বলেন, ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা নিশ্চিত করতে পাটুরিয়া ঘাট এলাকায় সড়কের মেরামত কাজ পুরোপুরি শেষ হয়েছে। মহাসড়কে বাকি অংশের উন্নয়ন কাজ ১৭ এপ্রিলের মধ্যে শেষ হবে । ঢাকা–আরিচা মহাসড়কে উন্নয়ন কাজের কারনে ঈদযাত্রায় ভোগান্তি হবে না বলেও জানান তিনি।
এফএম/দীপ্ত সংবাদ